1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
রহস্যময় মাউন্ট রাশমোর
শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৪০ অপরাহ্ন
Uncategorized

রহস্যময় মাউন্ট রাশমোর

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৮ মে, ২০২১

“যাচ্চলে! জিপিএস নেই…” যাকে ছাড়া এদেশে এক পা চলা মুশকিল তার এহেন বিস্ফোরক স্ট্যাটাসে কি আর বসে থাকা যায়! একে তো মাইলের পর মাইল শুধুই জনমানবহীন ধূ ধূ প্রান্তর, বহুক্ষণ পরে পরে একটা- দুটো গাড়ির দেখা মিলছে!  তায় আবার ভাগ্যক্রমে যদি বা কোনও লোকালয়ের দেখাও মেলে, স্বদেশের মতো যেখানে সেখানে গাড়ি থামিয়ে “দাদা, মাউন্ট রাশমোরটা ঠিক কোনদিকে একটু বলতে পারবেন?” জিজ্ঞেস করাটাও সম্ভব নয়! তাহলে? জিপিএস ছাড়া এখন উপায়টা কী? ড্রাইভারের সিট থেকে নির্দেশ এল “মোবাইলে আপাতত ‘গুগল’প্রফেসরের ম্যাপটা খোলো, তিনি যা বলেন সেই মতোই এবার এগোতে হবে!”

কিন্তু প্রফেসরের লেকচার শুনে চার পা এগোতে না এগোতেই দেখি সামনে ঢেউখেলানো পথের বাঁকে গাড়ির দল স্থবির অবস্থায় সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কী ব্যাপার? গুগল ম্যাপ বলছে, ইতিমধ্যে সাউথ ডাকোটার এজমন্টে পৌঁছে গেছি আমরা। বিকেলের নরম সূর্য এখন তার মিঠে, লালচে আদরে ভরিয়ে তুলেছে চরাচর। পাইনের উন্নত চূড়ায় সেই গলানো সোনার আলগা প্রলেপ! খানি কবাদে ব্যাপারটা বোধগম্য হল। নজরে পড়ল, বুনো বাইসনের একটা ছোটখাটো দল মেজাজি চালে পাহাড়ি বাইপাস পার হচ্ছিল। তাই সব গাড়িই স্টার্ট বন্ধ করে স্ট্যাটিক! অবশেষে বাইসনের দল হেলতে দুলতে পাহাড়ি বাঁকে অদৃশ্য হতে নড়েচড়ে বসলাম আমরা!


ডেনভার এয়ারপোর্ট থেকে রেন্টাল কার নিয়ে আপাতত ছুটে চলেছি মাউন্ট রাশমোরের উদ্দেশ্যে। সকালের ফ্লাইটে এয়ারপোর্টে নেমে কাছের দোকান থেকে প্রয়োজনীয় জল, শুকনো খাবার, স্ন্যাকস, ফল সঙ্গে করে গাড়ি নিয়ে ছুট দিয়েছি তড়িঘড়ি। পার্বত্য পথের ঘুটঘুট্টি আঁধারে একটানা খাবি খেতে খেতে যখন মাউন্ট রাশমোরে এসে পৌঁছলাম, তখন ঘড়িতে সাড়ে ন’টা বেজে গেছে। জুনের শেষ। আমাদের অস্থায়ী আস্তানা ফিলাডেলফিয়ায় যখন ৩৮ সেন্টিগ্রেড চলছে, পাহাড়ের ওপরে বাতাসে এখন হিমেল, কনকনে কাঁপুনি! গায়ে হুডি চাপিয়ে নেমে এলাম গাড়ি থেকে। শুনেছিলাম, মাউন্ট রাশমোরে রাত্রিবেলায় খুব সুন্দর একটি ‘ইভনিং লাইটিং সেরিমনি’ অনুষ্ঠিত হয়। ন’টায় শুরু। কিন্তু সেইসঙ্গে এও শুনেছিলাম, যে সেখানে এমন ভয়ানক ভিড় হয় যে আটটার মধ্যে না পৌঁছলে সিট পাওয়াই সম্ভব নয়। সুতরাং সে গুড়ে বালি! অগত্যা হোটেলে চেক-ইন পর্ব শেষ করে, ডিনার পর্ব সাঙ্গ করে ‘একবার দেখেই আসি’ গোছের মনোভাব নিয়ে পার্কের দিকে গাড়ি ছোটালাম আমরা!  আমাদের হাতঘড়ি বলছে দশটা। দূর থেকেই চোখে পড়ছিল নিঝুম পাহাড়ের ওপর চারমূর্তি থুড়ি চার প্রেসিডেন্ট রাতের আকাশে চুপচাপ মাথা হেলিয়ে বসে আছেন। আলোকিত চারিধার। আমাদের মতোই কিছু কৌতূহলী পর্যটক পার্কের ইতিউতি উঁকি মেরে চলেছেন!  কোথাও বা আবার কোনও উৎসাহী ফোটোগ্রাফার রাতের রাশমোরের নির্যাসটুকুকে ক্যামেরাবন্দি করতে আত্মমগ্ন! আহা, কতবার যে এই চারমূর্তির দেখা পেয়েছি…সিনেমায়, টিভিতে, পত্রপত্রিকায়। আর আজ, এতদিনে সাক্ষাৎ আলাপে যেন ধন্য হলাম!

