রূপ আর যৌবনে এখন অনন্যা পাহাড়। শুভ্র সতেজ চার পাশ। সবুজে সবুজে ছেয়ে গেছে পাহাড়ের পথ-প্রান্তর। নীল আকাশজুড়ে আছে শুভ্র সাদা মেঘ। এক পশলা বৃষ্টিতে পাহাড়ের দেখা মিলছে হরেক রকম রূপ। কখনো মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। আবার কখনো স্নিগ্ধ বাতাস। কখনো তুষার মেঘের ভেলা। আবার কখনো বুক চিরে আছড়ে পড়ে অবিরাম জলধারা। এমন দৃশ্য কেবলই দেখা মেলে তিন পার্বত্য জেলা- রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের মধ্যে শুধু পার্বত্যাঞ্চলেই রূপবৈচিত্র্যের ভান্ডার রয়েছে। পাহাড় প্রকৃতির নয়নাভিরাম দৃশ্যপট। আছে শত শত ঝরনা, গিরিখাদ, আর আঁকাবাঁকা নদী। এখানে প্রকৃতি যেন উজাড় করে দিয়েছে নিজেকে।
গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত, কিংবা বসন্তে সব ঋতুতেই সৌন্দর্যের জৌলুস থাকে পাহাড়ে। তবে পার্থক্য কেবল ঋতুর সাজে। বর্ষায় পাহাড় যেন থাকে পূর্ণ যৌবনে। একটু বৃষ্টি নামলেই পাহাড়ে সারা দিন চলে নীল, সাদা ও সবুজের লুকোচুরি খেলা। সন্ধ্যার আকাশে গোধূলির রং ছড়াতেই ঝাঁক বেঁধে আসে বনের পাখিরা। তাদের খুনশুটি দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর সমৃদ্ধ রাঙামাটির পাহাড় পর্যটকদের কাছে অনেকটা রূপকথার গল্পের মতোই। তাই তো পাহাড়ে এসে প্রকৃতির প্রেমে পড়েনি এমন মানুষ খুব কমই আছে। অন্যদিকে রাঙামাটি পর্যটন সূত্রে জানা গেছে, টানা খরার পর বৃষ্টির শুরু থেকেই রাঙামাটিতে যাত্রা শুরু হয়েছে পর্যটকদের।
বিশেষ করে সাজেকমুখী পর্যটকদের ঢল বেশি নামছে। জেলার আশপাশের পর্যটক ছাড়াও আসছে বিদেশিরাও। পরিবার-আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে সবাই ছুটছে হ্রদ-পাহাড়ের দেশে। রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, পাহাড়ে রয়েছে পর্যটকদের আনন্দ ও মনোরঞ্জন জোগানোর অসংখ্য নৈসর্গিক পর্যটক কেন্দ্র। শুধু রাঙামাটিতেই আছে পর্যটন কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতু, ডিসি বাংলো, পলওয়েল পার্ক, পেদাটিংটিং, সুবলং ঝরনা, রাঙামাটি পার্ক, সুখী নীলগঞ্জ ও আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক।
এ ছাড়া রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের নীল জলে নৌভ্রমণের মতো রোমাঞ্চকর পরিবেশ তো রয়েছেই। এসব দেখে পর্যটকদের আনন্দ-উল্লাসের ফোয়ারা বেড়েছে কয়েক গুণ। এ সজীবতায় পাহাড় এখন পর্যটক উৎসবে মেতেছে। শান্ত পরিবেশ। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য পাহাড়ে ঘোরার এটাই উত্তম সময়।