বিশ্বের ইতিহাসে মানুষের উত্থান-পতনের গল্পের শেষ নেই। বড় বড় ব্যাবসা ও ধনকুবেরদের জীবনে প্রায়ই এত বড় উত্থান-পতন দেখা যায়, যা একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে কল্পনাও করা সম্ভব না। এইতো কদিন আগেই ২০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি হারিয়ে আলোচনায় আসলেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক। ধনীর তালিকার শীর্ষস্থান হারালেন আবার দুই মাসের মাথায় তিনি আগের স্থানে ফিরেও এলেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা ক্রিস রেনল্ডসের উত্থান-পতন এতটাই সিনেমাটিক যে খোদ ইলন মাস্কের চোখও তাতে চড়কগাছ হবে। একদমই সাধারণ একজন মানুষ ক্রিস একদিনে হয়েছিলেন ৯২ কোয়াড্রিলিয়ন ডলারের মালিক! ১ মিলিয়ন মানে ১০ লক্ষ। ১ বিলিয়ন মানে ১০০ কোটি। ১ কোয়াড্রিলিয়ন মানে ১,০০,০০,০০০ কোটি। আর সেখানে ক্রিসের সম্পদের অঙ্ক পৌঁছেছিল ৯২ কোয়াড্রিলিয়নে! আর তাতেই ২০১৩ সালে ৫৬ বছর বয়সি ক্রিসের নাম আলোচিত হয়েছিল বিশ্বজুড়ে।
তবে যাইহোক, বিশ্বের সবথেকে বড় ধনী হিসেবে খুব বেশিক্ষণ নাম থাকেনি ক্রিসের। ফিলাডেলফিয়ার একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রথম প্রকাশিত হয় সেই খবর। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে দুনিয়া জুড়ে।ক্রিস ওই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সেই দিনের আগে পর্যন্ত তার পে প্যাল অ্যাকাউন্টে বড়জোর এক হাজার ডলারের ব্যালেন্স থাকত। তাই টাকার অঙ্ক দেখে তিনি বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, কেউ নিশ্চই আমাকে নিয়ে মজা নিচ্ছে।
চাইলে নিশ্চয় ওই অর্থ ব্যবহার করতে পারতেন ক্রিস, কিন্তু তিনি তা করেননি। ক্রিসের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা পৌছনোর বিষয়টি পে প্যাল কর্তৃপক্ষের কাছে যেতে সময় নেয়নি। তারা একটি বিবৃতি দিয়ে জানায়, ওই অর্থ ক্রিসের অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছে তাদের নিজস্ব প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে, যা শুধরে নেওয়া হয়েছে। তবে এই ভুলের জন্য কিছু সময়ে জন্য ক্রিসের যে ‘অসুবিধা’ হয়েছে, তার জন্য তারা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
এমনকি এর পরে ক্রিসের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে দেখাও করেন পে প্যাল কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা। একটি সাংবাদিক বৈঠকে তারা বলেন, আমাদের তরফে হওয়া ভুল যে উনি বুঝতে পেরেছেন এবং শেষ পর্যন্ত ক্ষমা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে আমরা খুশি। তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু অর্থের প্রস্তাবও দিয়েছিল ক্রিস। তবে সেই অর্থ জনকল্যাণে দান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। আর এভাবেই ক্রিস হয়েছিলেন এক দিনের রাজা!