পরদিন সকালে হোটেলে ব্রেকফাস্ট সেরে, চেকআউট করেই ছুটলাম মাউন্ট রাশমোরের উদ্দেশ্যে। মাউন্ট রাশমোর ন্যাশনাল মেমোরিয়াল পার্কে পার্কিং ফি খুব বেশি নয়, গাড়িপিছু মাত্র ১০ ডলার। এছাড়া পার্কে আর কোনো এন্ট্রি ফি নেই। প্রসঙ্গত বলে রাখি, সাউথ ডাকোটার পশ্চিমে এই ব্ল্যাক হিলকে বলা হয়ে থাকে “An emerald isle in a sea of prairie”।  খুব যে উঁচু এই পর্বতমালা তা নয়, এর সবচেয়ে উঁচু শৃঙ্গ হল ব্ল্যাক এল্ক পিক, ৭২৪৪ ফুট মাত্র।  এই জনহীন মাউন্টেন রেঞ্জের অনন্যতা কিন্তু অনস্বীকার্য। ঘন পন্ডেরোজ়াপাইনে ঢাকা এই পর্বতমালা। এই ব্ল্যাক হিলস এখানকার ডাকোটা জাতির মানুষের কাছে ‘সিক্স গ্র্যান্ডফাদার’স নামেই পরিচিত।


মাউন্ট রাশমোর ন্যাশনাল মেমোরিয়াল পার্কে প্রবেশ করে পায়ে পায়ে গ্র্যান্ড ভিউ টেরেস পেরিয়ে এগিয়ে চলে এসেছি বেশ কিছুটা। দূর থেকেই চোখে পড়ছিল চারমূর্তির ঝলমলে উপস্থিতি। ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসের রক্ষণাবেক্ষণে পশ্চিম আমেরিকার সবচেয়ে ইম্প্রেসিভ ল্যান্ডমার্কের মধ্যে অন্যতম হল এই চার প্রেসিডেন্টের অপ্রতীম ভাস্কর্য। সেই চারজন হলেন জর্জ ওয়াশিংটন, টমাস জেফারসন, থিওডোর রুজ়ভেল্ট এবং আব্রাহাম লিঙ্কন। সাউথ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের কিস্টোনে অবস্থিত ব্ল্যাক হিলসের গ্র্যানাইট পাথর কেটে তৈরি করা এই মনুমেন্ট ১৯৪১ সালের পর থেকেই আমেরিকান গণতন্ত্রের সবচেয়ে মহান ও উদ্দীপক প্রতীক হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। এই ভাস্কর্য আমেরিকার গৌরবময় ইতিহাসের প্রথম ১৩০ বছরের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রায় ষাট ফুট লম্বা গ্র্যানাইট পাথরের এই ভাস্কর্য পৃথিবীর বৃহত্তম ভাস্কর্যগুলির মধ্যে একটি। শুনেছিলাম, মাউন্ট রাশমোর ন্যাশনাল মেমোরিয়ালের নামকরণ করা হয়েছে নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত আইনজীবী চার্লস ই রাশমোরের নামানুসারে। কিন্তু কেন? গাইডের কাছে জানতে পারলাম,  ১৮৮৪ সালে চার্লস ই. রাশমোর এখানে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন ভূসম্পত্তির মালিকানা নিয়ে খোঁজখবর করতে। তখনই রাশমোর এই পর্বতটি আবিস্কার করেন। সেইসময়ে এখানকার খনিশ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাঁর বেশ ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এমনই একদিন পাইন ক্যাম্পের হেডকোয়ার্টারে ফেরার পথে তিনি বিল চালিস নামের এক স্থানীয় গাইড ও ব্যবসায়ীকে এই পাহাড়ের নাম জিজ্ঞেস করেছিলেন। চালিস নাকি তখন মজা করে বলেছিলেন, “এখনও পর্যন্ত কোনও নাম নেই, তবে আজ থেকে আমরা একে ডাকব রাশমোর বলে”! পরে, শোনা যায়, এই মনুমেন্টের নির্মাণকার্য চলাকালীন রাশমোর একাই প্রায় ৫০০০ ডলার দান করেছিলেন, যা নাকি ছিল কোন ব্যক্তিবিশেষের দেওয়া সর্বোচ্চ অবদান।

