ইসলাম ধর্মে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হালাল হিসেবে গণ্য করা হয় ভিক্ষাবৃত্তিকে। যদিও সম্প্রতি এটিকে অনেকেই ব্যবসা হিসেবে নিচ্ছেন। রমজান মাস আসলেই একটা শ্রেণী ভিক্ষাবৃত্তিতে নেমে পড়েন। অনেকেই আবার দেশের বাহিরে যান এই ভিক্ষা করার উদ্দেশ্যে। তবে, এবছর সৌদি আরব সহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশকিছু দেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। গালফ নিউজের এক খবরে বলা হয়েছে, পবিত্র রমজান মাসে ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ে কড়াকড়ি আরোপ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। নতুন করে দেশটি সতর্কতা জারি করে বলেছে, যারা ভিক্ষা করবে তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
আরব আমিরাতের আইন অনুযায়ী, ভিক্ষা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেউ এ অপরাধ করলে তাকে তিন মাসের জেল অথবা সর্বোচ্চ ৫ হাজার দিরহাম জরিমানা করার বিধান রয়েছে। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় দেড় লাখ টাকার সমান। আমিরাতের পাবলিক প্রসিকিউশন জোর দিয়ে বলেছে, যে কোনোভাবে ভিক্ষা করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আর যাদের ভিক্ষা করার অপরাধে ধরা হবে তাদের নিশ্চিত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
পাবলিক প্রসিকিউশন আরও সতর্কতা দিয়ে বলেছে, যদি স্বাস্থ্যবান কেউ ভিক্ষা করেন, জীবন চালানোর উপায় থাকা সত্ত্বেও ভিক্ষা করেন, আহত বা প্রতিবন্ধী সেজে করুণা পাওয়ার চেষ্টা করেন অথবা তৃতীয় কোনো পক্ষকে সহায়তা করার নাম করে সাহায্য তোলার সময় ধরা পড়েন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে— সেটি সত্যিকারের ভিক্ষুকদের যে শাস্তি দেওয়া হয় তার চেয়েও কঠিন হবে।
এ সপ্তাহের শুরুতে ভিক্ষাবৃত্তির বিরুদ্ধে নিজেদের বার্ষিক ক্যাম্পেইন শুরু করে দুবাই পুলিশ। মূলত রমজান মাস আসলেই ভিক্ষাবৃত্তি বেড়ে যাওয়ায় এই সময়টায় এর বিরুদ্ধে বেশি তৎপর হয় আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে দুবাই পুলিশ জানায়, গত রমজানে ৬০৪ জনকে আটক করেছিলেন তারা। এরমধ্যে ৩৮২ জন ছিলেন ভিক্ষুক। ২২২ জন ছিলেন অবৈধ ব্যবসায়ী, যারা অনুমতি ছাড়া ফুটপাত বা রাস্তায় রমজান উপলক্ষে ব্যবসা করার চেষ্টা করেছিলেন। এদিকে, সৌদির আইন অনুযায়ী ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িত থাকা, ভিক্ষুকদের জড়ো করে কৌশলে ব্যবসার চেষ্টা বা কোনো ভিক্ষুক গ্রুপকে সহায়তা করলে জড়িতদের সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ১১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩ টাকা (৫০ হাজার সৌদি রিয়াল) জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে।
অপরদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ ওমানের আইন অনুযায়ী, দেশটির মসজিদ, রাস্তাঘাট, দোকানপাট অথবা জনসমাগম এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করলে এক বছরের কারাদণ্ড এবং ১০০ ওমানি রিয়াল জরিমানার বিধান রয়েছে। কোনো প্রবাসী এই অপরাধে যুক্ত থাকলে তার ভিসা বাতিল করে আজীবনের জন্য ওমান থেকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।