বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত ওমানের জন্য একটি বিপজ্জনক পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশটির অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, কারণ বাংলাদেশি শ্রমিকরা ওমানের শ্রমশক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তথ্য ও গবেষণা দেখায় যে, সুলতানিদের অবশ্যই বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রয়োজন।
কারণ তারা অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তাদের প্রতিস্থাপন কঠিন। অন্যান্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) দেশগুলোর মতো ওমানের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দীর্ঘকাল ধরে প্রবাসীদের উপর নির্ভরশীল। সেখানে অভিবাসীদের বেশির ভাগই বাংলাদেশি, পাকিস্তানি, ভারতীয় ও শ্রীলঙ্কান। বাংলাদেশিরা এখন সালতানাতের বৃহত্তম অভিবাসী গোষ্ঠী।
ওমানের ন্যাশনাল সেন্টার ফর স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড ইনফরমেশন (এনসিএসআই) অনুসারে, এবছরের এপ্রিলের শেষে ১৭.৭৬ লাখ অভিবাসীর মধ্যে ৬.৯৮ লাখ বাংলাদেশি ছিলেন। বাংলাদেশের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ডেটা, যা ১৯৭৬ সাল থেকে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের রেকর্ড রাখে, দেখায় যে সেই বছর মাত্র ১১৩ জন বাংলাদেশি ওমানে পাড়ি জমায়, যা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৮.৬৩ লাখে দাঁড়িয়েছে। এই পরিসংখ্যানগুলো কয়েক দশক ধরে ওমানের অর্থনীতিতে বাংলাদেশিদের উল্লেখযোগ্য অবদানের একটি সাধারণ প্রমাণ।
কিন্তু এই সংখ্যার পেছনে একটি বড় ছবি রয়েছে, যা আমাদের দেখতে হবে। ওমানের নন-হাইড্রোকার্বন সেক্টরে বাংলাদেশিরা বেশির ভাগই অদক্ষ কাজ করে। ওমানের সুলতান কাবুস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডক্টর ইবতিসাম আল-আব্রির সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই সেক্টরের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) অদক্ষ বিদেশি শ্রমশক্তির সঙ্গে একটি দ্বিমুখী সম্পর্ক শেয়ার করে। এতে দেখা গেছে যে অদক্ষ প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি প্রকৃত নন-হাইড্রোকার্বন জিডিপিতে ১.৯৪ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, যেখানে প্রকৃত নন-হাইড্রোকার্বন জিডিপিতে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি ২৮.১ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত।