অনেক দিন বন্ধুরা মিলে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হচ্ছিলো না। তাই হঠাৎ সেদিন আমাদের আড্ডায় এক বন্ধু বলে উঠলো চল আমরা কোথাও ঘুরতে যাই। অনেকদিন কোথাও যাওয়া হচ্ছে না। আর সেই দায়িত্বটাও আমাকে দেওয়া হলো। বলল তুই জায়গা ঠিক করে সবাইকে জানিয়ে দিস। আমিও দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে মহামায়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। মহামায়াতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই মূলত পাহাড় এবং লেকের অপরূপ সংমিশ্রণ দেখার জন্য।
মহামায়া একটি কৃত্রিম লেক। এটি চট্টগ্রামের মিরাসরাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম কৃত্রিম লেক। পাহাড়ের কোলে ১১ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে মহামায়া লেক গড়ে উঠেছে।
বোটে করে লেক ঘুরার পাশাপাশি চাইলে ঝর্ণার হিম শীতল পানিতে ভিজে শরীর ও মনকে প্রশান্তি দেওয়া যাবে। পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণার জলধারা আর লেক মিশে একাকার। এ এক অনবদ্য সুন্দর দৃশ্য।
কায়াকিং এর মজার অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য হলেও একবার মহামায়ায় যাওয়া উচিত। কায়াকিং এর জন্য দারুণ একটি জায়গা। লেকের বুকে কায়াকিং এবং একই সঙ্গে চারপাশে সবুজ পাহাড়ের সমারোহ এক অন্যরকম অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে মনে। ঘণ্টা প্রতি কায়াকিং ৪৫০ করে। মহামায়া ভ্রমণে কায়াকিং যোগ করবে ভিন্নমাত্রার একটি অভিজ্ঞতা।
বন্ধুবান্ধব, পরিবার কিংবা প্রিয়জন নিয়ে ঘুরতে আসার মত অসাধারণ একটি জায়গা। মহামায়ার চারপাশের সবুজ পরিবেশ যে কাউকে আকৃষ্ট করবে। এখানে চাইলে নিজেরা রান্না করে পিকনিক করা যায়। তার জন্য রয়েছে বিশাল একটি মাঠ এবং বাচ্চাদের খেলার ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে মহামায়ার পরিবেশ যে কাউকে মুগ্ধ করবে।
এছাড়া চাঁদের আলোয় লেক এবং পাহাড়ের সৌন্দর্য যে কাউকে আকৃষ্ট করবে। রাতের নিস্তব্ধতায় পানির ওপর চাঁদের প্রতিবিম্ব এ যেন এক স্বপ্নময় দৃশ্য। এইরকম দৃশ্য যে কারো ভাল লাগবে। মাঝেমধ্যে ঝিঁঝিঁপোকার ডাক আর হালকা বাতাসে যখন পানি ঢেউ খেলে যায়, এই আলো ছায়ার খেলার এক অদ্ভুত বন্ধন লেককে আরও মোহনীয় করে তোলে। এমন একটি চাঁদের আলোয় কে না চায় লেকের ধারে বসে প্রকৃতি উপভোগ করতে? তাদের জন্য আছে মহামায়াতে ক্যাম্পিং ব্যবস্থা।
চট্টগ্রাম থেকে মহামায়াতে যেতে হলে প্রথমে আপনাকে আসতে হবে একে খান বাসস্ট্যান্ডে। একে খান থেকে বাসে করে ঠাকুরদীঘি বাজার নামতে হবে। বাজার থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের কোল ঘেঁষা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেকটি গড়ে উঠেছে। ঠাকুরদীঘি বাজার থেকে ট্যাক্সি কিংবা মিনিট দশেক হেঁটে গেলে মহামায়া লেক এবং মহামায়া ইকোপার্ক।
লেখক:সাফিনাতুন জাহান সাবরিন