উদ্যোক্তা শারমিন ইম্মির জন্ম ও বেড়ে উঠা রংপুরে। কারমাইকেল কলেজ থেকে রসায়নে স্নাতক করেছেন। বতর্মানে দেশি পণ্য নিয়ে কাজ করছেন। তার উদ্যোগের নাম ‘Monohori’.
শারমিন ইম্মি সবসময় মনে করতেন নিজের একটা পরিচয় হবে, একেবারে নিজের কিছু থাকবে, যেখানে অন্যের বাঁধাধরা নিয়মের বাইরে নিজের মতো করে তিনি চলতে পারবেন। সেই ভাবনা থেকেই উদ্যাক্তা হয়ে উঠা।
তার ‘মনোহরি’ উদ্যোগে রয়েছে মণিপুরী, জামদানি, টাঙ্গাইল শাড়ি, শতরঞ্জি, রানার সেট, জুট রাগস টেবিল ম্যাটসহ নানা দেশীয় পণ্য।
উদ্যোক্তার হওয়ার শুরু দিকের কথা জানতে চাইলে শারমিন ইম্মি বলেন: ২০২০ এর শেষের দিকে শুরু হওয়া উদ্যোগ প্রায় দেড় বছর পার হয়ে যাচ্ছে। ঠিক কবে থেকে উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেছিলাম, সেই দিন তারিখ হয়তো মনে নেই।
তবে এটা মনে আছে অবশ্যই শুরুটা এখনকার মতো ছিল না। সেই শুরুটা ছিল অনেক কঠিন এবং চ্যালেঞ্জের।
এখন প্রতিদিন ৫০/৬০ টার মতো অর্ডার থাকে। মাঝেমধ্যে এর চেয়ে বেশিও হয়। রেগুলার কাষ্টমারের সংখ্যাই তার বেশি। “যারা আমার পণ্য একবার নিয়েছেন, তারাই আমার পণ্য বারবার নেন। কারণ আমি পণ্যের গুণগত মান ঠিক রেখে কাজ করি। আমি চাই একবার আমার পণ্য নিয়ে কাষ্টমার যেন আবারও আমার কাছে ফিরে আসেন।
মাসে সিক্স ডিজিটের ভালো একটা প্রফিট থাকে তার, যেটা দিয়ে কয়েকজনসহ নিজের খুশি মতো চলতে পারেন। সেই সাথে দুনিয়ার টুকটাক কিছু জিনিস দেখতে পারেন বলে জানান শারমিন ইম্মি।
‘মনোহরি’র শারমিন ইম্মির নিজের কোন শোরুম নই। ঘরে বসে অনলাইনেই সেল করেন। “এই দেড় বছরে অনেক সাড়া পেয়েছি। এতোটা সাড়া পাবো বুঝিনি,” উল্লেখ করে উদ্যোক্তা বার্তাকে তিনি বলেন: রংপুরের বিভিন্ন কারিগর দ্বারা আমি পণ্য প্রস্তুত করে থাকি। সৌখিন কাষ্টমাররাই আমাদের পণ্য বেশি ক্রয় করে থাকেন। দেশের বাইরেও প্রচুর ক্লায়েন্ট আছেন, যারা আমাদের পণ্য বিদেশে নিয়ে যান। আমাদের সবই ট্রেন্ডি পণ্য।
উদ্যোগে অনেকের সমর্থন পেলেও তিনি এটাও জানেন, যে সমাজ ব্যবস্থায় তিনি কাজ করেন সেখানে বাধা না আসাটাই অস্বাভাবিক। সবসময় নানারকম বাধা আসতেই থাকে। সেসব বাধা পেরিয়েই এগিয়ে চলেছেন তিনি।
তবে তার উদ্যোগে সব বাধা পেরোনোর পথে সবসময় স্বামীকে পাশে পেয়েছেন। ”আমি যেন সামাজিক কোন বাধার কোন আঁচও না পাই, আমার পাশের মানুষটা সবসময় সে চেষ্টাই করে। এছাড়া উদ্যোক্তা হতে আব্বু-আম্মু, শ্বাশুড়ি এবং আমার সব থেকে কাছের বান্ধবী প্রতিনিয়ত সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।”
নতুন ও তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য শারমিন ইম্মি বলেন: আপনি যে কাজটিতে ভালো, সে কাজটিই করুন। যে যা ইচ্ছা বলুক। ও করছে, আমিও ওইটা করি এমন মনোভাব থেকে দূরে থাকুন। অন্যের দেখাদেখি অনেককেই দেখেছি উদ্যোক্তা হতে। তারা বিজনেসে অনেক টাকা ব্যয়ও করেছের, কিন্তু সঠিক জ্ঞানের অভাবে প্রফিট কিছুই পাননি। বিশেষ করে অনলাইনে যেটা করবেন সেটা সম্পর্কে পরিপূর্ণ তথ্য ও জ্ঞান নিয়ে ভেবে চিন্তে করা উচিৎ।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে শারমিন ইম্মি জানান, তিনি সব সময়ই ধরাছোঁয়ার মাঝেই স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। দেশি পণ্য নিয়ে নিজের কাজকে আরও সঠিকভাবে গুছিয়ে আস্তে আস্তে এগিয়ে যেতে চান উদ্যোক্তা শারমিন ইম্মি।
উদ্যোক্তা বার্তা