রংপুরের প্রাচীন নাম হলো রঙ্গপুর তথা প্রমোদপুরী। আর প্রমোদ বিলাসের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো রসনা। রংপুরের ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় খাবারের জায়গাগুলো চিনে নিতে আজকের আলোচনা
১। সিঙ্গারা হাউজ :
রংপুরের হাড়িপট্টি রোডে অবস্থিত রংপুরের জনপ্রিয় সিঙ্গারা হাউজ। সিঙ্গারা হাউজের সিঙ্গারা গুলো এতই বিখ্যাত এবং সুস্বাদু যে দোকানে ভীড় লেগেই থাকে। রংপুরে এলেই মচমচে সিঙ্গারা খেতে সবাই চলে আসে রংপুরের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই সিঙ্গারার দোকানে। সিঙ্গারার পাশাপাশি এখানে চা, লাচ্ছি, রস মালাই পাওয়া যায়। এক প্লেটে তিনটে সিঙ্গারার সাথে মিলবে আনকোরা টমেটোর চাটনি।
২। মৌবন :
নিরঞ্জনের অবস্থান মাহিগঞ্জে (পুরনো রংপুর)। মোটামুটি সব ধরণের মিষ্টিই এখানে পাওয়া যায়। নিরঞ্জনে মিষ্টি খেতে যাওয়ার অন্যতম বিশেষ দিক হচ্ছে মাহিগঞ্জ দর্শন। পুরনো ভবনে মেলে ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি। মাহিগঞ্জে রয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির। মাহিগঞ্জ বাজারের পাশেই আছে ১৮৩০ এর দশকে নির্মিত ‘মাহিগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরি’র পরিত্যক্ত ভবন। এছাড়া আরেকটি মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিখ্যাত তাজহাট জমিদার বাড়িও এখান থেকে বেশ কাছেই। উপরি হিসেবে ডিমলার জমিদার বাড়িও দেখে নিতে পারেন।
৫। চটপটি হাউজ :
রংপুরের জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় দোকান চটপটি হাউজ। সারাক্ষণই এখানে মানুষের ভীড় লেগেই থাকে। প্রতি প্লেট চটপটি ২০ টাকা। বেশ জনপ্রিয় এই দোকানে চটপটি খায়নি এমন মানুষ কমই মেলে। অনেক বছর ধরে জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছে চটপটি হাউজ।
৬। নর্থ ভিউ :
রংপুরের প্রথম চার তারকা হোটেল নর্থ ভিউ। বারতলা এ ভবনে কর্পোরেট অনেক প্রতিষ্ঠানেরই অফিস রয়েছে। ভবনের নবম তলায় অবস্থিত এই রেস্টুরেন্টটি অবস্থানের দিক থেকে রংপুরের সেরা। বাঙালি, চায়নিজ, থাই, ফাস্টফুড সবই পাওয়া যায় এখানে। এখানকার সবচেয়ে সুবিধা কাঁচের ঘেরাটোপ ভেদ করে বাইরের সুদৃশ্য দর্শন। রেস্টুরেন্টের বারান্দায় দাঁড়িয়ে মন ভরে পাখির চোখে রংপুর শহরের উত্তরাংশ দেখে নেয়া যায়।
৭। বৈশাখী :
বাঙালি খাবারের অন্যতম রেস্তোরাঁ ‘বৈশাখী’। এর দুটি শাখা আছে। একটি জাহাজ কোম্পানির মোড়ে এবং আরেকটি মেডিকেল মোড়ে ক্যান্ট পাবলিক স্কুলের বিপরীতে অবস্থিত। এখানে মোটামুটি সকল ধরণের বাঙালি খাবারই পাওয়া যায়। হোটেলের পরিবেশ সুন্দর। বেশ পারিবারিক আমেজে খাওয়া যায়। বৈশাখীর চা বেশ জনপ্রিয়। বিরিয়ানি থেকে শুরু করে ভাত-মাংসের জন্য স্পেশাল রেস্তোরাঁ বৈশাখী।
৮। খেয়া পার্ক রেস্টুরেন্ট :
রংপুরের পার্ক মোড়ে অবস্থিত খেয়া পার্ক রেস্টুরেন্ট। এই রেস্টুরেন্টের পরিবেশ পার্কের মতো মুক্ত, প্রাকৃতিক পরিবেশে বসে খাওয়ার জন্য খুব সুন্দর একটা জায়গা। শ্যামা সুন্দরী খালের ওপর দিয়ে একটা কাঠের সাঁকো পেরোতে হয় খেয়া পার্ক রেস্টুরেন্টে প্রবেশের জন্য। এখানকার কাঠ-বাঁশের কেবিনগুলো বাংলার বিখ্যাত নদীগুলোর নাম অনুসরণে রাখা হয়েছে। চায়নিজ ও ফাস্টফুডের প্রায় সব আইটেমই পাওয়া যায়। বলা যায়, রংপুরের সবচেয়ে প্রাকৃতিক রেস্টুরেন্ট ‘খেয়া পার্ক’।
৯। সিসিলি :
রংপুরের অন্যতম পুরনো চায়নিজ রেস্টুরেন্ট সিসিলি। এই রেস্টুরেন্টের অবস্থান রাজা রামমোহন রায় মার্কেটের দোতলায়। থাই ও চায়নিজ বেশিরভাগ আইটেমই পাওয়া যায়। দামও চলনসই। এখানকার আলো আঁধারি পরিবেশ নিরিবিলি আড্ডার জন্য বেশ জনপ্রিয়! নতুন অনেক রেস্টুরেন্টের ভিড়ে এখনও মানুষের প্রথম পছন্দ।
১০। ঘোষ ভান্ডার :
মিষ্টির জন্য ভালো আরেকটি দোকান রংপুরের পায়রা চত্বরের নিপেনের মোড়ে অবস্থিত ঘোষ ভান্ডার। নিপেন ঘোষের নামানুসারে জায়গাটার নামই হয়ে গেছে নিপেনের মোড়! ঘোষরা পারিবারিকভাবেই দোকানটা চালাচ্ছে ।এখানকার চা টাও বেশ জনপ্রিয়।মিষ্টান্নপ্রেমীদের ভালো লাগার মতো দোকান এটি।