শনিবার, ২৯ মার্চ ২০২৫, ০৪:১২ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে যারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন

  • আপডেট সময় বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের যে বিধান দেশটির সংবিধানে আছে সেটি বাতিলের পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংবিধান স্বীকৃত এই আইনে বদল আনতে চাইছেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকে রেকর্ডসংখ্যক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি।

ফেডারেল এজেন্সিগুলোকে অবৈধ অভিবাসী কিংবা সাময়িক ভিসাধারী বাবা মায়ের সন্তানকে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব না দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও রাষ্ট্রীয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রথম দিনেই ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতোমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে। খবর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির।

এমনিতেই অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন থেকে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছেন তিনি। জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে তার সিদ্ধান্তের পর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এসব সংগঠন।

এ নিয়ে একটি সংগঠন বলেছে, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত আমেরিকার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখবে না। অপর একটি সংগঠন বলেছে, ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসীদের জীবন ধ্বংসের জন্য সক্রিয় তৎপরতা শুরু করেছে।

গতকাল অভিষেক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণেই অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ বন্ধ করে দেবেন তিনি। অবৈধ অভিবাসীদের অপরাধী হিসেবে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা এমন লাখো অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে।”

যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, দেশটিতে কোনো শিশুর জন্ম হলে জন্মসূত্রে সে মার্কিন নাগরিকত্ব পাবে। এ ক্ষেত্রে ওই শিশুর বাবা-মা কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তা বিবেচ্য বিষয় হবে না।

জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিকত্ব সুবিধা নিয়ে নতুন নিয়ম ট্রাম্প কীভাবে কার্যকর করতে চান, তা এখনো সুস্পষ্ট নয়। কারণ জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের এ সুবিধা যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে সংরক্ষিত একটি বিষয়। ট্রাম্প যদি জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের এই সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিতে চান, তাহলে তাকে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ও উচ্চকক্ষ সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের এতে সমর্থন প্রয়োজন হবে।

ট্রাম্প দায়িত্ব নিয়েই সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন, কোনো অবৈধ অভিবাসী সন্তান জন্ম দিলে সেই শিশুকে যেন মার্কিন নাগরিকত্ব নথি দেওয়া না হয়।

ট্রাম্প এ নির্বাহী আদেশে সই করার পরপরই আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এএলসিইউ) নামের একটি সংগঠন জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের এমন আদেশের বিরুদ্ধে তারা মামলা করবে। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া শিশুকে নাগরিকত্ব না দেওয়ার আদেশ শুধু অসাংবিধানিক নয়, একই সঙ্গে তা আমেরিকার মূল্যবোধের বেপরোয়া ও নির্মম প্রত্যাখ্যান।

যাদের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়ছে

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর এক প্রতিবেদনে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের প্রভাব তুলে ধরে। এতে বলা হয়, ওই আদেশের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সেই সব শিশুকে নাগরিকত্ব না দেওয়ার; যাদের মা অবৈধভাবে বা পর্যটনসহ বিভিন্ন ভিসায় দেশটিতে অবস্থান করছেন, শিশুটির বাবা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন বা আইনসংগতভাবে স্থায়ী বাসিন্দা নন।

তবে অভিবাসনে কড়াকড়ি আরোপের পক্ষের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের ১৮৯৮ সালের ওই আদেশকে আরও বৃহত্তর পরিসরে দেখছেন। বর্তমান সুপ্রিম কোর্টও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিয়ে আরও কড়াকড়ি আরোপের বিষয়টি অনুমোদন করতে পারে। আবার কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া ট্রাম্পের এই আদেশ দেওয়ার এখতিয়ার আছে কি না, বিষয়টি আদালতে মীমাংসা হবে কি না, সেটিও এখনো সুনিশ্চিত নয়।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com