ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পাশে ধরন্তী হাওরের বুকে গড়ে ওঠা হাওর বিলাস রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্টটি দর্শনার্থীদের জন্য বিনোদন কেন্দ্র ও সৌন্দর্যের লীলানিকেতনে রূপ নিয়েছে। বাহারি খাবার ও মনোমুগ্ধকর পরিবেশের জন্য এই রিসোর্ট ঘিরে স্থানীয় ও বাইরে থেকে আগত দর্শনার্থীদের আগ্রহ ও উদ্দীপনা দিন দিন বেড়েই চলেছে৷ এছাড়াও নির্জনতার সুযোগে আগে এই এলাকায় নানান অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও এখন এই রিসোর্টকে ঘিরে সেটির মাত্রা অনেকটা কমে এসেছে। ফলে বছর না ঘুরতেই এলাকায় বিশেষ সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়েছে রিসোর্টটি।
অবস্থানগত কারণে এবং সুশৃঙ্খল পরিবেশের কারণেই এই রিসোর্টটি এলাকার প্রেক্ষাপটে ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করেছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। ঈদ ও পূজার মৌসুম ছাড়াও স্বাভাবিক সময়েও দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে এখানে।
জানা যায়, গত ঈদুল আজহার দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জেলার সরাইল উপজেলার ধরন্তি হাওরের বুকে গড়ে উঠে এই রিসোর্টটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলানিকেতন ঘিরে এই রেষ্টুরেন্ট নজর কাড়ে সকলের। স্থানীয়দের পাশাপাশি বর্ষাকালে অন্যান্য এলাকা ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গাড়ি এবং নৌকায় চড়ে দর্শানার্থীরা ছুটে আসেন মিনি কক্সবাজার খ্যাত ধরন্তি হাওরের সৌন্দর্য দেখার জন্য। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের ভিড় লক্ষনীয়।
আর বিখ্যাত সেই ধরন্তি হাওরের পাশেই গড়ে উঠায় হাওর বিলাস রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট দর্শনার্থীদের জন্য বিনোদন কেন্দ্রে রূপ নিয়েছে। ভরা বর্ষায় দূর থেকে মনোমুগ্ধকর ওই রিসোর্টিকে দেখে মনে হয় বিশাল জলরাশির বুকে ভাসমান লাল-সবুজ রঙের মনোহর বিনোদন কেন্দ্র। এর প্রবেশ পথটি যেন নানা রঙে সাজানো কাঠের সেতু! ফুলে ফুলে সজ্জিত। সেখানে শিশুদের জন্য রাখা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের খেলনা। রয়েছে ৩টি প্লাস্টিকের ছোট বুট।
রিসোর্টটির খাবারেও রয়েছে বৈচিত্র্যময়তা। বিভিন্ন রকমের জুস কফি,লাচ্ছি,কোমল পানীয় এবং চটপটি ও হরেক রকমের ফুসকার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু বাংলা খাবার এখানে পাওয়া যায়। দর্শনার্থীরা এখানে এসে বিশ্রামের পাশাপাশি সৌন্দর্য উপভোগ ও ক্ষুধা নিবারণ করতে পারে বলেই দিন দিন এই রিসোর্টের জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রিসোর্টে ঘুরতে আসা এক দর্শনার্থী বলেন, রিসোর্টটি হওয়ার পর হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে ভিন্ন ধরনের বিনোদন পাচ্ছি।
হাওর বিলাস রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার তোফাজ্জল হোসেন জানান, বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিন কয়েক হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটে এই রিসোর্টে। এছাড়া ঈদ ও দূর্গাপুজার সময়ও লোকজনের ঢল নামে। বছরের অন্য সময়ে দিনে গড়ে ২৫০/৩০০ লোক আসেন এখানে।
রিসোর্টের উদ্যাক্তা নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা হাফেজ আলী নেওয়াজ ও ইব্রাহীম মৃধা বলেন, ধরন্তী হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আগত প্রকৃতি প্রেমিক সকলের বিনোদনের জন্য এই রিসোর্টটি প্রতিষ্ঠা করেছেন তারা। বিনোদনের জন্য গড়ে উঠা রিসোর্টকে ঘিরে মিনি কক্সবাজারে দর্শনার্থীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সাথে রাতের নির্জন হাওরের নীরবতার বদলে পদচারণার ফলে ওই এলাকার নিরাপত্তা জোরদার হয়েছে এবং আঞ্চলিক সড়কে ডাকাতি বন্ধ হয়েছে এমনটি দাবি স্থানীয়দের।
Like this:
Like Loading...