সেলিব্রেটি বা বিখ্যাত ব্যক্তিদের চেহারা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংঘটিত প্রতারণা যা ‘সেলেব বেইট’ হিসেবে অভিহিত, তা রুখে দিতেই ফের নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার কথা জানিয়েছে মেটা।
রয়টার্সসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে মেটা সেলিব্রেটি হিসেবে অভিহিত ৫০ হাজার ‘পাবলিক ফিগার’কে এই পদ্ধতির আওতায় আনবে। কোনো ভুয়া বিজ্ঞাপনদাতা যদি মেটা নিয়ন্ত্রিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের বিজ্ঞাপনে এসব সেলেব্রিটির ছবি ব্যবহার করে তবে এই পদ্ধতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফেসবুক এই সেলেব্রিটিদের প্রোফাইল পিকচারের সঙ্গে বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত ছবিকে মিলিয়ে দেখবে। যদি সেই ছবি মিলে যায় এবং সেখানে থাকা বিজ্ঞাপন ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত হয়, তবে তা মুছে ফেলবে মেটা।
সেলেব্রিটিদের এই পদ্ধতির আওতায় নিয়ে আসার আগে তাদের পূর্বেই অবহিত করার কথা জানিয়েছে মেটা, তবে যারা এই পদ্ধতির আওতার বাইরে থাকতে চান তাদের সে সুযোগও দেয়া হবে।
আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে মেটা সারা বিশ্বে তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য এই পদ্ধতি চালু করার কথা জানিয়েছে। তবে এই পদ্ধতির আইনগত অনুমোদন না থাকায়, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস ও ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে আপাতত এই পদ্ধতি চালু করতে পারবে না মেটা।
এ ব্যাপারে মেটার কনটেন্ট পলিসি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিকা বাইকার্ট সাংবাদিকদের বলেন, তারা মূলত ওই ধরনের সেলিব্রিটিদেরই মূলত এই পদ্ধতির আওতায় আনতে চান, যাদের চেহারা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত হয়েছে।
এর আগে এই পদ্ধতি চালু করলেও ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গ’ জনিত বিভিন্ন আইনগত জটিলতার কারণে ২০২১ সালে এই সার্ভিস বন্ধ করে মেটা। সে সময় প্রায় একশ কোটিরও বেশি ব্যবহাকারীর ‘ফেস স্ক্যান’ এর তথ্য মুছে দিতে বাধ্য হয় তারা। এমনকি এ ব্যাপারে মামলারও সম্মুখীন হতে হয় মেটাকে। এ রকমই এক মামলায় অবৈধভাবে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে মেটাকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যকে ১৪০ কোটি ডলার জরিমানা দেয়ার আদেশ দেন আদালত। তবে একই সঙ্গে ‘সেলেব বেইট’ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতারণা ঠেকাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয় মেটাকে।
মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে খ্যাতিমান ব্যক্তিদের ছবি নকল করে প্রতারকরা বিভিন্ন প্রতারণামূলক বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে মেটা নিয়ন্ত্রিত ফেসবুকে। ব্যবহারকারীরা খ্যাতিমান ব্যক্তিদের ছবি দেখে আগ্রহী হয়ে ওই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে ভেতরে প্রবেশ করলে তাদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ দিতে উৎসাহিত করা হয় এসব বিজ্ঞাপনের ওয়েবসাইট থেকে।