বিদেশি কর্মীর অভাবে সার্বিকভাবে দেশের উৎপাদনশীলতায় ভয়াবহ প্রভাব পড়বে। জিডিপি কমে যাবে কারণ কোম্পানি পণ্য সরবরাহের আদেশ পূরণ করতে পারবে না, বিশেষ করে রপ্তানি আদেশগুলো।
সম্প্রতি বিদেশিকর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া স্থগিত করায় বৃহত্তর ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারারের (এফএমএম) সভাপতি সো থিয়ান লাই ১ মে এসব কথা বলেন।
এদিকে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এফএমএমএর পর্যাপ্ত বিদেশি শ্রমিক দরকার দাবিকে ‘অতিরঞ্জন’ বলেছেন মালয়েশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির অর্থনীতির অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ জিওফ্রে উইলিয়ামস।
এ অর্থনীতিবিদ ফেডারেশন অফ মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্সের (এফএমএম) বিদেশি কর্মী সংক্রান্ত দাবিকে বাতিল করেছেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) সহযোগিতা করার জন্য পর্যাপ্ত বিদেশিকর্মী আছে। এ অর্থনীতিবিদের হিসাবে এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় ১৫ লাখ বৈধ বিদেশিকর্মী আছে।
ম্যানুফ্যাকচারার সভাপতি সো থিয়ান লাই
তিনি বলেন, প্রায় ১৫ লাখ বৈধ বিদেশিকর্মী আছে এবং সরকারের বৈধকরণ কর্মসূচির আওতায় আরও ৩ লাখ ৮০ হাজার বিদেশি অবৈধকর্মী বৈধ হওয়ার লাইনে আছে। এর আগে এই কর্মসূচি ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত চলছিল তখন ৪ লাখ ১০ হাজার অবৈধ বিদেশি কর্মী নাম নিবন্ধন করেছিল।
মালয়েশিয়ায় উচ্চ বেকারত্ব আছে, প্রায় ১০ লাখ লোক কর্মসংস্থানহীন আছে, কর্ম পেতে যাচ্ছে বা কাজের বাইরে আছে। তারা কাজে জড়িত হবে যদি বেতন বৃদ্ধি করা হয়, সুতরাং কর্মীর বা শ্রমিকের কোনো ঘাটতি নেই। যদি সঠিকভাবে ব্যবস্থা করা যায় তাহলে উৎপাদন বাড়বে এবং জিডিপি বৃদ্ধি পাবে।
অন্যদিকে ইউনিভার্সিটি মালায়ার নাজারি ইসমাইল এফএমএমের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, উৎপাদকদের প্রতিযোগিতামূলক রপ্তানি বাজারে টিকে থাকার জন্য সস্থা শ্রমিক দরকার। ঋণগ্রস্ত উৎপাদকদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা তাদের খরচ কমানোর জন্য বাধ্য করে এবং খরচ কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল সস্তা শ্রম ব্যবহার করা।
নাজারী বলেন, উৎপাদক কোম্পানি যদি ক্রেতার অর্ডার পূরণ করতে না পারে তাহলে দীর্ঘমেয়াদে তাদের (উৎপাদক) সুনামের ক্ষতি হয় এবং রাজস্ব কমে যায়। ফলে বিদেশি ক্রেতারা অন্যদেশ থেকে পণ্য নেবে আর আমাদের (মালয়েশিয়ার) অর্থনীতি আসলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিদেশিকর্মী নিয়োগের বিদ্যমান স্থগিতাদেশ মেয়াদ দীর্ঘ হলে এসএমই খাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কর্মীর অভাবে এসএমই নিয়ে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে সেগুলো অর্জন করা জটিল হবে।
১৮ মার্চ মানবসম্পদ মন্ত্রী শিবকুমার ঘোষণা করেন, সকল আবেদন এবং বিদেশি কর্মীর রিক্রুটিং প্রক্রিয়া পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। নিয়োগকর্তাদের ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৩শ ছিয়ানব্বই জন বিদেশি কর্মীদের আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কেবল নিয়োগকর্তা অনুমোদিত কর্মীদের মালয়েশিয়ায় আনা নিশ্চিত করলে তবেই স্থগিতাদেশ পর্যালোচনা করা হবে।