রমজান উপলক্ষে কক্সবাজারের হোটেলগুলোতে চলছে বিশেষ ছাড়। রোজা শুরুর পর থেকে শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-গেস্টহাউস রিসোর্টসমূহের ৯৫ শতাংশই খালি। হোটেল-রেস্তোরাঁসমূহের অন্তত ৪০ হাজার কর্মচারীও চলে গেছেন ছুটিতে। সমুদ্রসৈকতও ফাঁকা হয়ে পড়েছে।
কিন্তু গত বৃহস্পতি ও শুক্রবারেও লাখো পর্যটকের সমাগম ছিল। হোটেল-গেস্টহাউসগুলোতে কক্ষভাড়া আদায় হয়েছিল শতভাগ। রোজার শুরু থেকেই চিত্র পাল্টে গেছে পুরোপুরি। পর্যটক টানতে কক্সবাজারের হোটেল কর্তৃপক্ষ কক্ষভাড়ার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে। অর্থাৎ আগে একটি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষের ভাড়া যদি দুই হাজার টাকা হয়, এখন সেই কক্ষে থাকা যাবে মাত্র ৬০০ টাকায়।
শুধু তাই নয়, আর কারও যদি টাকা দিয়ে হোটেলে থাকার সামর্থ্য না থাকে, সে ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় বিনা মূল্যে রাত কাটানোর ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। হোটেলমালিকেরা বলেন, অতিরিক্ত খরচের কারণে এত দিন যাঁরা কক্সবাজার সৈকতসহ জেলার দর্শনীয় স্থান দেখতে পারেননি, রোজার মাসের বিশেষ ছাড়ের এই সুযোগ তাঁরা কাজে লাগাতে পারেন।
কক্সবাজার কলাতলী হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গণমাধ্যমকে বলেন, রোজার প্রথম দিন গত রোববার সৈকত ভ্রমণ করছেন ৪ হাজারের বেশি পর্যটক। পর্যটকদের হোটেলকক্ষ ভাড়ার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। কিছু হোটেলে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে। উদ্দেশ্য, রোজার মাসে পর্যটকদের কম টাকায় সৈকত ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া।
এদিকে দেখা গেছে, কলাতলীর সাততলা রেইন ভিউ রিসোর্টে কক্ষ আছে ৫১টি। ৪টি ছাড়া অবশিষ্ট ৪৭টি কক্ষ খালি পড়ে আছে। পাশের হোটেল কক্স ইন্টারন্যাশনালে কক্ষ আছে ২৫টি। অতিথি আছেন ১টিতে, ২৪টি খালি পড়ে আছে।
ডলফিন মোড়ের শাহজাদী রিসোর্টের ৪৫টি কক্ষের মধ্যে ৪৩টি খালি জানিয়ে রিসোর্টের মালিক নাজিম উদ্দিন বলেন, প্রতিবছর রোজার মাসে হোটেলগুলো খালি থাকে। এবারও খালি যাচ্ছে। তবে এবারের বিশেষ ছাড়ের ঘোষণা কাজে আসতে পারে। পর্যটক টানতে তাঁর রিসোর্টের কক্ষভাড়ার বিপরীতে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে।
হোটেলমালিকেরা জানান, গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে সৈকত ভ্রমণে আসেন অন্তত ২১ লাখ পর্যটক। এ সময় হোটেল কক্ষভাড়া ১০০ শতাংশ আদায় করা হয়। চলতি সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাসের ৬-৭ লাখ পর্যটকের আগমন ঘটেছে। এ সময়ও কক্ষভাড়ার বিপরীতে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছিল।
হোটেল কক্ষভাড়ার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। এদিকে রোজার মাসে কক্সবাজারের ৯৯ শতাংশ রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকে। অধিকাংশ হোটেল–গেস্টহাউস–কটেজের কর্মচারীদেরও বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। ইতিমধ্যে ৩০-৪০ হাজার কর্মচারী ছুটিতে চলে গেছেন। অবশিষ্ট ১০-১৫ হাজার কর্মচারী দিয়ে হোটেলগুলো চালু রাখা হয়েছে। কিছু হোটেলের সংস্কার ও রঙের কাজ চলছে। তবে পর্যটকদের জন্য সাহ্রি ও ইফতারের ব্যবস্থা করেছে বেশ কিছু হোটেল–রেস্তোরাঁ।
Like this:
Like Loading...