দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী গ্রিসে অবস্থানরত অনিয়মিত বাংলাদেশিদের বৈধতাপ্রাপ্তির শর্তগুলো প্রকাশ করেছে এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাস। দ্রুতই অনলাইনে আবেদনের সুযোগ পাবেন আগ্রহীরা।
বাংলাদেশ ও গ্রিসের মধ্যে স্বাক্ষরিত ‘জনশক্তি রপ্তানি এবং অনিয়মিত বাংলাদেশিদের বৈধতা প্রদান’ বিষয়ক স্মারক চুক্তির আওতায় দেশটিতে অবস্থানরত ১৫ হাজার অনিয়মিত বাংলাদেশি বৈধতা পাবেন। এজন্য কী ধরনের শর্ত পূরণ করতে হবে তার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে এথেন্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
গত ২৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ দূতাবাস প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রিসে অবস্থানরত মোট ১৫ হাজার অনিয়মিত বাংলাদেশি এই চুক্তির আওতায় বৈধতার সুযোগ পাবেন। বছরে চার হাজার শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে গ্রিসের কৃষিখাতে নিয়োগ পাবেন। তবে অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধতার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো খাতের উল্লেখ করা হয়নি।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, বৈধতা প্রাপ্তির জন্য গ্রিসে অবস্থানরত অনিয়মিত বাংলাদেশিদের একটি অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। যার ফলে কোনো মধ্যসত্বভোগী ও দালালের শরণাপন্ন হতে হবে না তাদের। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মটি চালু হলে সেখানে আবেদন ও নথি জমা দেয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনে হলে দূতাবাস থেকে কারিগরি সহায়তা দেয়া হবে।
আবেদনে যে তিন ধরনের নথি লাগবে
বৈধতা দাবির জন্য অনলাইন সাইটটিতে মূলত তিনটি নথি চাওয়া হবে। সেগুলো হলো:-
ন্যূনতম দুই বছর মেয়াদ আছে এমন বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকতে হবে।
২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারির আগে থেকে গ্রিসে বসবাস করছেন এমন প্রমাণ জমা দিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে কী ধরনের নথি আমলে নেয়া হবে সেটির উল্লেখ করা হয়নি। তবে গ্রিসের প্রশাসনিক নথি, চিকিৎসা সেবা থাকলে সেটির প্রমাণ অথবা গণপরিবহনের মাসিক টিকেট ইত্যাদিকে আমলে নেয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন গ্রিসে দীর্ঘদিন অবস্থানরত বাংলাদেশিরা। কেননা ২০১৪ সালের অভিবাসন ও আশ্রয় আইনের আওতায় সাত বছর ধরে থাকা অভিবাসীদের আবেদনের ক্ষেত্রে এমন নথি বিবেচনায় নেয়া হয়।
বৈধতার পর চাকরি পাবেন সম্ভাব্য নিয়োগকর্তার কাছ থেকে এমন একটি প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে অনিয়মিত অভিবাসীরা নিয়োগকর্তা থেকে কেমন পত্র নিবেন সেটির একটি একটি নির্দিষ্ট ফরম্যাট দূতাবাস সূত্রে জানিয়ে দেয়া হবে।
দ্রুত পাসপোর্টের নবায়ন ও সংগ্রহের পরামর্শ
আইন অনুযায়ী অনলাইন প্লাটফর্ম চালু সাপেক্ষে সংসদে বিলটি কার্যকর হওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধতার জন্য আবেদন করতে হবে। এই সময়সীমা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস।
তবে, আবেদনের প্রস্তুতির জন্য অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রয়োজন অনুযায়ী পাসপোর্টের জন্য দ্রুত আবেদনের পরামর্শ দিয়ে দূতাবাস। যাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ কিংবা যাদের দ্রুতই শেষ হবে সবাইকে ন্যূনতম দুই বছর মেয়াদি পাসপোর্ট নিশ্চিত করতে দূতাবাসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
যেসব বাংলাদেশি অভিবাসীরা গ্রিসের বিভিন্ন দ্বীপ এবং দূরবর্তী শহরের শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থান করছেন তাদের জন্য দূতাবাস সেখানে গিয়ে বিশেষ পাসপোর্ট নিবন্ধন কার্যক্রমের পরিকল্পনা করছে বলে দূতাবাসের ফেসবুক পেইজে উল্লেখে করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কবে থেকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি চালু হবে এবং আবেদনের প্রক্রিয়া ও ফি সম্পর্কে দ্রুতই গ্রিক কর্তৃপক্ষ অবহিত করবে। এছাড়া, বৈধতা পেতে যাওয়া অভিবাসীরা পাঁচ বছর মেয়াদি অস্থায়ী যেই বিশেষ রেসিডেন্স পারমিট পেতে যাচ্ছেন সেটির ধরন ও শর্তগুলো গ্রিসের আশ্রয় ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনার পর প্রকাশ করা হবে।
সূত্র: ডয়চে ভেলে