সরকারিভাবে দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী পাঠানোর কোটা পূরণ করতে পারছে না বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে কোটার ৪৫ শতাংশ কর্মী দেশটিতে গেলেও ২০২৪ সালে গেছে মাত্র ২৫ ভাগ।
মন্ত্রণালয় বলছে, কর্মীদের শর্ত ভঙ্গ করা ও কোরিয়ার আর্থিক মন্দা এর জন্য দায়ী। তবে দক্ষিণ কোরিয়াগামী কর্মীদের ভাষাসহ যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাবকেই মূল কারণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রতিবছর বাংলাদেশসহ ১৬টি দেশ থেকে অদক্ষ কর্মী নেয় দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশ থেকে উৎপাদন ও জাহাজ নির্মাণ খাতে কর্মী নেয় তারা। এর মধ্যে বেশি যায় উৎপাদন খাতে। চলমান এই প্রক্রিয়ার মধ্যে গত বছরের জানুয়ারিতে বোয়েসেল-এইচআরডি কোরিয়া নতুন দুটি খাত চালু করে বাংলাদেশে। একটি হলো নির্মাণ (কনস্ট্রাকশন) খাত, অন্যটি মৎস্য (ফিশারিজ) খাত। যদিও এ দুটি খাতে প্রায় ৩০০০ কর্মী রোস্টারভুক্ত হলেও একজনও যেতে পারেননি।
রাষ্ট্রমালিকানাধীন জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) মাধ্যমে কর্মীরা যান দক্ষিণ কোরিয়ায়।
বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) মাধ্যমে কয়েক ধাপে প্রার্থী নির্বাচনের পর দক্ষিণ কোরিয়ায় যেতে পারেন অদক্ষ ও দক্ষ কর্মীরা। মূলত স্বচ্ছ প্রক্রিয়া, কম খরচে যাওয়া আর উচ্চ বেতনের সুযোগ থাকায় দেশটির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে তাদের।
২০২৩ সালে সাড়ে ১০ হাজার কর্মীর কোটা থাকলেও যান ৪ হাজার ৮০০ জন। ২০২৪ সালে সাড়ে ১১ হাজার কোটার বিপরীতে কর্মী যান মাত্র ২ হাজার ৭৭৯ জন।
কোটা পূরণ না হওয়ার জন্য কর্মীদের শর্ত ভঙ্গ করাকে দায়ী করছে বোয়েসেল। সরকারি এই সংস্থা বলছে, ছয় মাসের মধ্যে চাকরি পরির্বতন করেন ৪০ ভাগ কর্মী। রাজনৈতিক অস্থিরতায় সে দেশের রপ্তানি খাতের কাজ কমে যাওয়াও একটা কারণ।
বোয়েসেলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (আইটি) মো. নূরুল ইসলাম কিরণ বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এটা হচ্ছে তা না। সকল নিয়োগকর্তা, যে প্রয়োজন, তা অনুযায়ী হচ্ছে না, এ কারণে কোটা পূরণ হচ্ছে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার মত উচ্চ সম্ভাবনাময় বাজারের জন্য এদেশের কর্মীদের প্রশিক্ষণ উপযুক্ত নয়।
অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপ) চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম বলেন, অভিবাসী যারা, তাদের আচরণগত পরিবর্তনের জন্য কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া উচিত, কতটুকু দেওয়া উচিত সেটা নির্ধারণ করতে হবে। ভাষা শেষার দক্ষতা, সময় এসব নিয়েও প্রশ্ন আছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার শ্রমবাজার ধরে রাখতে এই খাতে সরকারের বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।