গ্রীষ্মকাল মানেই আমেরিকা আর ইউরোপে ভ্রমণের মৌসুম। বলা যায়, এই সময়ে দুই অঞ্চলে চলে ভ্রমণ উৎসব। তবে এ বছরের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। ইরান-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে খানিকটা ভাটা পড়েছে পর্যটনশিল্পে। এর সঙ্গে রয়েছে নিরাপত্তার অভাব, বিশেষ করে মার্কিন নাগরিকদের। এ জন্য সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ‘বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা সতর্কতা’ জারি করেছে। এই সতর্কতায় মার্কিন নাগরিকদের বলা হয়েছে, বিশ্বের যেকোনো জায়গায় তারা এখন নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এর মধ্যে রয়েছে সম্ভাব্য মার্কিনবিরোধী বিক্ষোভ, নাগরিক গোলযোগ ও আকস্মিকভাবে আকাশপথ বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি।
এই সতর্কতা অনেকের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করলেও অধিকাংশ মার্কিন নাগরিক তাঁদের ভ্রমণ পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনছেন না। অনেকে মনে করছেন, অতিরিক্ত ভীতিকর বার্তার মধ্যে পড়লে নিজের স্বাধীনতা থাকে না। মার্কিন কমেডিয়ান ড্যান নাইনান বলেছেন, ‘বিশ্বযুদ্ধ না হলে আমার ভ্রমণ পরিকল্পনায় পরিবর্তনের প্রশ্নই আসে না।’
তবে যাঁরা পরিবার বা শিশুদের নিয়ে ভ্রমণ করেন, তাঁরা বেশি সতর্ক হচ্ছেন। নিউইয়র্কের ভেনেসা গর্ডন ইউরোপ সফর বাতিল করে সন্তানদের ঘরোয়া গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ বিদেশের পরিবর্তে কানাডা কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে এবারের ভ্রমণ পরিকল্পনা করছেন।
অন্যদিকে, বিভিন্ন দেশ ও পর্যটন গন্তব্য মার্কিন পর্যটকদের আশ্বস্ত করতে নতুন প্রচার চালাচ্ছে। কানাডা নিজেদের নিরাপদ গন্তব্য, অনুকূল আবহাওয়া ও সহজ যোগাযোগের বিষয়গুলো সামনে এনে মার্কিন পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে। মেক্সিকো মানসিক প্রশান্তির বার্তা দিয়ে প্যাকেজ চালু করেছে। যদিও দেশটিতে বরাবরই মার্কিন পর্যটকদের ভিড় থাকে। নিউজিল্যান্ড ও তাসমানিয়া নিজেদের প্রথম সারির নিরাপত্তা তালিকার দেশ হিসেবে তুলে ধরে মার্কিন পর্যটকদের স্বাগত জানাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সতর্ক হওয়া জরুরি, তবে আতঙ্কিত হয়ে সব পরিকল্পনা বাতিল করার প্রয়োজন নেই। সঠিক তথ্য, বাস্তব পরিস্থিতির মূল্যায়ন এবং সচেতন সিদ্ধান্ত নিয়ে ভ্রমণের পরিকল্পনা সাজাতে পরামর্শ দেওয়া হয়।
সূত্র: বিবিসি