যুক্তরাষ্ট্র এখন উদার গণতন্ত্র ও ফ্যাসিস্ট একনায়কতন্ত্রের মাঝামাঝি অবস্থানে পৌঁছে গেছে মন্তব্য করেছেন কানাডায় পাড়ি দেওয়া একজন আইভি-লিগ অধ্যাপক। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও ২০১৮ সালের বই হাউ ফ্যাসিজম ওয়ার্কসের লেখক জেসন স্ট্যানলি বৃহস্পতিবার সিটিভি ইয়োর মর্নিংকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা গণতন্ত্রের অনেক পেছনে চলে গেছি।
সীমান্তের দক্ষিণে দ্রুত রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদলে যাওয়ার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের যে তিনজন অ্যাকাডেমিক সম্প্রতি কানাডায় পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন স্ট্যানলি তাদের একজন। কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতা কাঠামোর ইঙ্গিত হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেম কিছু উদ্যোগের কথা উল্লেক করেন স্ট্যানলি। এর মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, আইনজীবী কমিউনিটি, গণমাধ্যম এবং সরকারি কর্মী। সেই সঙ্গে বাক স্বাধীনতা দমন করা, স্ট্যানলি যাকে বলছেন ভয়ের সংস্কৃতি।
স্ট্যানলি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যেসব আইনি প্রতিষ্ঠানকে পছন্দ করেন না সেগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছেন। যেসব অধ্যাপককে তিনি পছন্দ করেন না তাদেরকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছেন। যেসব রাজনীতিককে তিনি পছন্দ করেন না তাদেরকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছেন। এসবই তিনি করছেন রাষ্ট্রযন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে। এটা একটি কর্তৃত্ববাদী দেশ।
ট্রাম্পও যাদেরকে প্রতিপক্ষ মনে করছেন তাদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ এনেছেন। গণমাধ্যমের কিছু সদস্যকে তিনি ‘আমাদের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’ বলেও দাবি করেছেন। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এবং সরকারের মধ্যে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে স্বাধীন মার্কিন সংস্থাগুলোর রাশ টানতে গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন বলে হোয়াইট হাউস বলেছে।
অভিষেকের কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প নিজেকে দেশে গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা ফেরার চরিত্র বলে দাবি করেন। ওই পোস্টে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভেঙে পড়ছে। সুরক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং গণতন্ত্রের সহিংস অবক্ষয় ঘটছে সারা দেশজুড়ে। কেবলমাত্র শক্তিশালী ও ক্ষমতাধর নেতৃত্বই পারে এটা বন্ধ করতে। ২০ জানুয়ারি আপনাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। মেক আমেরিকিা গ্রেট এগেইন।
স্ট্যানলি তার সাক্ষাৎকারে বলেন, আপনি যদি আমেরিকার নাগরিক না হয়ে থাকেন তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলতে পারবেন না। ফেডারেল সরকার বলছে, আপনি যদি ইয়েল ইউনিভার্সিটির অমার্কিন শিক্ষার্থী বা অধ্যাপক হয়ে থাকেন এবং সরকারের বা রাষ্ট্রের আদর্শের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টুইট করে থাকেন তাহলে আপনি আপনার ভিসা হারানোর ঝুঁকি নিচ্ছেন।