শিল্পী বোর্গলাম যে কয়েকটি কারণে মাউন্ট রাশমোরকে এই ভাস্কর্যের জন্য উপযুক্ত জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, তার অন্যতম কারণ হল এই পর্বতটি মসৃণ, উঁচু মানের গ্র্যানাইট দিয়ে তৈরি যা ক্ষয় হওয়ার হার কম।

যাই হোক, ইতিহাসের কচকচানি ছেড়ে এবার একটু বাস্তবে ফিরে আসি! গ্র্যান্ড ভিউ টেরেস পেরিয়ে ইতিমধ্যেই আমরা এসে পৌঁছেছি ‘অ্যাভিনিউ অফ দ্য ফ্ল্যাগ’-এ। প্লাজ়ার দুধারেই আমেরিকার প্রতিটি রাজ্যের পতাকা শোভা পাচ্ছে। সেই প্লাজ়া ধরে এগিয়ে গেলেই বিস্তৃত গ্র্যান্ড ভিউইং এরিয়া। সত্যি বলতে কী, এখানে দাঁড়িয়ে আমাদের নিজেদের অস্তিত্বকে মনে হচ্ছিল ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র! শিল্প আর ইঞ্জিনিয়ারিংয়েরএক অপ্রতীম মেলবন্ধন এই মেমোরিয়াল!

নীচে তাকিয়ে দেখি, গ্র্যান্ড ভিউ টেরেসের দু’দিক থেকেই সিঁড়ি নেমে গেছে। টেরেসের ঠিক নীচেই লিঙ্কন বোর্গলাম মিউজ়িয়ম।


টেরেসের সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে এলাম আমরা প্রেসিডেনশিয়াল ট্রেলে। এ এক ওয়াকিং ট্রেল ও বোর্ডওয়াক যা ঘন পন্ডেরোজ়া পাইনের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে গেছে স্কাল্পচারস স্টুডিওর দিকে যেখানে মনুমেন্টের নির্মাণকালে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়। পাইন জঙ্গলে দুটো মাউন্টেন শিপকে দেখলাম নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতে। শুনেছিলাম, প্রতি বছর প্রায় তিন মিলিয়নের ওপর ট্যুরিস্ট রাশমোরে আসেন। সারা বছরই এটি ভিজ়িটরদের জন্যে খোলা থাকলেও ব্যস্ততম মাস হল জুন, জুলাই আর অগস্ট। মিউজ়িয়ম দর্শন শেষে গ্র্যান্ড ভিউ টেরেসের কাছেই গিফ্ট শপ থেকে কিছু টুকটাক স্মারকচিহ্ন কিনে নিয়ে ফেরার পথ ধরলাম আমরা। এখান থেকে ছুটতে হবে ডেভিলস টাওয়ারের উদ্দেশ্যে। আড়াই ঘণ্টার পথ, তবে তার আগে পথেই শ্রেডেড চিকেন বারিটোজ়, পাওয়ার মেনু বোল চিকেন, সফট ট্যাকো সুপ্রীম-ইত্যাদি সহযোগে দুপুরের খাবারটা মন্দ হল না!

