পার্বত্য চট্টগ্রামের কোলঘেঁষে অবস্থিত রাঙামাটি শহর ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে বহু পরিচিত নাম। সর্ববৃহৎ কৃত্রিম লেক ছাড়াও এই শহরে রয়েছে ঝুলন্ত ব্রিজ, রাজবন বিহার, শুবলং ঝর্ণা কিংবা সাজেকের মত মনোহর জায়গা। তাই সপ্তাহের শেষে কিংবা কোনো ছুটির সময়ে হাতে ২-৩ দিন সময় নিয়ে ঘুরে আসা যায় রাঙামাটি শহর। পর্যটনের পাশাপাশি এখানকার স্থানীয় খাবারের স্বাদ গ্রহণেও উৎসাহী থাকেন ভ্রমণকারী ভোজন রসিকরা। তাই কাপ্তাই লেকের তীর কিংবা পাহাড়ের ওপরে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট যেখানে এখানকার স্থানীয় খাবার পাওয়া যায়।
রাঙামাটি শহর থেকে একটু দূরে রাঙামাটি-কাপ্তাই সড়কের মগবান ইউনিয়নে মোরঘোনা এলাকায় বড়গাঙ রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্টের অবস্থান। থাকার সুবিধা ছাড়াও এই রিসোর্টের খাবারদাবার বেশ জনপ্রিয়। স্থানীয় রেসিপিতে মাটির চুলায় কলাপাতার মধ্যে রান্না করা ডিম কোবাং এখানকার বেশ প্রচলিত খাবার। এছাড়া, ব্যাম্বো চিকেন তো রয়েছেই।
বড়গাঙ থেকে একটু দূরে কাপ্তাই হ্রদের তীরে বাঁশ, বেত এবং কাঠ দিয়ে তৈরি ছোট ছোট ছাউনি বানিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই ক্যাফে। বেড়ান্নেতে থাকার ব্যবস্থা না থাকলেও আদিবাসীদের মধ্যে প্রচলিত প্রায় সব খাবারই এখানে পাওয়া যাবে। প্রকৃতির ছোঁয়ায় লেকের সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে হতে এখানে একবেলা ভোজন নিঃসন্দেহে তৃপ্তিদায়ক।
প্রায় ৭০০ বর্গ কিলোমিটারজুড়ে অবস্থিত কাপ্তাই লেকের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য দ্বীপ। এরই একটি দ্বীপে অবস্থিত পেদা টিং টিং নামের প্রায় ২০ বছরের পুরানো এই রেস্টুরেন্টটি। নৌকায় করে কাপ্তাই ভ্রমণে গিয়ে দুপুরের খাবারের জন্য যেতে পারেন পেদা টিং টিং। লেকের মধ্যে অবস্থিত বলে রাঙামাটি শহরের রেস্টুরেন্টগুলোর চেয়ে এখানে একটু দাম বেশি পড়লেও আদিবাসীদের রান্না করা এই খাবারের স্বাদ মনে থাকবে অনেক দিন। কাপ্তাই লেকে ঘুরে বেড়ানোর মাঝে খাবার আয়োজনের জন্য পেদা টিং টিং ছাড়াও রয়েছে জুমঘর এবং টুক টুক ইকো ভিলেজ। এই তিন রেস্টুরেন্টে প্রায় একই রকমের খাবার পরিবেশন করা হয়।
রাঙামাটির শুবলং ঝর্ণা থেকে প্রায় ঘণ্টাখানিকের দূরত্বে অবস্থিত চাং পাই রেস্টুরেন্টটি কাপ্তাই লেকের পাশে পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত। লেক এবং পাহাড়ঘেরা সবুজের মাঝে পড়ন্ত বিকেলে ভিন্ন রসনার আয়োজনে মুগ্ধ হবে যেকোনো কেউ। এখানে মিলবে কলাপাতার উপরে পরিবেশন করা চাকমা খাবার ‘চুঙ্গাত ক্রুহেরা’।
ডিসি বাংলো পার্কের শেষ মাথায় পুকুরের কোলঘেঁষে অবস্থিত এই পাইরেটস রেস্টুরেন্ট। অনেকটা জলদস্যু নৌকার আদলে তৈরি এই রেস্টুরেন্টটি নান্দনিক আলোকসজ্জার কারণে রাতেই বেশি মোহনীয় হয়ে ওঠে। মেন্যুতে পাওয়া যাবে ফ্রাইড চিকেন, রাইস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, জুস ইত্যাদি। এখানকার অতি উপাদেয় মচমচে মাশরুম ফ্রাই বেশ জনপ্রিয় আইটেম। এসব রেস্টুরেন্ট ছাড়াও রাঙামাটিতে এসে খেতে চাইলে শহরের রাজবাড়ি এলাকায় বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে। বাজেটের মধ্যে স্থানীয় রসনাবিলাসের জন্য আদর্শ হতে পারে টুগুন রেস্টুরেন্ট, পিবির ভাতঘর, বিজুফুল, স্টিফেন ভাতঘর, বনরূপা বাজারে যদন ক্যাফে, আইরিশ ইত্যাদি রেস্টুরেন্ট। এসব জায়গায় মিলবে আদিবাসী বিভিন্ন খাবারের সমাহার। এছাড়া সাধারণ বাঙালি খাবার খেতে চাইলে যেতে হবে বনরূপা বাজারে দারুচিনি, মেজবান, ক্যাফে লিংক এসব রেস্টুরেন্টে।