বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সিলেট-শারজাহ রুটের বিজনেস ক্লাসের এক নারী যাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ ও কুপ্রস্তাব দেওয়া বিমানের ক্রু লুৎফর রহমান ফারুকিকে (বাবু) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মো. শফিউল আজিম স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, ‘সম্মানিত যাত্রী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) অভিযোগ করেন যে, আপনি উক্ত ফ্লাইটে তার সাথে অশোভন আচরণ করেছেন এবং বিভিন্ন ধরনের কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। আপনার এ ধরনের কার্যকলাপে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়, যা বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯ এর ৫৫ ধারার পরিপন্থি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’
এতে বলা হয়, ‘এমতাবস্থায় বাংলাদেশ বিমান কর্পোরেশন কর্মচারী (চাকরি) প্রবিধানমালা, ১৯৭৯ এর ৫৮ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আপনাকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। বরখাস্তকালীন সময়ে আপনি প্রধান কার্যালয়, বিমান, বলাকা, ঢাকায় নিয়মিত হাজিরা দেবেন এবং আপনার বর্তমান ঠিকানায় অবস্থান করবেন। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
বরখাস্তের বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের এমডি শফিউল আজিম বলেন, তাকে আপাতত চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই ঘটনায় বিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্তের পর তার অপরাধ যদি ফৌজদারি মনে হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী মামলা করবে বিমান।
বিমানে জমা দেওয়া ওই যাত্রীর অভিযোগে জানা গেছে, চলতি মাসের ১১ জুলাই বিমানের বিজি-৩৫১ ফ্লাইটে সিলেট থেকে বিজনেস ক্লাসে একা ওই নারী শিক্ষার্থী শারজায় যান। রাত ৮টায় ফ্লাইট যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে ওই নারী শিক্ষার্থীকে একা পেয়ে নানা অশ্লীল ও যৌন উত্তেজক কথাবার্তা শুরু করেন ফ্লাইটের চিফ পারসার লুৎফর রহমান ফারুকী।
একপর্যায়ে কেবিনের লাইট নিভিয়ে পাশের সিট ফাঁকা থাকায় সেখানে বসেন তিনি। এ সময় তাকে সামনে অন্ধকার জায়গায় গিয়ে বসার প্রস্তাব দেন ফারুকী।
এছাড়াও অভিযুক্ত ফ্লাইট পার্সা ওই যাত্রীকে বলেন, শারজাহতে তিনি এসিটি হোটেলে থাকবেন। নারী যাত্রীকে সেই হোটেলে আসার কুপ্রস্তাবও দেন তিনি। ফ্লাইটের শেষের দিকে বিমানের একজন নারী কর্মী বিজনেস ক্লাসে এলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয় এবং ওই ফ্লাইট পার্সার আচরণ বদলে ফেলেন বলেও চিঠিতে লিখেছেন নারী যাত্রী।
এঘটনায় ২০ জুলাই বাবুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিমান।