শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২০ অপরাহ্ন

যে কারণে এমিরেটস এয়ারলাইন্সে ভ্রমণ করবেন

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০২৪

বিশ্বের নামকরা ও এশিয়ার মধ্যে শীর্ষস্থানীয় বিমান সংস্থা গুলোর মধ্যে এমিরেটস এয়ারলাইন্স অন্যতম। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ভিত্তিক এই বিমান সংস্থার সাথে পরিচিত নয়, এমন বিমান ভ্রমণকারী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। জনপ্রিয় এই বিমান সংস্থা সম্পর্কে কিছু তথ্য জানাতে এই পোস্ট।

আকাশ পথেই গোসলের ব্যবস্থা

আকাশের উপরে ভাসতে ভাসতে গোসল করতে পারার আশায় এখনই টিকিট বুক করে ফেলবেন না যেন। এই সুবিধা শুধুমাত্র প্রথম শ্রেণীর যাত্রীদের জন্য নির্ধারিত। আর এমিরেটস এয়ারলাইন্সের প্রথম শ্রেণীর টিকিটের জন্য আপনাকে খরচ করতে হবে সাধারণ টিকিটের চেয়ে কয়েকগুন বেশি টাকা। এই সুবিধা শুধুমাত্র এমিরেটস এয়ারলাইন্সের সুপার জাম্বো এয়ার বাস A380 বিমানে রয়েছে।

শততম এয়ারবাস A380 বিমান

দুবাই ভিত্তিক এই এয়ারলাইন্স খুব শীঘ্রই তাদের শততম সুপার জাম্বো এয়ারবাস A380 বিমান উদ্বোধন করতে যাচ্ছে। আকাশ পথে যাত্রী নিয়ে অতিক্রান্ত পথের হিসেবে এমিরেটস বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম এয়ারলাইন। অন্যদিকে এয়ারবাস A380 বিমানের পরিমাণের দিক থেকে তারাই বিশ্বে প্রথম স্থান দখল করে আছে। এমনকি তারা আরও ৪২টি A380 বিমান অর্ডার করে রেখেছে। যেগুলো যোগ হলে তাদের এয়ারবাস A380 বিমানের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৪২টি। এয়ারবাসের সংখ্যার দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে আছে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স যাদের এয়ারবাসের সংখ্যা মাত্র ১৯ টি।

১৫০টি দেশের কেবিন ক্রু

একটি সাধারণ এমিরেটস ফ্লাইটে আপনি কম করে হলেও ১২টি দেশের কেবিন ক্রু পাবেন। যারা সবাই মিলে কমপক্ষে ৯ থেকে ১৮টি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা রাখে। দুবাই এমন একটি শহর যেখানে আপনি স্থানীয় লোক খুঁজেই পাবেন না। দুবাইয়ের জনসংখ্যার অধিকাংশই ভিন্ন ভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসী। এমিরেটস-এ নিয়োজিত কেবিন ক্রুদের একটি বড় অংশ যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা। এর পরের জায়গা দখল করে আছে অস্ট্রেলিয়ান কেবিন ক্রু। এছাড়াও ইজিপশিয়ান ও ফিলিপাইনি কেবিন ক্রু এর পরিমাণ চোখে পড়ার মত।

১৯৮৫ সালে এমিরেটসের প্রথম ফ্লাইট

এমন বিশ্ববিখ্যাত একটি এয়ারলাইন্সের বয়স কিন্তু খুব বেশি না। মাত্র ৩৪ বছর আগে ১৯৮৫ সালের ২৫ অক্টোবর এমিরেটসের যাত্রা শুরু। তাদের প্রথম আকাশ পথে যাত্রা পরিচালিত হয় একটি বোইং 727 এর মাধ্যমে। এই যাত্রায় তাদের গন্তব্য ছিল দুবাই থেকে পাকিস্তানের করাচি। এই EK600 ফ্লাইট থেকে শুরু করে আজ এমিরেটস এয়ারলাইন বিশ্বের ৮০টি দেশের ১৪০টি শহরে সপ্তাহে ৩৬০০টির বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করে।

Emirates-Airlines

বিশ্বের বৃহত্তম বিমান

পৃথিবীর খুব কম এয়ারলাইন্স আছে যারা তাদের ফ্লাইট শুধুমাত্র প্রশস্ত বিমান দিয়ে পরিচালনা করে থাকে। এমিরেটস এয়ারলাইন্স তাদের মধ্যে একটি। গালফ ক্যারিয়ার খ্যাত এই বিমান সংস্থা শুধুমাত্র ২ ধরনের বিমান দিয়েই তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করে। একটি হচ্ছে এয়ারবাস A380 ও অন্যটি হচ্ছে বোইং 777। এই দুই ধরনের বিমান ব্যবহারকারী বিমানসংস্থার মধ্যেও তারাই বৃহত্তম।

