মালয়েশিয়ায় পাড়ি দিলেন দুই লক্ষাধিক বাংলাদেশি কর্মী। আরও প্রায় ২ লাখ ৬৮ হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন।
শুক্রবার (৭ জুলাই) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মে: গোলাম সারোয়ার।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে বাংলাদেশ হাইকমিশন ৪ লাখ ২৩ হাজার কর্মীর চাহিদাপত্র সত্যায়ন করেছে। চলতি মাসের ৬ জুলাই (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত ১০ হাজার ৭৬৩ টি সত্যায়ন আবেদনের বিপরীতে ৪লখ ২৩ হাজার ৫৬৯ জন কর্মীর চাহিদাপত্র সত্যায়ন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের সকল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিবিড় কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া দ্বি-পাক্ষিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে নতুন কর্মী নিয়োগের বিষয়ে চার বছর পূর্বে জারীকৃত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেন। পরবর্তীতে, ২০২২ সালের ২ জুন ঢাকায় অনুষ্ঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সভায় কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পর দুই দেশের সংশ্লিষ্ট অফিস সমুহে প্রয়োজনীয় নেটওয়ার্কিং হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার স্থাপন পূর্বক ২০২২ সালের আগস্ট থেকে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশি নতুন কর্মী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের আগস্ট থেকে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশি নতুন কর্মী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে বাংলাদেশি কর্মী যাওয়ার গতি কিছুটা কম থাকলেও চলতি বছরের প্রথম থেকেই পুরোদমে কর্মী যাচ্ছে দেশটিতে।
বিজ্ঞপ্তিতে হাইকমিশনার জানান, মালয়েশিয়াতে বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মীর জরুরী চাহিদার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন শুরু থেকে নিবিড় আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র দ্রুতগতিতে সত্যায়ন সম্পন্ন করার চেষ্ঠা করছে এবং বাংলাদেশ হাই কমিশন প্রান্তে সত্যায়নে প্রাপ্ত প্রায় সকল আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তিতে সংশ্লিষ্ট সকল কোম্পানির অনুকূলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের জন্য ই-মেইল প্রেরণ করা হয়েছে।
এছাড়া কোন কোন কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের জন্য হাই কমিশনের পক্ষ হতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছে। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ হাই কমিশনে সত্যায়নের জন্য অপেক্ষমান কোম্পানির চাহিদাপত্রের সত্যায়ন প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও তাদের আইনসংগত প্রতিনিধিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জরুরীভিত্তিতে হাই কমিশনে দাখিল করতে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এবিষয়ে সকল সচেতন মহল এবং সকল অংশীজনের যথাযথ দায়িত্ববোধ, আন্তরিকতা ও সহায়তা প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ হাইকমিশন।
এদিকে ছয়টি খাতে বিদেশী কর্মী নিয়োগে ১১ লাখ ৩৬ হাজার ২২টি কর্মসংস্থান কোটা অনুমোদন করেছে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে উৎপাদন খাতে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ১০৬টি, নির্মাণ খাতে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৯টি, সেবা খাতে ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৯০টি, আবাদে ৮৫ হাজার ৬৭৮টি, কৃষিতে ৪৯ হাজার ৪৭৩টি এবং খনি ও খনন খাতে ৩৭৬টি কোটা অনুমোদন করা হয়েছে।
মোট কোটার মধ্যে ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৫৯০টি বা ৪১ শতাংশ চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ১৮ মার্চের মধ্যে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়। গত ১৬ জুন দেওয়ান রাকায়াতে (জাতীয় সংসদ) প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য লিম লিপ ইঞ্জির (পিএইচ-কেপং) এক প্রশ্নের জবাবে মালয়েশীয় মানবসম্পদ মন্ত্রী ভি শিবকুমার এসব তথ্য জানান।
শিবকুমার বলেন, নিয়োগকর্তাদের মাধ্যমে বিদেশি কর্মীদের প্রবেশ প্রক্রিয়ার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, দেশের স্বার্থ ও খ্যাতি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতে নিয়োগকর্তাদের মাধ্যমে শ্রমের মানদন্ড মেনে চলার দিকেও নজর রাখছে মালয়েশিয়া সরকার।