‘মিস পাকিস্তান ইউনিভার্সাল ২০২৩’ মুকুট জিতেছেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের প্রবাসী মনির আহাম্মেদের মেয়ে কপোতাক্ষী চঞ্চলা ধারা। মনির আহাম্মেদদের বাড়ি ছিল পৌর শহরের মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়পাড়ায়।
পাকিস্তানের জিও টিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৩১ মে পাকিস্তানের লাহোরে বিলাসবহুল গ্র্যান্ড পাম হোটেলে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। ওই প্রতিযোগিতায় একমাত্র বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রতিযোগী ছিলেন কপোতাক্ষী চঞ্চলা ধারা।
কপোতাক্ষী চঞ্চলা ধারার বাবা মনির আহাম্মেদ পেশায় সাংবাদিক। তিনি করাচির দ্য ডেইলি নিউজের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া বিবিসির হয়ে কাজ করেন। ডয়চে ভেলের সাংবাদিক ছিলেন ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত। বর্তমানে করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায় নিযুক্ত।
১৯৭০ সালে পড়াশোনার জন্য পাকিস্তানের করাচি যান মনির আহাম্মেদ। পরে সেখানেই থেকে যান তিনি। তিনি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়পাড়ার বাসিন্দা।
পাকিস্তানের জিও টিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কানাডাভিত্তিক মিস পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট সোনিয়া আহমেদ। আয়োজনটি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ী নির্ধারণ করে।
এ বছর মিস পাকিস্তান গ্লোবাল জিতেছেন ওয়ার্দা মুনিব রাও, মিস ট্রান্স পাকিস্তান জিতেছেন আলিনা খান, মিস পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড জিতেছেন শাফিনা শাহ (যুক্তরাজ্য), মিস পাকিস্তান ইউনিভার্স জিতেছেন বিনিশ জর্জ এবং মিসেস পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড মুকুট জিতেছেন ফাতিমা ফাখার।
ইভেন্ট চলাকালীন মিস পাকিস্তান ইউনিভার্সাল কপোতাক্ষী চঞ্চলা ধারা চিকিৎসা পেশা থেকে বিনোদন জগতে আসার গল্প শোনান। তিনি থাকেন করাচিতে। সেলিব্রেটিদের প্রতি শৈশবের মুগ্ধতার কথা জানান কপোতাক্ষী। কিন্তু এই জগতে কীভাবে ক্যারিয়ার গড়বেন তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ছিলেন। অবশেষে মিস পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড প্ল্যাটফর্মটি আবিষ্কার করেন। ২০২২ সালের মিস পাকিস্তান ইউনিভার্সাল ড. শাফাক আক্তার তার অনুপ্রেরণা বলে জানান কপোতাক্ষী।
ডা. কপোতাক্ষী এখন করাচির লিয়াকত ন্যাশনাল হাসপাতালে কর্মরত। বাবাই নাম রাখেন কপোতাক্ষী চঞ্চলা ধারা। কপোত মানে কবুতর, অক্ষী মানে চোখ আর চঞ্চলা মানে ছটফটে বা দুষ্টু। এক চঞ্চল কবুতরের চোখ—এই নামের মধ্যে তার ব্যক্তিত্ব ভালোভাবেই প্রতিফলিত।
জন্ম ও বেড়ে ওঠা সম্পর্কে কপোতাক্ষী বলেন, করাচিতে একটি প্রেমময় মুসলিম পরিবারে তিনি বেড়ে উঠেছেন। মায়ের অকাল মৃত্যুর পর বাবার আদর-যত্নেই বড় হয়েছেন। তবে এই জগতে আসার পর প্রথম প্রথম বিশেষ করে মায়ের আত্মীয়দের দিক থেকে সমালোচনার মুখে পড়েন। কিন্তু প্রতিযোগিতার মুকুট জিতে এখন সবার সমর্থন পাচ্ছেন।
বিখ্যাত আগা খান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন কপোতাক্ষী। লিয়াকত ন্যাশনাল হাসপাতালে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি স্মরণ করেন, মা যখন শয্যাশায়ী তখন তার বয়স মাত্র তিন বছর। ওই সময় তার লালন-পালনে বাবা ও চাচা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এই শৈশবে এমন অপত্য স্নেহ পাওয়ার অভিজ্ঞতার ছাপ পড়েছে তার পেশায়। কপোতাক্ষী চঞ্চলা ধারার ভবিষ্যৎ স্বপ্ন বিনোদন শিল্পে সুনামের সঙ্গে থাকার পাশাপাশি একজন দক্ষ নিউরো সার্জন হওয়া।