রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৩২ অপরাহ্ন

মালয়েশিয়ায় সব বিদেশি অবৈধ অভিবাসী নন

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৩

মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন দেশের নাগরিক ব্যবসা, শিক্ষা, কাজ এবং ‘মাই সেকেন্ড হোম’ ক্যাটাগরিতে বসবাস করেন। এছাড়া ব্যাপক সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস আছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদেশিদের বসবাসের ফলে নিজস্ব এলাকা, নিজস্ব ব্যবসা, মসজিদ, স্কুল ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে তারা।

হারিয়ান বেরিতা সংবাদে বলা হয়, স্থানীয়রা বিদেশিদের সংখ্যাধিক্য এলাকা নিয়ে প্রায়ই নানা অভিযোগ করে থাকেন বলে দেশটির ইমিগ্রেশনের পরিচালক শামসুল বদরিন মহসিন জানিয়েছেন।

অভিবাসন বিভাগ ক্লাং উপত্যকায় বিদেশিদের আকৃষ্ট করার অন্যতম কারণ হিসেবে চাকরির ক্ষেত্রে, বিশেষ করে নির্মাণ এবং সেবা সেক্টরে বিদেশি কর্মীদের প্রচুর চাহিদার কথা জানায়।

কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক শামসুল বদরিন মহসিন বলেছেন, রাজধানী শহরে বিদেশি শ্রমের উচ্চ চাহিদা থাকায় নিয়োগকর্তারা এসব বিদেশিদের মধ্য থেকে নিয়োগ দেন।

তিনি আরও বলেন, কুয়ালালামপুরের সমস্যা হলো, এখানে প্রচুর সংখ্যক বিদেশি। আমরা প্রায়ই এ বিষয়ে অভিযোগ পাই। কিন্তু পরিদর্শন করার পর, আমরা দেখতে পাই যে, তাদের বেশিরভাগেরই বৈধতা রয়েছে।

‘বিদেশিদের দেখে স্থানীয়রা ধারণা করেন যে, তারা অবৈধ অভিবাসী। পুলিশ এবং কুয়ালালামপুর সিটি অথরিটি এ বিষয়ে কোনো কাজ করছে না বলে অভিযুক্ত করতে শুরু করেন। বাস্তবতা হলো আমরা যে বিদেশিদের দেখছি তারা সবাই অবৈধ নয়।’ বলে উল্লেখ করেন কুয়ালালামপুর ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি, আমরা পুডুরায় অভিযান পরিচালনা করে অনেক বিদেশিকে আটক করেছিলাম। কিন্তু আমরা তাদের ছেড়ে দিয়েছি। কারণ তাদের বৈধতা এবং কাজের অনুমতি ছিল।

https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2023March/malaysia-2-20231225091901.jpg

শামসুল বদরিন বলেন, তার বিভাগ রাজধানীতে বিদেশিদের আগমনের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেয়। এবং অবৈধভাবে অবস্থানরত বিদেশিদের শনাক্ত করতে অভিযান পরিচালনা করে থাকে।

বেরিতা হারিয়ান রিপোর্ট বলা হয়, ক্লাং উপত্যকা জুড়ে কমপক্ষে ৩০টি স্থানে বিদেশিদের নিজস্ব বসতি এলাকা গড়ে উঠেছে। কারণ ক্লাং উপত্যকা দ্রুত উন্নয়ন, শিল্প এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য বিখ্যাত। ফলে এ এলাকায় কাজের সুযোগ থাকায় বিদেশিদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে নির্মাণ, সেবা এবং পরিচ্ছন্নতা সেক্টরে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়, উল্লেখযোগ্যভাবে বিদেশিদের সংখ্যার বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা আধিপত্য দেখাতে শুরু করায় স্থানীয় বাসিন্দাদের বেশ ভাবিয়ে তুলেছে। বর্তমানে ক্লাং উপত্যকার বেশ কিছু এলাকা বিভিন্ন বিদেশিদের কলোনিতে পরিণত হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশি ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক। ক্লাং উপত্যকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন তারা। কুয়ালালামপুর, সুঙ্গাই বুলোহ, আমপাং, সেলেয়াং, শাহ আলম, কাজাং, রাওয়াং, গোমবাক, পুচং এবং ক্লাং এর কেন্দ্রীয় অঞ্চলে বাস করেন।

অপরদিকে বাংলাদেশিরা লেবুহ আমপাং, বুকিত বিনতাং এবং চেরাস বারুতে বাস করেন। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আমপাং, গোমবাক এবং সেরি কেমবাঙ্গানে কেন্দ্রীভূত।

রিপোর্ট বলা হয়েছে, বিদেশিদের নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মুদি দোকান, খাবারের দোকান, স্কুল এবং নিজস্ব সুবিধা প্রতিষ্ঠা তাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থানের প্রমাণ করে। উদাহরণস্বরূপ, সেলেয়াংয়ে রোহিঙ্গারা বেশ কিছুদিন ধরে আধিপত্য করে আসছে। আর চীন এবং কোরিয়ান নাগরিকরা আমপাং, চেরাস এবং কুচাই লামার বেশ কয়েকটি স্থানকে তাদের কেন্দ্র করেছে।

অন্যদিকে, পাকিস্তানিরা চেরাস, পুচং, শাহ আলম, সেরি কেমবাঙ্গান, নিলাই এবং ডেংকিল এলাকায় তাদের নিজস্ব ব্যবসা পরিচালনা করে। গত এক দশকে, ভারত, নেপাল, আরব অঞ্চল এবং আফ্রিকা থেকে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক বাসিন্দাও ক্লাং উপত্যকায় বসতি স্থাপন করেছে।

পর্যবেক্ষকরা বিশ্বাস করেন যে, কর্তৃপক্ষের কার্যকর এবং টেকসই ব্যবস্থা বিদেশিদের মালয়েশিয়ায় যাওয়া সমস্যার সমাধান হবে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসার বিভিন্নরকম শর্ত আছে। সে সব শর্ত মেনে অবস্থান করলে কোনো বিদেশিই মালয়েশিয়ার স্থানীয়দের জন্য সমস্যার হবেন না।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com