রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ অপরাহ্ন

মাসের পর মাস রাতেও দিন থাকে যেসব দেশে

  • আপডেট সময় বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দিনে সূর্য রাতে চন্দ্র প্রকৃতির নিয়মই এটি। তবে জানলে অবাক হবেন, বিশ্বের এমনও কিছু দেশ আছে যেখানে মাসের পর মাস রাতের বেলাও আলোকিত থাকে। বলতে গেলে বছরের বিভিন্ন সময় রাতই নামে না বিশ্বের সেসব দেশে। বিস্ময়কর বিষয় হলেও সত্যিই সেসব দেশের বাসিন্দারা প্রকৃতির এই অদ্ভূত নিয়মে নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়েছেন।

আর এই অলৌকিক প্রাকৃতিক নিয়ম দেখতে সেসব দেশে পর্যটকরাও ভিড় করেন। সেখানে রাতের বেলায় দিনের রূপ দেখার পাশাপাশি মেরুজ্যোতি বা অরোরাও দেখা যায়। যা বড়ই রোমাঞ্চকর। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের কোন কোন দেশে দেখা যায় এমন দৃশ্য-

আইসল্যান্ড

ব্রিটেনের পর এটি ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম দ্বীপ রাষ্ট্র। এ দেশের প্রায় ১০ শতাংশই দখল করে রেখেছে হিমবাহ। যদি ঠান্ডার কারণে সেখানে পর্যটকদের ভিড় কম, তবে যারা ঠান্ডায় অভ্যস্ত তারা আইসল্যান্ডের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পিছু হাঁটেন না।

আইসল্যান্ডেও রাতের আকাশে সূর্য দেখা দেয়। জুন মাসে এই নিশীথ সূর্যের সবচেয়ে ভালো দর্শন মেলে। মার্চ ও সেপ্টেম্বর মাসে সেখানে দিন ও রাতের পুরোপুরি অর্ধেক অবস্থান। আর ডিসেম্বর মাসে দিনের মধ্যে ২০ ঘণ্টাই থাকে রাত। স্থানীয়দের মতে, উত্তর মেরুর অরোরার দৃশ্য সবাইকে মুগ্ধ করে দেয়।

নরওয়ে

উত্তর মেরুর বরফে আচ্ছন্ন থাকে নরওয়ে। সারা বছরই এ দেশে কনকনে ঠান্ডা থাকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, উত্তর মেরুর অরোরার সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে দেয়। গ্রীষ্মকালে নরওয়েতে সূর্যাস্ত হয় না। সব সময়ই সেখানে দেখা যায় গোধূলি। প্রায় ৭৬ দিন পর্যন্ত সেই সূর্যকে নরওয়ের আকাশে দেখা যায়।

তবে শীতকালের দৃশ্য আবার ভিন্ন। শীতে আবার সূর্যাদয় দেখাই যায় না। একইসঙ্গে প্রচণ্ড ঠান্ডায় কাবু হয়ে যান বাসিন্দারা। আর্কটিক এলাকার দেশ নরওয়েতে মে থেকে জুলাই পর্যন্ত রাতের বেলাতেও সূর্য দেখা যায়। এসময় সেখানে পর্যটকদের আনাগোনাও বেড়ে যায়।

ব্যারো, আলাস্কা

আলাস্কার উত্তর অংশের সবচেয়ে বড় শহরের নাম ব্যারো। যদিও শরটির আসল নাম উটকিয়াগভিক। নামটি বেশ কঠিন হওয়ায় সবাই ব্যারো বলেই ডাকেন।

এ শহরেও মে-জুলাই মাস পর্যন্ত আকাশে সূর্য দেখা যায়। প্রায় দুই মাস অস্ত যায় না সূর্য। পরে নভেম্বর থেকে আবার সূর্যমামা বিশ্রাম নেন। পুরো নভেম্বর মস অন্ধকারেই কাটে ব্যারোর বাসিন্দাদের।

নুনাভুট, কানাডা

কানাডার সবচেয়ে নতুন, বৃহত্তর ও একেবারে উত্তর অবস্থিত অঞ্চল হল নুনাভুট। এখানে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। এটিও আর্কটিক অঞ্চলে অবস্থিত। বছরে দুটি মাস এখানে সপ্তাহের ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা দেখা সূর্য যেন অস্ত যেতেই ভুলে যায়। শীতকালে আবার অন্ধকারভাব কাটেই না অর্থাৎ সূর্যের দেখা মেলে না।

সুইডেন

প্রতিবছরের মে-অগাস্ট মাস পর্যন্ত সুইডেনের আকাশের সূর্য মধ্যরাতে অস্ত যায়। আবার ভোর ৪টায় উদয় হয়। প্রায় ৬ মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সারাদিন আকাশে সূর্যকে দেখা যায়।

তাই এখানকার মানুষজনও দিনের আলোকে দারুণ উপভোগ করেন। উপভোগ করেন পর্যটকরাও। গলফ খেলা, মাছ ধরা, বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে রাত কাটান তারা!

ফিনল্যান্ড

প্রায় ৭৩ দিন ধরে রাতের বেলা সূর্য দেখা যায় ফিনল্যান্ডে। হাজারও হ্রদের এই দেশের রাতের আকাশও উজ্জ্বল থাকে গ্রীষ্মকালে। অন্যান্য দেশগুলোর মতো শীতকালজুড়ে থাকে গাঢ় অন্ধকার।

এখানকার বাসিন্দারা গ্রীষ্মকালে কম ঘুমান। বছরের বেশিরভাগ কাজই তারা সে সময় করেন। সেখানকার বেশিরভাগ মানুষ বসবাস করেন বরফের তৈরি ইগলু বাড়িতে।

এমন কেন হয়?

পৃথিবীর অক্ষরেখা তার সমতলের ২৩.৫ ডিগ্রি ঝুঁকে যাওয়ার ফলে প্রতিটি গোলার্ধ গ্রীষ্মকালে সূর্যের দিকে হেলে যায়। আবার শীতকালে সেখান থেকে সরে যায়। ফলে সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চলে বছরের একটি বিশেষ সময় মধ্যরাতেও সূর্য দেখা যায়।

তবে যখন কুমেরু অঞ্চলে শীতকাল, তখন দিন ও রাতের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা যায় না। কারণ সূর্য সেখানে ওঠেই না। পুরো কুমেরু অঞ্চল অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে। ঠিক তখন সুমেরু অঞ্চল পুরো ২৪ ঘণ্টাই সূর্যালোকিত দিন উপভোগ করে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com