লাইবেরিয়া পশ্চিম আফ্রিকার একটি প্রাচীন প্রজাতন্ত্র, যার বিমান পরিবহন খাত একসময়ে শক্তিশালী ছিল। দেশটি তার গৃহযুদ্ধ ও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এভিয়েশন খাতের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আবারো এই খাত পুনর্গঠনের পথে এগিয়ে চলেছে। এই প্রবন্ধে লাইবেরিয়ার বিমান সংস্থাগুলোর ইতিহাস, বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
১৯৭৪ সালে লাইবেরিয়ার জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থা হিসেবে Liberian National Airlines (পরবর্তীতে Liberian Airlines) প্রতিষ্ঠিত হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রী ও কার্গো পরিবহন।
তবে নানা কারণে – যেমন অর্থনৈতিক দুর্বলতা, অব্যবস্থাপনা, ও পরে গৃহযুদ্ধের ফলে – ১৯৯০-এর দশকে এই সংস্থাটি বন্ধ হয়ে যায়। এটি লাইবেরিয়ার এভিয়েশন ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলেও বর্তমানে এটি আর কার্যকর নেই।
লাইবেরিয়ার সরকার ২০২০ সালে একটি নতুন জাতীয় বিমান সংস্থা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়, যার নাম দেওয়া হয় Lone Star Air। এটির লক্ষ্য ছিল:
লাইবেরিয়াকে আঞ্চলিক এভিয়েশন হাবে পরিণত করা
পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে সরাসরি সংযোগ স্থাপন
দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা
তবে আর্থিক ও কাঠামোগত চ্যালেঞ্জের কারণে এই প্রকল্প এখনো পূর্ণভাবে কার্যকর হয়নি। এটি বর্তমানে পরিকল্পনা ও প্রাথমিক অনুমোদনের পর্যায়ে রয়েছে।
যেহেতু লাইবেরিয়ার নিজস্ব সক্রিয় বিমান সংস্থা নেই, তাই আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য দেশটি বিভিন্ন বিদেশি এয়ারলাইন্সের ওপর নির্ভর করে। নিচে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য এয়ারলাইন্সের নাম দেওয়া হলো যারা Roberts International Airport (RIA) থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করে:
লাইবেরিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সরাসরি সংযোগ
ব্রাসেলস থেকে সাপ্তাহিক ফ্লাইট
লাইবেরিয়া ও মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কার মধ্যে সংযোগ
ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে ট্রানজিট সুবিধা
নাইরোবি ও লাইবেরিয়ার মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট
পূর্ব আফ্রিকা ও দক্ষিণ আফ্রিকার সংযোগ
টোগো ভিত্তিক এই এয়ারলাইন্সটি পশ্চিম আফ্রিকার অনেক দেশের সঙ্গে লাইবেরিয়ার আঞ্চলিক সংযোগ নিশ্চিত করে
ইকোওয়াস অঞ্চলে জনপ্রিয়
লাইবেরিয়া ও আইভরি কোস্টের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে
ছোট দূরত্বের যাত্রীদের জন্য জনপ্রিয়
অবকাঠামোগত দুর্বলতা
দক্ষ জনবল ও প্রযুক্তির ঘাটতি
অর্থনৈতিক সংকট ও বিনিয়োগের অভাব
আঞ্চলিক প্রতিযোগিতা (বিশেষ করে ঘানা, নাইজেরিয়া ও আইভরি কোস্ট থেকে)
রবার্টস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন
পর্যটন শিল্পে সম্ভাবনা বৃদ্ধি
আঞ্চলিক বিমান সংযোগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বেসরকারি বিনিয়োগ আকর্ষণের সুযোগ
লাইবেরিয়ার নিজস্ব সক্রিয় বিমান সংস্থা বর্তমানে না থাকলেও, দেশটির সরকার ও এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ এই খাত পুনরুজ্জীবিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। “Lone Star Air”-এর মতো প্রকল্প এবং বিদেশি এয়ারলাইন্সের সহযোগিতায় লাইবেরিয়া তার আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নয়ন সাধনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে যদি জাতীয় বিমান সংস্থা কার্যকরভাবে চালু হয়, তবে তা লাইবেরিয়ার অর্থনীতি ও পর্যটনের জন্য একটি বড় ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে।