বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৬ পূর্বাহ্ন

যেসব হোটেল থেকে বিমানবন্দরের মনোরম পরিবেশ দেখা যায়

  • আপডেট সময় বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪

বিশ্বের এমন কয়েকটি হোটেল আছে যেগুলোতে থাকলে বিমানবন্দরের অন্যরকম অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। জানালায় চোখ মেলে রানওয়েতে বিমানের ওঠানামার দৃশ্য উপভোগের জন্য এসব হোটেলই জুতসই। বিমানবন্দর বরাবরই আকর্ষণীয় জায়গা। কিন্তু ভ্রমণকালে চেক-ইন, নিরাপত্তাজনিত আনুষ্ঠানিকতা ও বোর্ডিং গেট নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আমরা সেটা খুঁজি না।

তবে হোটেল থেকে বিমানবন্দরের মনোরম পরিবেশের স্বাদ নেওয়ার জন্য ব্রিটিশ এভিয়েশন লেখক ও এয়ারপোর্ট স্পটিং ব্লগের সম্পাদক ম্যাট ফ্যালকাস এমন কয়েকটি হোটেলের তালিকা সাজিয়েছেন। তার ব্লগে বিশ্বজুড়ে এয়ারলাইন ও বিমানবন্দরের কার্যক্রম সম্পর্কিত খবর প্রকাশিত হয়। খবর সিএনএন।

হ্যাম্পটন হিলটন হোটেল

লন্ডনের স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরের টার্মিনাল থেকে দুই মিনিট হাঁটলেই হ্যাম্পটন হিলটন হোটেল। রেলওয়ে স্টেশন থেকেও হাঁটা দূরত্ব। লবিতে বিমানের থিমে অতিথিদের স্বাগত জানানো হয়। দেয়ালে ও চিত্রকর্মে ফ্লাইটের ছোঁয়া। কক্ষ থেকে মনে হবে রানওয়ে ও এয়ারক্রাফট হাতের নাগালে! এই বিমানবন্দর মূলত বাজেট এয়ারলাইন রায়ানএয়ারের মূল হাব।

সনেস্টা ওশান পয়েন্ট রিসোর্ট

ক্যারিবীয় দ্বীপ সিন্ট মার্টেনের প্রিন্সেস জুলিয়ানা বিমানবন্দরের রানওয়ে যেখানে শেষ, সেখান থেকে শুরু মাহো সৈকত। সেখানে আছে বেশকিছু হোটেল-রিসোর্ট। এর মধ্যে সনেস্টা ওশেন পয়েন্ট রিসোর্ট বন্ধ থাকার পর আবারও চালু হয়েছে। টার্মিনাল থেকে রিসোর্টের দূরত্ব পাঁচ মিনিটের গাড়ির পথ। রিসোর্টের ব্যালকনি থেকে দেখা যাবে, সাগরের ওপর দিয়ে আসা বিমান অবতরণের দৃশ্য। দূর থেকে মনে হবে, এই বুঝি সৈকতে পর্যটকদের ছুঁয়ে যাবে বিমানের চাকা!

সিটিজেনএম হোটেল

নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম স্কিফুল বিমানবন্দরের টার্মিনালের পাশে ২০০৮ সালে চালু হয় সিটিজেনএম হোটেল। টার্মিনাল ভবন থেকে পাঁচ মিনিটের হাটা দূরত্বে এটি অবস্থিত। এর ইন্টেরিয়র ও আসবাবে বৈচিত্র্য লক্ষণীয়। এছাড়া সেলফ-চেক-ইন ও টাচস্ক্রিন ডিভাইসের মাধ্যমে কক্ষ নিয়ন্ত্রণের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এতে। খুব সকালে এই হোটেল থেকে রানওয়ের দৃশ্য এককথায় মনোরম। হোটেল থেকে আমস্টারডাম শহরে যেতে ট্রেনে লাগে ১৫ মিনিট।

ফেলিক্স হোটেল

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ফেলিক্স হোটেল চালু হয়েছে সম্প্রতি। কিংসফোর্ড স্মিথ বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে গড়ে উঠেছে এটি। এর ছাদের কক্ষগুলো থেকে ঝোলানো আরামদায়ক চেয়ারে দুলতে দুলতে দৃষ্টিনন্দন রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ে দেখতে কার না ভালো লাগবে! সেখানে আছে ২৪ ঘণ্টার খাবারের দোকান, ককটেল বার ও সেলফ-সার্ভিস লন্ড্রি। টার্মিনাল থেকে হোটেলে হেঁটে যেতে লাগে পাঁচ মিনিট।

ব্লক হোটেল

লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের সাউথ টার্মিনালের ভেতর দিয়ে ব্লক হোটেলে ঢুকে নিজের কক্ষে গেলে আবিষ্কার করবেন অত্যাধুনিক ইন্টেরিয়র। এরপর রানওয়ের দৃশ্য মন্ত্রমুগ্ধ করে দেবে। এটাই বিশ্বের ব্যস্ততম সিঙ্গেল-রানওয়ের বিমানবন্দর। তাই একটি বিমান উড়তে না উড়তে আরেকটি এসে নামে। নিজেকে তখন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার মনে হতে পারে! নর্থ টার্মিনাল থেকে শাটলে সাউথ টার্মিনালে যেতে হয়।

গ্র্যান্ড ওয়েস্ট স্যান্ডস রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলা

থাইল্যান্ডে পর্যটকদের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থানগুলোর মধ্যে ফুকেট অন্যতম। সেখানকার সমুদ্র সৈকত, সূর্যস্নানের উপযোগী পরিবেশ ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভ্রমণপিপাসুদের মন কাড়ে। এই দ্বীপেই রয়েছে ফুকেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এর রানওয়ে শেষ হতেই সাগরপাড় শুরু। সেখানে গ্র্যান্ড ওয়েস্ট স্যান্ডস রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলায় আছে ৫৫৮টি ঘর। এর মধ্যে ব্লক সিক্সের কক্ষে থাকলে বিমানবন্দরের সবকিছু চোখের সামনে হাজির হবে! বাড়তি ভাড়া গুনলে টার্মিনাল থেকে রিসোর্টে আসার বিমানবন্দর শাটল মিলবে।

ক্রাউন প্লাজা

সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের টার্মিনালের পাশেই রয়েছে ক্রাউন প্লাজা হোটেল। ভ্রমণের ক্লান্তি দূর করার জন্য সেখানে আছে স্পা, রেস্তোরাঁ, জিম, আউটডোর চত্বর। বনাঞ্চলের আমেজ দিতে সেই আদলেই তৈরি হয়েছে সেখানকার সুইমিং পুল। এ হোটেলের ওপরের তিনটি তলা থেকে দেখা যায় এশিয়ার ব্যস্ততম বিমানবন্দরটির কার্যক্রম ও রানওয়ে। এছাড়া নিউইয়র্কে বিরতিহীন যাওয়ার উদ্দেশে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের বিমানের উড্ডয়ন।

প্রিমিয়ার ইন

যেকোনও ধরনের হোটেল ও দারুণ রিসোর্টের অভাব নেই সংযুক্ত আর আমিরাতের দুবাইয়ে। এর মধ্যে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ ও ৩ নম্বর টার্মিনালের পেছনেই সম্প্রতি চালু হয়েছে ব্রিটিশ মালিকানাধীন প্রিমিয়াম ইন হোটেল। এর ছাদের মোহনীয় সুইমিং পুল থেকে দেখা যায় এমিরেটসের বিশাল এয়ারবাস এ৩৮০ বিমান। টার্মিনাল থেকে সৌজন্য শাটলে চড়ে এই হোটেলে যাওয়া যায়।

প্রডিজি হোটেল

ব্রাজিলের রিও ডি জানেইরো শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত সান্তোস দুমো বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল করে বেশি। এতে রয়েছে দুটি ছোট দৈর্ঘ্যের রানওয়ে। টার্মিনাল ভবনের সঙ্গে লাগোয়া প্রডিজি হোটেল থেকে সেই দৃশ্য দারুণ লাগে। এছাড়া সুস্বাদু খাবার তো মিলবেই। হোটেলের ছাদে সুইমিং পুলে আরাম-আয়েশে সময় কাটানো যায়। তখন বিমানবন্দর ছাড়াও চোখে পড়বে সুগার লোফ মাউন্টেন ও ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার স্ট্যাচু।

অন্যান্য

বিমানবন্দর নিয়ে উৎসাহীরা রানওয়ের সৌন্দর্য দেখার মতো আরও কিছু হোটেল পাবেন। এ তালিকায় রয়েছে ছয় রানওয়ে সমৃদ্ধ হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন আটলান্টা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রেনেসাঁ কনকোর্স হোটেল (সৌজন্য শাটল), টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের শেরাটন গেটওয়ে হোটেল (টার্মিনাল থেকে পাঁচ মিনিটের হাঁটা দূরত্ব), মিয়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হিলটন ব্লু লেগুন হোটেল (সৌজন্য শাটল) ও শিকাগোর ও’হেয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হিলটন (সৌজন্য শাটল)।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com