বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৮ অপরাহ্ন
Uncategorized

রোমাঞ্চ ও রোমান্টিকতার সাঙ্গু

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০২২

নদীর একেকটি বাঁক পেরিয়ে সামনে চলা মানে যেন রহস্য উপন্যাসের একেকটি পাতা ওল্টানো। প্রতিটি বাঁকেই প্রকৃতি তার নিজস্বতা নিয়ে হাজির হয়েছে। কোথাও উঁচু পাহাড়ের দিকে তাকালে মনে হয় পৌরাণিক যুগের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেই অনাদিকাল থেকে। কোথাও আবার সবুজ আর হলুদের মিশ্রণে পাহাড়ের বুকে যেন মনে হয় কে যেন রংতুলি দিয়ে অসাধারণ এক স্কেচ সৃষ্টি করেছে। এই যে প্রকৃতিকে নবরূপে উন্মোচন করার রোমাঞ্চের মধ্যে কীভাবে যেন রোমান্টিসিজম এসে ভর করে। তখন ভেতর থেকে প্রিয়জনের উদ্দেশে কে যেন আনমনে গুনগুন করে গাইতে থাকে—

 সাঙ্গুর পাড়ে শান্ত নির্জন প্রকৃতি

সাঙ্গুর পাড়ে শান্ত নির্জন প্রকৃতি
ছবি: লেখক

এ রোম্যান্টিক পরিবেশে মাঝেমধ্যে দূর পাহাড়ের কোলে আদিবাসীদের ছোট্ট কুঁড়েঘরের দেখা মেলে। এ কুঁড়েঘর অবলোকনের সময় মনের মধ্যে দুটো অনুভূতি জন্ম দেয়। প্রথমে মনে হয়, এদের জীবনে কত কষ্ট। নাগরিক কোনো সুবিধা নেই বললেই চলে। বিদ্যুৎ নেই, টেলিভিশন নেই, অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই, পাকা রাস্তা নেই, বলা যায় নাগরিক জীবনের কোনো সুবিধাই নেই। আবার ওদের সহজ–সরল জীবন দর্শন যেন বলতে থাকে, এই না পাওয়ার মধ্যেই ওদের অনেক কিছু আছে। ওদের জীবনে কৃত্রিমতা নেই, ক্যারিয়ারের গোলকধাঁধা নেই, চাকরির চাপ নেই, প্রমোশনের তাড়া নেই, বসের ঝাড়ি নেই, অফিসের কুটনামি নেই, লোনের ঘানি নেই, একেবারে ছকে বাঁধা সহজ–সরল জীবন। যে জীবনে খাদ্যের সংস্থান হলে সেদিনের মতো আর কোনো চিন্তা নেই। একেবারে বর্তমানকে নিয়েই বেঁচে থাকা, যেখানে ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই।

 রেমাক্রির পথে সাঙ্গুর অপরূপ সৌন্দর্য

রেমাক্রির পথে সাঙ্গুর অপরূপ সৌন্দর্য
ছবি: লেখক

অবশেষে দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টার নৌযাত্রা শেষে আমরা রেমাক্রি পৌঁছাই। রেমাক্রি হলো ঝরনার স্রোতোধারার একটি বাঁকের অংশ। নাফাকুম থেকে ঝরনার বিগলিত জলের প্রবাহ এ রেমাক্রি এসে পাথরের ওপর দিয়ে গড়িয়ে এসে নিচের প্রবাহে সজোরে আছড়ে পড়ে। ফলে নদীর স্রোতোধারায় জল আর পাথরের এক অপূর্ব মেলবন্ধন তৈরি হয়।

যাঁরা রেমাক্রি থেকে নাফাকুম ট্রেকিং করে গেছেন, তাঁদের কাছে জানতে পারি, রেমাক্রি হলো ‘স্বর্গের’ প্রবেশদ্বার। আসল ‘স্বর্গ’ হলো নাফাকুম। রেমাক্রি থেকে ঘণ্টা দুয়েক ট্রেকিং করে সেই স্বর্গে পৌঁছানো যায়। সময়ের অভাবে আমরা স্বর্গের প্রবেশদ্বার থেকেই থানচি ফিরে আসি। তবে বাকি জীবনের জন্য সঙ্গে করে নিয়ে আসি এক রোমাঞ্চকর স্মৃতির ভান্ডার।

লেখক: সুব্রত মল্লিক

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com