নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম। শিঙাড়া বিক্রি করতেন বাবা। ছোট থেকেই দারিদ্রের সঙ্গে সংগ্রাম করে বড় হওয়া। জীবনে প্রত্যাখ্যান এসেছে বারে বারে। তার পরও ভেঙে না পড়ে লড়াই করে গেছেন। এক সময় মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছে প্রতিকূলতা। এখন তিনিই বলিউডে অন্যতম! তিনি হলেন বলিউডের বিখ্যাত এই গায়িকা নেহা কক্কর।
গায়িকা নেহা কক্করের জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছনোর কাহিনী অনেকেরই অজানা। তবে নেহার কিছু সাক্ষাৎকার শুনলেই তার সংগ্রামের গল্প জানা যায়। সংসার চালাতে রোজ সকাল সকাল হলেই শিঙাড়া নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন নেহার বাবা। সেই টাকায় কোনো রকমে টেনেটুনে সংসার চলত তাদের।
৩৬ বছরে পা রাখলেন এই বলিউডের অন্যতম বিখ্যাত এই গায়িকা। সুপারস্টার সিঙ্গারের মঞ্চেই পালন হলো নেহা কক্করের জন্মদিন। দেখা গেলো প্রতিযোগী খুশির মা গিয়ে পুজো দিয়ে এলেন মন্দিরে। মেয়েটি নেহাকে জানান, তাদের মধ্যে জন্মদিনে ঠাকুরের কাছে পুজো দেওয়ার চল রয়েছে। তাই তারা নেহার জন্যও গিয়েছিলেন মন্দিরে।
এদিন সাদা পোশাকে খোলা চুলে লাগিয়েছিলেন বিডস। চোখের জল মুছে নেহা বলেন, ‘আমি কখনো ভগবানের কাছে নিজের জন্য কিছু চাই না। আমি সবসময় আমার পরিবারের জন্য প্রার্থনা করি। তবে এটা জানি, আমার অনুরাগীরা আমার জন্য এই কাজটা করে।’
খুব নিম্নবিত্ত পরিবারে নেহার বেড়ে ওঠা। যখন প্রথম গানের জগতে পা রাখেন, তখন তার দৈনিক আয় ছিল মাত্র ৫০ টাকা। আর এখন এই কাজের জন্য তিনি প্রায় ১৫ লাখ টাকা করে পারিশ্রমিক নেন।
১৯৮৮ সালের ৬ জুন উত্তরাখণ্ডের হৃষীকেশে জন্ম নেহার। তবে দুবছর পরই পরিবারের সঙ্গে চলে যায় দিল্লিতে। সেখানে একটি মাত্র ছোট্ট ঘরে থাকত নেহার পরিবার। একটা ঘর, একটা বাথরুম এবং একটা ছোট্ট রান্নার জায়গা— সেখানেই বেড়ে ওঠা নেহার। অল্প বয়স থেকেই তিনি সংগীতের প্রতি অনুরাগ দেখিয়েছিলেন। মাত্র চার বছর বয়সে, নেহা ধর্মীয় গান গাওয়া শুরু করে। সামান্য যে কটা টাকা পেতেন, তুলে দিতেন পরিবারের হাতে।
২০০৪ সালে নেহা, তার বোন সোনু এবং তার ভাই টনি কক্করকে নিয়ে চলে আসেন মুম্বাইয়ে। ইন্ডিয়ান আইডলের দ্বিতীয় সিজনে অংশগ্রহণ করলেও, জিততে পারেননি সেই শো। আর এখন তিনি সেই ইন্ডিয়ান আইডলেরই বিচারক।
বলিউডে খুবই জনপ্রিয় গায়িকা তিনি। ‘লড়কি বিউটিফুল কর গয়ি চুল…’ হোক বা ‘সেকেন্ড হ্যান্ড জওয়ানি…’, তার এই সব গান শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়। কোনো অনুষ্ঠানে বা রাস্তাঘাটে তাকে দেখলেই ‘নেহা নেহা…’ চিৎকার শোনা যায়।