আমেরিকাজুড়ে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে চীনা সত্ত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান জানানো হয়েছে জনপ্রিয় এই ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপকে। নিরাপত্তা হুমকি থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন সরকার।বাইটড্যান্সকে তাদের টিকটকের শেয়ার বিক্রি করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে টিকটক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কমিটি অন ফরেন ইনভেস্টমেন্ট ইন দ্য ইউএস তাদেরকে বাইটড্যান্সের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলেছে।প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে এবারই প্রথম টিকটককে নিষিদ্ধ করার হুমকি দেওয়া হলো। এর আগে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০২০ সালে টিকটক নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
বাইটড্যান্স টিকটকের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে তা চীনা সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে পারে, এমন উদ্বেগ রয়েছে পশ্চিমা নানা দেশের কর্মকর্তাদের।
বাইটড্যান্স অবশ্য বরাবরই চীনা কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য পাচারের বিষয়টি অস্বীকার করে এসেছে।গত মাসে হোয়াইট হাউজ সব ফেডারেল সংস্থাকে ৩০ দিনের মধ্যে সরকারি সব ডিভাইস থেকে টিকটক মুছে ফেলার নির্দেশ দেয়।
সরকারি সকল মোবাইল ফোনে টিকটক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে ইউরোপীয় কমিশন, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়াও।কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এমন ব্যবস্থা নিয়েছে, যার ফলে টিকটক পুরোপুরি নিষিদ্ধ করাটা সহজ হবে।মার্কিন কংগ্রেসে দুই দলের সদস্যরাই একটি আইন তৈরির ব্যাপারে একমত হয়েছেন, যেটির ফলে বাইডেনের পক্ষে টিকটক নিয়ন্ত্রণ করা আরও সহজ হবে।
টিকটকের মুখপাত্র মাউরিন শানাহান বলেছেন, “জাতীয় নিরাপত্তাই যদি মুখ্য বিষয় হয়, তাহলে বিনিয়োগ উঠিয়ে নিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। মালিকানায় বদল এলেই তথ্য সরবরাহ বন্ধ হবে না।”
তিনি বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সবচেয়ে বড় উপায় একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার তৃতীয় কোনও পক্ষের সহায়তায় মার্কিন ব্যবহারকারীদের তথ্যের চলাচল পর্যবেক্ষণ করা।”
জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টিকটক প্রায় দুই বছর ধরে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে। তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা) খরচ করার তথ্যও জানিয়েছে কোম্পানিটি।
টিকটকের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বজুড়ে অ্যাপটির প্রায় একশ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১০ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে, যার দুই-তৃতীয়াংশই টিনএজার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা এরই মধ্যে ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটারের চেয়ে টিকটকে বেশি সময় কাটাচ্ছেন। মার্কেট ট্র্যাকার ইনসাইডার ইনটেলিজেন্সের তথ্যমতে, শিগগিরই নেটফ্লিক্সকে টপকে যেতে পারে টিকটক। সূত্র: ডয়েচে ভেলে