নেট মাইগ্রেশন (নিট অভিবাসন) কমানোর লক্ষ্য নিয়ে যুক্তরাজ্যে ভিসা নিয়মে কঠোর পরিবর্তন এনেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। নতুন নিয়মানুসারে, এখন থেকে দক্ষ কর্মী এবং তাদের ওপর নির্ভরশীলদের জন্য ইংরেজি ভাষার দক্ষতা এ-লেভেল স্তরের সমতুল্য (বি-টু) হতে হবে। এই পরিবর্তনের ফলে অভিবাসী পরিবারগুলোর মধ্যে তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। কারণ ইংরেজি ভাষা শিক্ষার এই উঁচু মানদ- পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় কোর্সের খরচ মেটাতে তারা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা পাবে না। ফলে কয়েক হাজার পাউন্ডের আর্থিক বোঝা আসছে তাদের কাঁধে। খবর বিবিসির।
জানুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বাংলাদেশিসহ দক্ষ কর্মীদের জন্য ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষার মানদ- বর্তমান জিসিএস ই-সমতুল্য (বি-ওয়ান) থেকে বাড়িয়ে সরাসরি এ-লেভেল সমতুল্য (বি-টু) করা হয়েছে। বি-টু মানদ- পূরণের অর্থ হলো, অভিবাসীকে স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে সক্ষম হতে হবে এবং সামাজিক, শিক্ষাগত ও পেশাগত উদ্দেশে কার্যকরভাবে ইংরেজি ব্যবহার করতে জানতে হবে। এটি বি-ওয়ান স্তর থেকে অনেক কঠিন। আগে কেবল কর্মস্থল বা ভ্রমণের সাধারণ বিষয়গুলো বোঝার প্রয়োজন হতো।
এই নিয়মের সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে কর্মী বা শিক্ষার্থীদের স্বামী অথবা স্ত্রী ও প্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীলদের ওপর। এবারই প্রথম যুক্তরাজ্যে আসা কর্মী বা শিক্ষার্থীদের সব প্রাপ্তবয়স্ক নির্ভরশীলদের ভিসার আবেদনের সময় প্রাথমিক ব্যবহারকারী (এ-ওয়ান) স্তরের ইংরেজি জানা আবশ্যক করা হয়েছে। এছাড়া ভবিষ্যতে যারা যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস (সেটেলমেন্ট) করতে চাইবেন, তাদের জন্য বি-টু স্তর পর্যন্ত ইংরেজি জানা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
দক্ষ কর্মী ভিসার আবেদনকারীদের মতো নির্ভরশীলদেরও হোম অফিস-স্বীকৃত ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায় (এসইএলটিএস) উত্তীর্ণ হতে হবে, যার খরচ কয়েকশ’ পাউন্ড। তবে মূল সমস্যা হলো, যারা বর্তমানে এ-ওয়ান বা এ-টু স্তরে আছেন, তাদের এ-লেভেল সমতুল্য বি-টু স্তরে পৌঁছানোর জন্য যে দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল কোর্সগুলো করতে হবে। তার খরচ পুরোটাই ব্যক্তিগতভাবে বহন করতে হবে। যেহেতু স্পাউস বা নির্ভরশীল ভিসার আবেদনকারীরা অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয় বলে গণ্য হন না, তাই তাদের জন্য ভাষা প্রশিক্ষণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট তহবিল বা অনুদানের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।