ধূ ধূ প্রান্তর, পাহাড়ি চড়াই উতরাই, শহুরে ব্যস্ততা আর শহরতলির উন্মাদনা পার হয়ে ডেভিলস টাওয়ারের কাছে যখন এসে হাজির হলাম তখন চনমনে দুপুরের ক্লান্ত শরীর এলিয়ে পড়েছে বিকেলের শান্ত চৌকাঠে! গাড়িপিছু ১৫ ডলার এন্ট্রি ফি দিয়ে পার্কে প্রবেশ করার আগেই দেখি বিশাল লাইন!  একসময় গড়াতে গড়াতে গাড়ি এসে পৌঁছল ডেভিলস টাওয়ারের পার্কিং এরিয়ায়। বাকিটা হেঁটে যেতে হবে। ডেভিলস টাওয়ার হল উত্তরপূর্ব ওয়াইয়োমিং-এর ক্রুক কাউন্টিতে অবস্থিত ‘বেয়ার লজ মাউন্টেনে’ (যা ব্ল্যাক  হিলসেরই অংশবিশেষ) আগ্নেয়শিলা দিয়ে গঠিত একটি ল্যাকোলিথিক বিউট। সন্নিকটস্থ বেল ফোর্স বা বেল ফুশ রিভারের সমতল থেকে নাটকীয়ভাবে প্রায় ১২৬৭ফুট ওপরে উঠে গেছে এই বিউট, যা ১৩৪৭ একর জুড়ে বিস্তৃত। ১৯০৬ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজ়ভেল্ট এটিকে আমেরিকার প্রথম ন্যাশনাল মনুমেন্ট  হিসেবে ঘোষণা করেন। ডেভিলস টাওয়ার নামটির পিছনেও রয়েছে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৮৭৫ সালের একটি বৈজ্ঞানিক অভিযানের সময় আর্মি কমান্ডার কর্ণেল রিচার্ড ডজের দোভাষী নেটিভ নামের ভুল ব্যাখ্যা করে ফেলেন। তিনি ডজকে জানান স্থানীয়রা ওই বিউটটিকে ‘ব্যাড গড’স টাওয়ার’ বলেন। পরে রিচার্ড ডজ তা একটু বদলে দিয়ে নাম দেন ‘ডেভিলস’ টাওয়ার’। ডেভিলস টাওয়ারের চারপাশের ল্যান্ডস্কেপ গঠিত সাধারণত পাললিক শিলা দিয়ে। বর্তমান  জিওলজিস্টদের মতে, এটি গঠিত হয়েছিল একটি ‘ইগ্নেশিয়াস ইনট্রুশনের’ মাধ্যমে, কিন্তু ঠিক কীভাবে তার ব্যাখ্যা আজ অবধি মেলেনি। টাওয়ারের নীচে ভিড় করে পড়ে থাকা ভাঙা কলাম, বোল্ডার, ছোট ছোট পাথুরে টিলা, পাহাড়, পাথরের টুকরো প্রমাণ করে যে টাওয়ারটি আগে এর থেকেও অনেক বেশি প্রশস্ত ছিল। প্রায় ৫০ মিলিয়ন বছর আগে এই টাওয়ারটির গঠিত হয়েছিল। তবে যে ক্ষয়কার্যের মাধ্যমে টাওয়ারটি অনাবৃত হয়েছিল, তা খুব সম্ভবত ঘটেছিল ৫ থেকে ১০ মিলিয়ন বছর আগে। দূর থেকে দেখলে ফাঁপা মনে হলেও টাওয়ারটা কিন্তু ফাঁপা নয়, ঠিক একগোছা পেনসিলকে যদি সোজা খাড়া করে রাখা যায় যেমন দেখতে হবে, টাওয়ারটি অনেকটাই সেইরকম।


