ম্যারিয়ট হোটেল গ্রুপ পৃথিবীর অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এবং অভিজাত হোটেল চেইন। এই হোটেলের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯২৭ সালে। জন উইলার্ড ম্যারিয়ট এবং তাঁর স্ত্রী এলিস শীঘ্রই বুঝতে পারেন যে মানসম্পন্ন সেবা এবং আরামদায়ক পরিবেশই সফলতার মূল চাবিকাঠি। তারা ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি ছোট রুটবিয়ার স্ট্যান্ড দিয়ে ব্যবসার শুরু করেন, যা থেকে আজকের বিশাল আন্তর্জাতিক হোটেল চেইনের ভিত্তি তৈরি হয়।
ম্যারিয়ট হোটেলের বিস্তার
বর্তমানে ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনালের অধীনে প্রায় ৮,৫০০ হোটেল রয়েছে, যা বিশ্বের ১৩০টিরও বেশি দেশে এবং অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে। ম্যারিয়ট শুধুমাত্র একটি হোটেল ব্র্যান্ড নয়; এটি বিভিন্ন বিলাসবহুল এবং মানসম্পন্ন হোটেল ব্র্যান্ডের সমন্বয়ে তৈরি একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ক। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্র্যান্ড হলো: দ্য রিটজ-কার্লটন, স্ট্রেজিস, শেরাটন, এবং ম্যারিয়ট হোটেলস।
সেবা ও সুবিধা
ম্যারিয়ট হোটেলের বিশেষত্ব হলো এদের অতিথিদের জন্য সর্বোচ্চ মানের সেবা প্রদান। প্রতিটি ম্যারিয়ট হোটেলে উচ্চমানের রুম পরিষেবা, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ কর্মী এবং নির্দিষ্ট চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজড সেবা পাওয়া যায়। এছাড়াও, কনফারেন্স হল, সুইমিং পুল, ফিটনেস সেন্টার, এবং স্পা সুবিধা বেশিরভাগ হোটেলেই থাকে।
খাদ্য ও পানীয়
ম্যারিয়ট হোটেলগুলিতে বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় খাবারের বৈচিত্র্য পাওয়া যায়। প্রত্যেক হোটেলেই নিজস্ব রেস্তোরাঁ রয়েছে যেখানে অতিথিরা বিভিন্ন স্বাদের খাবার উপভোগ করতে পারেন। ভোজনরসিকদের জন্য রয়েছে গুরমে খাবারের বিকল্প, স্বাস্থ্যসচেতন অতিথিদের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের মেনু, এবং যারা ককটেল ও পানীয় পছন্দ করেন তাদের জন্য বিশাল ড্রিঙ্কস কালেকশন।
বিশেষ সেবা
ম্যারিয়ট হোটেলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকগুলোর একটি হলো তাদের বিশেষ সেবা। কাস্টমাইজড ওয়েডিং প্ল্যানিং, কর্পোরেট ইভেন্ট আয়োজন এবং ব্যক্তিগত ভ্রমণ ব্যবস্থাপনার মতো সেবাগুলো এদের খ্যাতিকে আরও সমৃদ্ধ করেছে। এ ছাড়া ম্যারিয়টের কিছু হোটেলে বিশেষত বিমান সংস্থার ক্রু সদস্যদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়, যা বিমান সংস্থাগুলোর জন্য একটি বড় সুবিধা। বিমান ক্রুরা হোটেলের নির্দিষ্ট রেট প্যাকেজে সেরা সেবা পেয়ে থাকে।
কাস্টমার সার্ভিসের গুণগত মান
ম্যারিয়ট হোটেলগুলোর সবচেয়ে বড় গুণ হলো তাদের গ্রাহক সেবা। অতিথিদের চাহিদা পূরণে কর্মীরা সবসময়ই দ্রুত এবং পেশাদারীভাবে সাড়া দেন। অতিথিদের প্রতিক্রিয়া এবং পরামর্শের ভিত্তিতে সেবা উন্নয়নের চেষ্টা করা হয়। এ কারণেই ম্যারিয়ট হোটেলগুলো পর্যটক এবং ব্যবসায়ীদের কাছে প্রিয় একটি গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
কাস্টমার প্রোফাইল ও অভিজ্ঞতা
বিশ্বব্যাপী ম্যারিয়টের অতিথিরা সাধারণত ব্যবসায়ী, উচ্চপদস্থ কর্মচারী, এবং ভ্রমণপ্রিয় পর্যটক। ম্যারিয়ট হোটেলগুলির পরিষেবা এতটাই উন্নত যে প্রায়ই বিমান সংস্থার ক্রুরা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের সময় এখানেই রাত্রি যাপন করেন। তাদের জন্য বিশেষ অফার ও সুবিধা রয়েছে যা ক্রু সদস্যদের জন্য উপযোগী।
বিমান সংস্থার ইনফ্লাইট সেবা
ম্যারিয়টের খাবার সেবা কেবলমাত্র হোটেলের অতিথিদের জন্য নয়, অনেক ক্ষেত্রে তারা বিমান সংস্থার ইনফ্লাইট সেবার জন্যও খাবার প্রস্তুত করে। উন্নত মানের এই খাবারগুলো দীর্ঘ ভ্রমণের সময় যাত্রীদের জন্য অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই সুবিধাটি ম্যারিয়টকে অন্যান্য হোটেল থেকে আলাদা করে তুলেছে।
উপসংহার
ম্যারিয়ট হোটেল শুধুমাত্র একটি হোটেল নয়, এটি বিলাসিতা, আরাম এবং শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক। এটির সেবা, খাবারের বৈচিত্র্য, এবং অতিথি সন্তুষ্টির প্রতি অঙ্গীকার একে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করেছে। যেকোনো প্রকার ভ্রমণ হোক, ম্যারিয়ট সবসময়ই তাদের অতিথিদের সর্বোচ্চ মানের সেবা দিয়ে আকর্ষিত করে রাখে।