মালয়শিয়া এম্বাসি বাংলাদেশ থেকে মালয়শিয়া টুরিস্ট ভিসা, ভিসিট ভিসা, বিজনেস ভিসা ফ্যামিলি ভিসা সাপোর্ট দিয়ে থাকে। আপনি যদি প্রথম বারেরর জন্য মালায়শিয়াতে ভিসার জন্য আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে মালায়শিয়া স্টিকার ভিসার জন্য আবেদন করাতে হবে। পরেরবার থেকে আপনি মালায়শিয়া ই- ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
মালায়শিয়া টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনি সিঙ্গেল এন্ট্রি অথবা মাল্টিপল এন্ট্রির জন্য আবেদন করতে পারেন তবে আপনি কোন ধরনের ভিসা পাবেন এটি একমাত্র এম্বাসি নির্ধারণ করবে। সাধারনত প্রথম বার মালয়শিয়াতে সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা হয়ে থাকে।
আজকে মালায়শিয়া স্টিকার ভিসার জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করব।
অথোরিটি এজেন্সির কাছে আপনার ভিসার জন্য যাবতীয় কাগজপত্র এবং ভিসা ফি জমা দিতে হবে। জমা দেয়ার পর ট্রাভেল এজেন্ট আপনার সকল কাগজপত্র ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে এম্বাসিতে জমা দিবে।
ভিসা করার জন্য আপনাকে যে সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে সেগুলো নিয়েই এখন আলোচনা করব
আপনাকে নির্ভুল তথ্য দিয়ে ভিসা এপ্লিকেশন ফর্মটি পুরন করতে হবে এবং ফর্মে নির্ধারিত স্থানে পাসপোর্ট অনুযায়ী সাক্ষর করতে হবে।
নূন্যতম ৬ মাস মেয়েদ সম্পন্ন একটি পাসপোর্ট থাকতে হবে।
অনেক সময় দেখা যায় আপনি যেদিন ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন ঠিক সেদিন থেকে পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাস থাকে ফলে ভিসা পেতে পেতে আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাস থেকে কমে যায়, এমন হলে অনেক সময় এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন সমস্যা করে। সে ক্ষেত্রে আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাস থেকে কিছুদিন বেশি থাকলে খুবই ভালো হয় যেন ভিসা পাওয়ার পরও পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাস থাকে।
পাসপোর্টে অবশ্যই অন্তত দুটি পাতা ফাঁকা থাকতে হবে যাতে করে ভিসা স্টিকার এবং ইমিগ্রেশন ষ্ট্যাম্প ওই পাতাতে দেয়া যায়। সেই সাথে সকল পুরাতন পাসপোর্টও জমা দিতে হবে।
২ কপি ল্যাব প্রিন্ট ছবি (সাইজ হবে ৩.৫সে.মি X ৫.০ সে.মি) জমা দিতে হবে।
ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড হবে সাদা। অন্য ব্যাকগ্রাউন্ড, ছবির সঠিক মাপ এবং ৩ মাসের আগে তোলা ছবি গ্রহনযোগ্য হবে না। আর সতর্কতা অবলম্বনের জন্য ছবির পিছনে আপনার সাক্ষর করে দিতে পারেন।
মালায়শিয়া টুরিস্ট ভিসা পেতে হলে আপনার প্রফেশনের একটি প্রমানপত্র দিতে হবে। সেক্ষেত্রে
আপনি যদি চাকরিজীবী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার এন ও সি (নো অব্জেকশন সার্টিফিকেট), ও ভিজিটিং কার্ড দিতে হবে।
এন ও সি (নো অব্জেকশন সার্টিফিকেট) অবশ্যই অফিসের প্যাডে অফিস কর্তৃপক্ষের সত্যায়িত করা থাকতে হবে এবং আপনার নাম ও পাসপোর্ট নাম্বার এন ও সি তে উল্লেখ করা থাকতে হবে। নো অব্জেকশন সার্টিফিকেটের স্যাম্পল কপি এখান থেকে দেখে নিতে পারবেন।
আপনি যদি ব্যবসায়িক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার নাম স্পষ্ট অক্ষরে আছে এমন ট্রেড লাইসেন্সের কপি এবং ভিজিটিং কার্ড দিতে হবে।
প্রপ্রাইটরশিপ বিজনেস হলে ট্রেড লাইসেন্স, লিমিটেড কম্পানি হলে ট্রেড লাইসেন্সের সাথে মেমরেন্ডাম কপি জমা দিতে হবে যেখানে আপনার নাম স্পষ্ট করে লেখা আছে।
আপনি যদি ডাক্তার হয়ে থাকেন তাহলে বি এম ডি সি (বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল) সার্টিফিকেট অথবা আপনার হাসপাতালের প্যাডে নো অব্জেকশন সার্টিফিকেট এবং ভিজিটিং কার্ড দিতে হবে।
আপনি যদি আইনজীবী হয়ে থাকেন তাহলে বার কাউন্সিল সার্টিফিকেট অথবা আপনার চেম্বারের প্যাডে নো অব্জেকশন সার্টিফিকেট (আপনার নাম ও পাসপোর্ট নাম্বার সহ) এবং ভিজিটিং কার্ড দিতে হবে।
আপনি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনার স্কুল / কলেজ / ইউনিভার্সিটির প্যাডে নো অব্জেকশন সার্টিফিকেট (আপনার নাম ও পাসপোর্ট নাম্বার সহ) অথবা বৈধ আই ডি কার্ডের কপি দিতে হবে।
বি দ্রঃ উপরের কোন ডকুমেন্ট বাংলায় দেয়া যাবে না যদি বাংলায় থাকে তাহলে ইংরেজিতে অনুবাদ করে নোটারি করে জমা দিতে হবে।
ভ্রমণের সক্ষমতা প্রমানের জন্য আপনাকেব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং ব্যাংক সল্ভেন্সি সার্টিফিকেটের মূল কপি জমা দিতে হবে।
ব্যাংক স্টেটমেন্টটি হতে হবে বিগত ৬ মাসের লেনদেনের উপর ভিত্তি করে। এক্ষেত্রে আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট পারসনাল অথবা স্যালারি একাউন্ট ও হতে পারে।
আপনি একা ট্রাভেল করলে আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্টে অবশ্যই ন্যূনতম ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা অবশিষ্ট থাকতে হবে। আর যদি আপনি ফ্যামিলি নিয়ে ট্রাভেল করেন তাহলে প্রতিজনের জন্য ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা করে স্টেটমেন্টে অবশিষ্ট থাকতে হবে।
ভিসা অফিসার, এম্বাসি অফ মালয়শিয়া, ঢাকা বরাবর একটি কভারিং লেটার লিখে জমা দিতে হবে।
কভার লেটারে আপনার নাম, পাসপোর্ট নাম্বার, পেশা, পেশার উপাধি, কবে যেতে চান এবং আপনার ভ্রমণ খরচ কে বহন করবে এইসব কিছু উল্লেখ থাকতে হবে। ফ্যামিলি নিয়ে গেলে সবার নাম ও পাসপোর্ট নাম্বার উল্লেখ করতে হবে।
মালয়শিয়া তে আপনি কোথায় কোন হোটেলে থাকবেন তার একটি বুকিং কপি আপনার ভিসা আবেদনের সাথে দিতে হবে। শুধু বুকিং কপি হলেই হবে কনফার্ম করার প্রয়োজন নেই। যদি আপনার ভিসা হয়ে যায় কেবল তখনি আপনি বুকিং কনফার্ম করতে পারেন। হোটেল বুকিং এর জন্য ট্র্যাভেল এজেন্টের সহযোগিতাও নিতে পারেন।
ঢাকা মালয়শিয়া ঢাকা রিটার্ন এয়ার টিকেটের বুকিং কপি আপনার ভিসা আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। ভিসা হয়ে যাবার পর টিকিটটি কনফার্ম করে ফেলতে পারেন। এক্ষেত্রেও আপনি ট্র্যাভেল এজেন্টের সহযোগিতা নিতে পারেন।
আপনার মূল ন্যাশনাল আই ডি কার্ডের ফটোকপি আবেদনপত্রের সাথে জমা দিতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে আপনার পাসপোর্টে দেয়া তথ্যের সাথে আই ডি কার্ডে দেয়া তথ্যের হুবুহু মিল থাকে।
এই ছিল মালয়শিয়া টুরিস্ট ভিসার আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের লিস্ট, আপনি যদি ফ্যামিলি নিয়ে যেতে চান তাহলে আপনার কাগজপত্রের সাথে আপনার ফ্যামিলি মেম্বারদের যেসকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে সেগুলো নিন্মরূপ
১. সবার পাসপোর্ট এবং ২ কপি ছবি (সাইজ হবে ৩.৫সে.মি X ৫.০ সে.মি)
২. স্ত্রীর জন্য মেরিজ সার্টিফিকেট (যদি পাসপোর্টে আপনার নাম উল্লেখ না থাকে)
৩. সন্তানের জন্য জন্মসনদ অথবা এন এই ডি কার্ডের ফটোকপি।
বি দ্রঃ কোন ডকুমেন্ট বাংলায় থাকলে অবশ্যই ইংরেজিতে ট্রান্সলেট করে নোটারি করে জমা দিতে হবে।
।ভিসা ফি | ভিসার মেয়াদ | কতদিন থাকা যাবে |
৫৮০০ টাকা সিঙ্গেল এন্ট্রি | ৩ মাস | ৩০ দিন |
৫৮০০ টাকা মাল্টিপল এন্ট্রি | ৩-৬ মাস | ৩০-৯০ দিন |
ট্রাভেল এজেন্ট সার্ভিস চার্জ এর সাথে যুক্ত হবে।
বি দ্রঃ ভিসা প্রসেসের জন্য প্রদত্ত যেকোনো ডকুমেন্টস ভূয়া অথবা জাল প্রমাণিত হলে, আপনার ভিসার আবেদনটি নিশ্চিতভাবে প্রত্যাখ্যান হবে, এমনকি আপনি উক্ত এম্বাসির কালো তালিকাভুক্ত হতে পারেন। এবং ইহা আইনতঃ দন্ডনীয় অপরাধ। সুতরাং, এধরনের অভিপ্রায় থেকে বিরত থাকুন।
আপনার ট্রাভেল এজেন্সি যেদিন আপনার ভিসার ফাইলটি জমা দিবেন সেদিন থেকে আপনার ভিসা প্রসেসিং এ সময় লাগবে ৭ থেকে ১০ কর্মদিবস।
কোন কারনে ভিসা না হলে ভিসা ফি ফেরতযোগ্য নয়। এজন্য দেখে শুনে বুঝে আপনার ট্রাভেল এজেন্সি পছন্দ করবেন।
মালয়শিয়া ভিসা এম্বাসি
ঠিকানাঃ হাউজ নং- ১৯, রোড নং-৬, বারিধারা, গুলশান, ধাকা-১২১২
ফোনঃ +৮৮০২৯৮৪৭৭৬০, (০০৮৮) ০২৯৮৪৭৭৫৯
ইমেইলঃ [email protected] / [email protected] (Visa Section)
সাপ্তাহিক ছুটিঃ শুক্র ও শনিবার
কর্ম ঘ্নটাঃ সকাল ৮:৩০ হতে বিকাল ৪:৩০ পর্যন্ত