এই দুই ধরনের বিমান মিলিয়ে তাদের বিমান সংখ্যা ২৩৪টি। মজার ব্যাপার হল ২৩৪টি বিমানে থাকা ৯৮,২৪৪টি সিটের প্রত্যেকটি দেখতে একই রকম। এমিরেটস এয়ারলাইন্স বিশ্বের একমাত্র বিমান সংস্থা যাদের প্রত্যেকটি সিটের সাথেই পারসোনাল স্ক্রিন সংযোজিত আছে।

১৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের দীর্ঘতম ফ্লাইট

১৭ ঘণ্টায় আপনি চাইলে স্বাচ্ছন্দ্যে লন্ডন থেকে বিমানযোগে নিউইয়র্ক যেতে পারেন। ম্যানহ্যাটনের স্টারবাকে বসে এক কাপ কফি উপভোগ করতে পারেন। আবার নিউইয়র্ক থেকে লন্ডনে ফেরতও যেতে পারেন। অন্যদিকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট এই ১৭ ঘণ্টার থেকে বেশি সময় নিয়ে আকাশে ভেসে বেড়ায়। দীর্ঘতম এই ফ্লাইট পরিচালিত হবে দুবাই থেকে নিউজিল্যান্ড-এর অকল্যান্ড পর্যন্ত। এই সুদীর্ঘ ফ্লাইট প্রথম পরিচালিত হয় ২০১৬ সালের ২ মার্চ। তখনকার সময় এটাই ছিল পৃথিবীর দীর্ঘতম ফ্লাইট। পরবর্তীতে এই উপাধি দখল করে নেয় কাতার এয়ারওয়েজের দোহা থেকে অকল্যান্ডের ফ্লাইটটি।

পৃথিবীর তৃতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর

আটলান্টা জ্যাকসনভিল এবং বেইজিং ক্যাপিটাল বিমানবন্দরের পরে বিশ্বের তৃতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর হচ্ছে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। যদিও প্রথম দুটি বিমানবন্দরের বেশির ভাগ ব্যস্ততা তাদের ডোমেস্টিক বিমান উঠানামা নিয়ে। অন্যদিকে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রায় সব ফ্লাইট আন্তর্জাতিক।

২০১৬ সালে দুবাই এয়ারপোর্টে মোট ৮৩ মিলিয়ন যাত্রী উঠানামা করে। যা মাত্র ৭ বছর ব্যবধানে ২০১০ সালের যাত্রীর পরিমাণের দ্বিগুণ। এই ৮৩ মিলিয়ন যাত্রীর মধ্যে ৫৬ মিলিয়ন যাত্রীই ছিল এমিরেটস এয়ারলাইন্সের যাত্রী। দুবাই এয়ারপোর্ট এমিরেটসের পাশাপাশি এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ফ্লাই-দুবাইয়েরও হাব হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

বিশ্ব ফুটবলের পৃষ্ঠপোষক

এমিরেটস এয়ারলাইন্স শুধুমাত্র একটি বাণিজ্যিক ভাবে সফল এয়ারলাইন্সই নয়। একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডও বটে। তারা বিশ্বজুড়েই নিয়মিত বিভিন্ন ক্রীড়া অনুষ্ঠান বিশেষ করে ফুটবল ক্লাবের স্পন্সর করে আসছে। রিয়াল মাদ্রিদ, এসি মিলান, প্যারিস সেন্ট জার্মেইন ও আর্সেনাল লন্ডনের মত বড় বড় ফুটবল ক্লাবের প্রধান স্পন্সর হিসেবে বহুদিন ধরেই ব্যয় করছে এমিরেটস এয়ারলাইন্স।

এয়ারলাইন্স অব দ্য ইয়ার

২০১৬ সালে দুবাই ভিত্তিক এই এয়ারলাইন্সের বাজার মূল্য দাড়ায় ৭ বিলিয়ন ইউএস ডলার। ২০০১, ২০০২, ২০১৩ ও ২০১৫ তে তারা স্কাইট্র্যাক্সে এয়ারলাইন অব দা ইয়ার খেতাব অর্জন করে। এয়ারলাইন্স খাতে এটাই সবচেয়ে মূল্যবান অ্যাওয়ার্ড।
প্রতি বছর ২০ মিলিয়নের বেশি যাত্রীর দেয়া ভোটের ভিত্তিতে এই অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়ে থাকে। ২০১৭ সালে এই অ্যাওয়ার্ডে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের অবস্থান ছিল চতুর্থ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com