সমুদ্র পাড়ে সবুজ গালিচা বিছানো এক বিস্ময়কর স্থান গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকত। চারপাশে বিস্তৃত জলরাশি। অন্যদিকে কেওড়া বন। এর মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট ছোট খালের চারদিকে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল বেড়িয়ে আছে।
এই কেওড়া বন সমুদ্রের অনেকটা গভীর পর্যন্ত চলে গেছে। এর পরিবেশ সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মতো। দূর থেকে দেখলে মনে হবে, সৈকতজুড়ে সবুজ গালিচা বিছানো। সমুদ্রপাড়ের এই মনোরোম সৌন্দর্য বোধ হয় অন্য কোথায় দেখতে পাবেন না!
এ কারণেই গুলিয়াখালী সৈকতে হাজারও পর্যটক গিয়ে ভিড় জমায়। সবুজ গালিচা বিছানো ছোট ছোট গাছের টিলার মাঝখান দিয়ে এঁকে-বেঁকে গেছে সরু নালা। এই নালাগুলো জোয়ারের সময় পানিতে ভরে উঠে।
মনে হবে সৈকতজুড়ে কেউ যেন বিছিয়ে রেখেছে সবুজ ঘাসের গালিচা। ম্যানগ্রোভ বনে মাঝেমধ্যে দেখা মেলে হরিণের উঁকিঝুঁকি, কখনো কখনো ছুটে চলা লাল কাঁকড়া।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দলে দলে দর্শনার্থীরা আসছেন। কেউ হেঁটে, আবার কেউ নৌকায় চড়ে। সৈকতে আছে দর্শনার্থীদের জন্য ওয়াশ ব্লক, আছে দোকানপাটও। বেড়িবাঁধের পাশে আছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা ও ওয়াশব্লক। পুরোনো খাবারের দোকানের পাশাপাশি নতুন করে নির্মিত হচ্ছে একাধিক রেস্তোরাঁ।
সৈকতে কথা হয় চাকরীজীবি ফখরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, ছুটিতে শহরের যান্ত্রিকতা থেকে মুক্তি পেতে তিনি গুলিয়াখালী সৈকতে এসেছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে এসে খুব ভালো লাগছে তার।
গুলিয়াখালী সৈকত ব্যবস্থাপনায় আছে জেলা প্রশাসন। সৈকত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সারা বছর গুলিয়াখালী সৈকতে দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে। বিকেল হলেই দর্শনার্থীরা সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।’
ঢাকা থেকে কেউ যেতে চাইলে চট্টগ্রামের বাসে করে সীতাকুণ্ড বাসস্ট্যান্ডে নামতে হবে। চট্টগ্রাম থেকে যেতে চাইলে নগরের অলংকার থেকে ৮ ও ১৭ নম্বর বাসে করে সীতাকুণ্ড স্টেশনে নামতে হবে।
একইভাবে ট্রেনে সীতাকুণ্ড স্টেশনে নামতে হবে। এরপর নামারবাজার সড়কের সেতু এলাকায় সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডে এসে অটোরিকশা ভাড়া করে গুলিয়াখালী বেড়িবাঁধে আসতে হবে।
থাকা খাওয়ার জন্য সীতাকুন্ডে বেশ কয়েকটি খাবারের হোটেল ও আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়া সীতাকুন্ড পৌর সদর থেকে মাত্র ৪০ মিনিটের পথ চট্টগ্রাম শহরের একেখান ও অলংকারে আছে ভালো মানের থাকা ও খাবারের রেস্টুরেন্ট আছে।