বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ অপরাহ্ন

মাল্টা

  • আপডেট সময় রবিবার, ১২ মার্চ, ২০২৩

মাল্টার সরকারী নাম “রিপাবলিক অফ মাল্টা”। পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশগুলোর একটি হচ্ছে এই মাল্টা। ইতালির সিসিলি দ্বীপ থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং জিব্রাল্টার প্রণালী থেকে ১,৮২৬ কিলোমিটার পূর্বে রিপাবলিক অব মাল্টার অবস্থান। এই দেশটি মোট পাঁচটি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। পাঁচটি দ্বীপের মধ্যে মূলত তিনটি বড় দ্বীপ- মাল্টা, গোজো ও কোমিনোতেই জনবসতি আছে। ভূমধ্যসাগরে এর অবস্থানের কারণে ঐতিহাসিকভাবে দেশটির রাজনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। দেশটি অতীতের অনেক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।

১। প্রাচীনকাল থেকেই ভৌগলিক অবস্থানের কারণে মাল্টা সবসময় এক গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে ছিল। দেশটি বহিঃশত্রু দ্বারা বারবার আক্রান্ত হয়েছে। ফিওনিশিয়ানস, রোমান, বাইজেন্টাইন এমনকি আরবরাও দেশটিতে তাদের পদচিহ্ন রেখে গেছে।

পরবর্তীতে নানান যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশটি ব্রিটিশদের করায়ত্ত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য জর্জ ক্রসকে ব্রিটেনের রাজা ষষ্ঠ জর্জ ১৯৪২ সালে উপহার দেন মাল্টা। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে মাল্টার স্বাধীনতা বিল পাস হয় ১৯৬৪ সালে। ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এটি ‘স্টেট অব মাল্টা’ নামে পরিচিত ছিল। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ছিলেন রাষ্ট্রটির প্রধান। ১৯৭৪ সালে দেশটি ‘রিপাবলিক অব মাল্টা’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। ২০০৪ সালে দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হয়।

২। ৩১৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটিতে প্রায় ৪ লাখ ৭৫ হাজার মানুষের বাস।

৩। দেশটির সরকারী ভাষা মাল্টিজ এবং ইংরেজি। তবে দেশটিতে ইতালিয়ান ভাষাও প্রচলিত।

৪। দেশটির প্রধান ধর্ম হচ্ছে খ্রিস্টধর্ম।

৫। মাল্টার রাজধানী ভ্যাল্লেটা এবং দেশটির বৃহত্তম শহর হচ্ছে সেন্ট পলস বে

৬। যেমনটি আগেই বলেছি, ভাল্লেট্টা মাল্টার রাজধানী। প্রায় সাড়ে চারশো বছর আগে এই নগরীর গোড়াপত্তন ঘটে। গ্র্যান্ডমাস্টার জ্যঁ প্যারিজো দে লা ভালেট্টার নামানুসারে নগরীর নামকরণ করা হয়। এই শহরের প্রধান আকর্ষণ দ্য গ্রান্ড মাস্টার্স প্যালেস। নগরীর সবচেয়ে পুরনো ও সুন্দর প্রাসাদগুলোর একটি। বর্তমানে প্রাসাদটির একটি অংশ রাষ্ট্রপতির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আর প্রাসাদের বাকি অংশ পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এই প্রাসাদের খুব কাছেই রয়েছে রিপাবলিক স্কয়ার। কিছু সময়ের জন্য ঘুরে বেড়াতে, ক্যাফে আর রেস্তোরাঁয় সুস্বাদ্য খাবারের স্বাদ নিতে পর্যটকরা এখানে ভিড় করেন।

ভাল্লেট্টায় প্রায় তিনশোর বেশি নানা ঐতিহাসিক স্থাপনা, যেমন- দুর্গ, গির্জা, প্রাসাদ রয়েছে। আর এ কারণে ইউনেস্কো এই শহরকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

৭। দেশটির আরো একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন হচ্ছে চার্চ অব সেন্ট মেরি। ১৮৬০ সালে নির্মিত হয় এই গম্বুজওয়ালা গির্জা। বিশ্বের বৃহত্তম গম্বুজওয়ালা গির্জাগুলোর মধ্যে এটি তৃতীয়। গির্জার মাথাটি গম্বুজ আকারের। বিরাট আকারের গম্বুজ। এত বড় গম্বুজের জন্যই এই গির্জা ‘মোস্তা দোম’ নামেও খ্যাত।

৮। সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ মাল্টা। তুলা ও তামাক দেশটির প্রধান রপ্তানিযোগ্য পণ্য।

৯। দেশটির সরকারী মুদ্রা ইউরো।

১০। দেশটির মোট জিডিপি প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এবং মাথাপিছু আয় প্রায় ৪৫ হাজার মার্কিন ডলার।

১১। ঐতিহ্যমন্ডিত এক দেশ মাল্টা। পর্যটন শিল্পে বড় ধরনের এক স্থান দখল করে রয়েছে দেশটি। উষ্ণ আবহাওয়া, ঐতিহাসিক নানা স্থাপনা, নান্দনিক স্থাপত্যশিল্প, বিনোদনের নানা সুযোগ-সুবিধা থাকায় দেশটি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com