আমেরিকাতে ইসলামের প্রসার দ্রুত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে যে, আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে আমেরিকার মুসলমান জনসংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে বর্তমানের ৩৫ লাখ থেকে বেড়ে ৮১ লাখ হবে। এই সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মুসলমানরা যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জনগোষ্ঠীতে পরিণত হবে। ল্যাটিনো মুসলমানরা যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত বর্ধনশীল ধর্মান্তরিত জনগোষ্ঠী।
শেয়ার আমেরিকার ওয়েবসাইট থেকে এসব তথ্য প্রদান করে বলা হয়েছেঃ আমেরিকান মুসলমানরা অন্য সকল আমেরিকানদের মতোই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। রমজান মাসে অনেকভাবে এই বৈচিত্র্যের প্রকাশ ঘটে যার মধ্যে শেষ রাতে সেহেরির খাবার এবং সূর্যাস্তে ইফতারের খাবারও রয়েছে।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য মতে, ২০১৭ সালের হিসেব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মোট মুসলমান আমেরিকানের সংখ্যা প্রায় ৩৪ লাখ ৫০ হাজার যাদের ৫৮% অন্য কোন দেশে জন্মগ্রহণ করেছে। বর্তমানে আমেরিকার মোট মুসলমানের মধ্যে ২০% কৃষ্ণাঙ্গ মুসলমান। যাদের প্রায় ৭০% আমেরিকাতে জন্মগ্রহণ করেছে এবং ৪৯% ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে।
এদিকে, রমজান মাস উদযাপনে শত শত আমেরিকান মুসলমান ২ এপ্রিল নিউইয়র্ক সিটির টাইম স্কয়ারে আয়োজিত ইফতার ও নামাজে সমবেত হয়েছিলেন। আয়োজকরা সেদিন ১,৫০০ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করেছিল এবং গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাতকারে তারা শান্তি, মানুষের কল্যাণে দান করা ও ঐক্যের উপর জোর দিয়েছিল। সিবিএস নিউজে দেয়া সাক্ষাতকারে একজন বলেছিলেন “আমরা আজকে এখানে সমবেত হয়েছি যারা আমাদের ধর্ম সম্পর্কে জানেন না তাদেরকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বুঝিয়ে বলার জন্য। ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম।”
তিনি স্থানীয় মাংসবিক্রেতা ও খাবার বিক্রির ট্রাকের/গাড়ির সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ওই এলাকায় হালাল খাবার সরবরাহ করেন। মার্চ মাসে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন “আমি এমন একটা কিছু করতে চেয়েছিলাম যার মাধ্যমে আমরা উদযাপন ও আনন্দের সাথে ভাল লাগার কাজ করতে পারব।”
ওরেগনের সাহলা ডেন্টন নিজেকে অর্ধেক জ্যামাইকান এবং অর্ধেক মেক্সিকান বলতে পছন্দ করেন; তিনি বলেন, তার পরিবার হালাল খাবারের জন্য নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়েছে। এই রমজানে তারা জনপ্রিয় জ্যামাইকান খাবার এসকোভিচ রান্না করবে, যা মাছের উপর পেয়াজ, গাজর, ক্যাপসিকাম ও ভিনেগার দিয়ে তৈরি করা হয়।
রমজান মাস নিয়ে নিজের ছোটবেলার মধুর স্মৃতি হিসেবে তিনি ইফতার করতে মসজিদে যাওয়ার কথা স্মৃতিচারণ করেন। “সেই সময়কার খাবারগুলো খুবই সুস্বাদু ছিল কারণ মসজিদে প্রত্যেকেই কিছু না কিছু খাবার নিয়ে আসত। সেগুলো কোনটা থাকতো মেক্সিকান, কোনটা পাকিস্তানী, কোনটা অন্যদেশের। এভাবে বিভিন্ন দেশের খাবারে টেবিল ভর্তি থাকতো।”