মণ মানেই শান্তি। আর আপনি যদি নৌ ভ্রমণে যান তাহলে নদীর টলমলে জলে ঢেউয়ের তালে মিশে যেতে পারবেন এক আনন্দ জগতে। তাই আসছে ছুটির দিনে ঢাকা থেকে খুব কাছের দূরত্ব নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌ ভ্রমণ করে আসতে পারেন।
শীতলক্ষ্যা নদী পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপন্ন। গাজীপুর জেলার টোক নামক স্থানে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে একটি ধারা বানার নামে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে লাকপুর নামক স্থানে শীতলক্ষ্যা নাম ধারণ করে বৃহত্তর ঢাকা জেলার পূর্ব পাশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের এক কালের বিখ্যাত মসলিন শিল্প শীতলক্ষ্যা নদীর উভয় তীরবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল। বর্তমানেও নদীর উভয় তীরে প্রচুর পরিমাণে ভারি শিল্প-কারখানা গড়ে উঠেছে। অধুনালুপ্ত পৃথিবীর বৃহত্তম পাটকল আদমজী জুট মিল শীতলক্ষ্যার তীরে অবস্থিত ছিল। এই নদীর তীরে ঘোড়াশালের উত্তরে পলাশে তিনটি এবং সিদ্ধিরগঞ্জে একটি তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র অবস্থিত। বাংলাদেশের অন্যতম নদীবন্দর নারায়ণগঞ্জ বন্দর ও শহর এই নদীর তীরে অবস্থিত।
শীতলক্ষ্যায় নৌকায় করে ভ্রমণের সময় দেখতে পারবেন পো পো শব্দে লঞ্চ ঘাটে ভিড়ছে, কোনটা ছেড়ে যাচ্ছে। কোথাও আবার ঢেউয়ের তালে তালে নৌকাগুলো দোল খাচ্ছে। আবার চোখের পলকে সাঁই সাঁই করে আপনকে ডিঙ্গিয়ে যাবে মালবাহী জাহাজ। এখানে দেখা পাবেন নৌ দুর্ঘটনায় এগিয়ে আশা উদ্ধারকারী জাহাজ।
এখানে ঘণ্টা হিসেবে নৌকা ভাড়া দেওয়া হয়। সুযোগ পেলে আপনি উঠে পড়তে পারেন দূর পাল্লার বড় বড় লঞ্চ সমূহে। সেখানে পেয়ে যাবেন লঞ্চের রান্না করা মুখরোচক খাবার সমূহ। শীতলক্ষ্যা নৌকায় ঘোরার সময় খেয়াল করতে হবে লঞ্চ বা অন্য নৌযান কোথায় কোথায় চলাচল করছে। সেসব জায়গা এড়িয়ে চলাচল করা ভালো। নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তবেই নৌকায় ভ্রমণ করুন।
ঢাকা থেকে যেভাবে যাবেন নৌভ্রমণে
গুলিস্তান থেকে উৎসব, বন্ধন, শীতল বাসে সরাসরি নারায়ণগঞ্জের কালীরবাজার নেমে রিকশায় বা হেঁটে গুদারা ঘাঁটে গেলেই পেয়ে যাবেন নৌকার দেখা। সেখান থেকে দরদাম করে উঠে পড়ুন নৌকায়। আপনি চাইলে ট্রেনে কমলাপুর থেকে সরাসরি নারায়ণগঞ্জে আসতে পারেন অথবা আপনি চাইলে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়েও আসতে পারেন।