টাওয়ারের খাড়াই পাহাড়ি পথের ধারে ধারে লাগিয়ে রাখা দিকনির্দেশের মতোই একটি কাঠের ফলকে দেখলাম লেখা আছে- বেশিরভাগ আমেরিকান ইন্ডিয়ানদের কাছেই এই টাওয়ারটি পবিত্র, তাই ট্রেল ধরে হাঁটার কষ্ট সহ্য করে সেই অনুভূতির মর্যাদা দেওয়া উচিত। আশপাশে তাকাতেই চোখে পড়ছিল একাকী কোনও না কোনও গাছের ডালে ঝুলছে প্রার্থনারূপী ফুরফুরে কাপড়ের টুকরো, ইচ্ছেরঙা!

শুধু টাওয়ার দর্শনই নয়, আগ্রহীদের জন্যে এখানে কিন্তু রয়েছে হাজারও আকর্ষণ-হাইকিং ট্রেলস, ক্লাইম্বিং, নাইট স্কাই ভিউইং! শত শত সমান্তরাল ক্র্যাক ডেভিলস টাওয়ারকে বিভক্ত করেছে এক বিশাল হেক্সাগনাল কলামে। এই অসাধারণ বৈশিষ্ট্যই ডেভিলস টাওয়ারকে উত্তর আমেরিকার ‘ফাইনেস্ট ট্র্যাডিশনাল ক্র্যাক ক্লাইম্বিং এরিয়া’ হিসেবে মর্যাদা দিয়েছে।

ডেভিলস টাওয়ারের চারপাশের প্রকৃতি অত্যন্ত মনোরম। এপ্রিল, মে আর জুন, এই তিন মাস এখানে বুনো ফুলের মরশুম। প্রায় ৬০ প্রজাতির বুনো ফুল ফোটে এই অঞ্চলে। ঘন পাইনের জঙ্গল, আর প্রেইরিদ্বারা আবৃত এই পার্ক। পাহাড়ের গায়ের অদ্ভুত আঁচড় কাটার মতো দাগগুলি জন্ম দিয়েছে বিভিন্ন নেটিভ আমেরিকান কিংবদন্তির, তার মধ্যে বিখ্যাত হল এক বিশাল ভালুকের গল্প। দুটি মেয়েকে সে তাড়া করলে তারা দু’জন পাহাড়ের মাথায় উঠে পড়ে সর্বশক্তিমান ভগবানের কাছে সাহায্য চায়। ভগবান তখন পাহাড়টিকে এতটাই উঁচুতে তুলে দেন যা ভালুকের কাছে অগম্য হয়ে পড়ে। পাহাড়ের গায়ে শুধু রয়ে যায় সেই বিশাল ভালুকের নখের আঁচড়ের দাগ ।

ইতিমধ্যে দেখি বেলা অনেক গড়িয়ে এসেছে। মেঘলা বিকেলের ক্লান্ত আকাশে আঁকিবুঁকি কেটে চলেছে কমলা সূর্যের অনুরাগী পেন্ট ব্রাশ! এবার যে আমাদের ফেরার পালা! এখান থেকেই এবার গাড়ি ছোটাব আমরা ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কের দিকে। সে গল্প আবার না হয় হবে অন্য কোনওদিন!

কীভাবে যাবেন

দিল্লি,বেঙ্গালুরু বা মুম্বই থেকে ফ্লাইট  ধরতে পারেন। গন্তব্যস্থল ডেনভার ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট। দু’একটা দিন ডেনভারে থেকে তারপর রাশমোর, ডেভিলস টাওয়ার ঘুরে আসুন।

কোথায় থাকবেন

ডেনভারে রয়েছে প্রচুর হোটেল, যেমন হলিডে ইন, ডেজ় ইন ইত্যাদি। মাউন্ট রাশমোরেও রয়েছে হলিডে ইন, রুজ়ভেল্ট ইন। মাউন্ট রাশমোর যাওয়ার প্ল্যান করলে লগ ইন করতে পারেন রাশমোর ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিসের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com