এবার ঘুরে আসুন ছোট্ট এই হিল স্টেশন থেকে। ভ্রমণপিপাসু বাঙালির জন্য বেড়ানোর নতুন ঠিকানার খোঁজ। দিন কয়েকের এই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা সারা জীবন মনে লেগে থাকবে, বাংলার এতল্লাট ঘুরে এসে এমনই দাবি করেছেন অনেক পর্যটক। তাই আর দেরি নয়, প্ল্যান সাজিয়ে ফেলুন। দিন কয়েকের জন্য বেড়িয়ে আসুন ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা বাংলার এই পর্যটন কেন্দ্র থেকে।
অনেকে সমুদ্র পছন্দ করেন অনেকে আবার পাহাড়। দ্বিতীয় চয়েসটি আপনার হলে যেতেই পারেন চটকপুরে। দার্জিলিং থেকে মাত্র ২২ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে পাহাড়র কোলে গড়ে ওঠা চটকপুর গ্রাম। ছোট্ট এই গ্রামের মায়াবী পরিবেশ মুহূর্তে আপনার মন সতেজ করে তুলবে, ভুলে যাবেন যাবতীয় স্ট্রেস। এক কথায় অনন্য সুন্দর বেড়ানোর অপূর্ব এক অভিজ্ঞতার স্বাদ নিতে হলে আপনাকে যেতেই হবে চটকপুরে।
ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭৮৮৭ ফুট উচ্চতায় রয়েছে এই চটকপুর গ্রাম। ইকো ফ্রেন্ডলি এই গ্রাম ক্রমেই বাংলার পর্যটন মানচিত্রে বেশ ওপরের দিকেই জায়গা করে নিচ্ছে। দার্জিলিংয়ে বেড়াতে যাওয়ার বদলে অনেক পর্যটকই গত কয়েক বছরে আরও এক নৈঃস্বর্গিক পাহাড়ি পরিবেশের সন্ধানে ছুটে গিয়েছেন চটকপুরে। একদিকে এই এলাকার পরিবেশ যেমন আপনাকে মুগ্ধ করবে, তেমনই এখান থেকে দেখা মিলবে সুন্দরী কাঞ্চনজঙ্ঘার। যা স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে আপনার মনের পাতায়। মাত্র বছর দশেক আগেই চটকপুর পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ছোট্ট এই গ্রামের সৌন্দর্য্যটাই সব। ঠিক যেন ক্যালেন্ডারে টাঙানো ছবির মতো। মেরেকেটে মাত্র কয়েকটি পরিবারের বাস ছোট এই গ্রামে। মূলত ঝরনার জলের উপরেই এঁরা নির্ভরশীল।
চটকপুরে কী দেখবেন?
পাহাড়ি পথ বেয়ে যেতে যেতে ঘন জঙ্গলের শোভা নজর কাড়বে। এখান থেকে সিঞ্চল অভয়ারণ্যে যেতে পারেন। এই অভয়ারণ্যে দেখতে পাবেন বিভিন্ন ধরনের পাখি, ময়ূর, চিতল, হরিণ, চিতা, ভাল্লুক। এছাড়াও দেখা মিলবে বলগা হরিণ-সহ পাহাড়ি অনেক জীব-জন্তুর। এখান থেকে ঘণ্টা দেড়েকের পথ দার্জিলিং। ঘুরে আসতে পারেন লামাহাটা থেকেও। গ্রামটির যেদিকে তাকাবেন শুধু সবুজ আর সবুজ। কাঞ্চনজঙ্ঘা তো দেখতে পাবেনই এছাড়াও হিমালয় পর্বতমালার আরও কয়েকটি শৃঙ্গও এখান থেকেই দেখার সৌভাগ্য মিলবে। তবে সবটাই নির্ভর করছে আবহাওয়ার উপর। আকাশ পরিষ্কার থাকলে অপরূপ এই শোভা আপনার নজর কাড়বেই।
কীভাবে যাবেন চটকপুরে?
নিউ জলপাইগুড়ি বা এনজেপি অথবা শিলিগুড়ি থেকে ট্যাক্সি বা অন্য গাড়ি বুক করে নিতে পারেন। ঘুম কিংবা জোড়বাংলো অথবা সোনাদা হয়ে চটকপুরে পৌঁছে যেতে পারবেন। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে চটকপুরের দূরত্ব মেরেকেটে ৭৭ কিলোমিটারের মতো। দার্জিলিং থেকে ঘুম বা জোড়বাংলো হয়ে চটকপুর যেতে গাড়তে আপনার সময় লাগবে ৪৫ মিনিটের মতো।
চটকপুরে কোথায় থাকবেন?
চটকপুরে বন দফতরের কয়েকটি কটেজ রয়েছে। সেখানে থাকতে পারেন। আগে থেকে বুকিং করা থাকলে সুবিধা হবে। এছাড়াও স্থানীয় বাসিন্দারা হোম স্টে বানিয়েছেন। হোম স্টে-তে জন প্রতি হিসেবে থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত থাকে। সব হোম স্টে-র ভাড়া মোটামুটি একই। থাকা-খাওয়া সমেত কম-বেশি ১১০০-১৩০০-এর মধ্যে।