শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৫০ পূর্বাহ্ন

মরুর বুকে জলের নাচন

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আরব দেশ নিয়ে ভাবলে মনে হয় শুধু মরুভূমির কথা। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবি ও বাণিজ্যিক শহর দুবাই গেলে বোঝার উপায় নেই এটি কোনো আরব দেশ।

বিলাসবহুল জীবনযাপন, চোখ ধাঁধানো রঙিন আলোকরশ্মি, আকাশচুম্বি অট্টালিকা, বিলাসবহুল হোটেল, কৃত্রিম দ্বীপপুঞ্জসহ অনেককিছু রয়েছে। এখানে উঁচু উঁচু দালানের প্রতিযোগিতা দিন দিন বেড়েই চলছে। যতই দেখবেন মনে হবে একটা থেকে আরেকটা উঁচু ও সুন্দর। দেখার স্বাদ আর মিটবে না।

তবে কালের বিবর্তনে হাজারো পরিবর্তন এলেও মরুর বুকে মরিচিকার সেই রূপ এখনও স্বাভাবিক রয়েছে। শহরের বাইরে গেলেই দেখা মিলে ভিন্নতা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের সব আমিরাতে রয়েছে নানা আকর্ষণীয় স্থাপনা বা পর্যটনকেন্দ্র। শহরের ইট পাথরের যান্ত্রিক জীবন থেকে কোলাহলমুক্ত পরিবেশে যেতে কার না ভালো লাগে। তাইতো আমরা ঘুরে বেড়াই শহর থেকে দূরে আরবের বিভিন্ন পথে প্রান্তরে। এবার গন্তব্য নির্ধারণ করলাম ফুজিরাহ।

দুবাইয়ের সীমানা অতিক্রমের পরই দেখা যায় ডানে-বাঁয়ে বড় বড় পাথরের পাহাড়। কিছুক্ষণ পরপরই দেখা যায় ভ্রাম্যমান ফলের দোকান। ব্যবসায়ীরা মাইক্রোবাসের পেছনের অংশে ফল দিয়ে সাজিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন সড়কের পাশে খালি জায়গায়। সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী অনেকেই তাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে যান ফল।

গাড়ি ছুটে চলছে দ্রুত গতিতে। যতই দেখি শুধু পাহাড় আর পাহাড়। এ এলাকাটি যেন পাথর পাহাড়ের রাজ্য। কিছুক্ষণ যাওয়ার দেখা যায় পাথর পাহাড়ের বুক কেটে তৈরি করা হয়েছে টানেল। অনেক লম্বা টানেলের ভেতর দিয়ে গাড়ি চলাচল করা অনেক ভালো লাগলো। পর পর ৬টি টানেল পেরিয়ে গেলাম। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথ বেয়ে গিয়ে পৌঁছলাম খোর ফাক্কান। সমুদ্র উপকূলীয় শহর খোর ফাক্কানের পরিবেশটাই যেন অন্যরকম।

প্রথমে গেলাম আল রাবি টাওয়ারে। অনেক উচ্চতায় রাবি টাওয়ারের চূড়ায় উঠে কিছু চিত্র ধারণ করে চলে গেলাম একটা জলপ্রপাতের সন্ধানে। সাগরের পাশে সড়কে চলতে চলতে খুব মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। পোঁছালাম জলপ্রপাতের কাছে। সড়কের এক পাশে বিশাল সাগর, অপর পাশে পাহাড়ের বুকে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম জলপ্রপাত। পাহাড়ের চূড়া থেকে নেমে এসেছে সাদা জলের ধারা। জলের বিচিত্র শব্দ যেন সবাইকে কাছে টানে। বিস্ময়কর এক অনুভূতির শিহরণ জাগে জলপ্রপাতের সামনে দাঁড়ালে। শরীর ও মনের ক্লান্তি নিমিষে দূর করে দেয় জলপ্রপাতের সৌন্দর্য।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৩ মিটার উচ্চতার এ কৃত্রিম জলপ্রপাতটি দেখতে পর্যটকদের বেশ ভিড় ছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পর্যটকরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য না করে তাই সেখানে পুলিশের উপস্থিতি ছিল। পুলিশ এক সাথে ৮/৯ জন করে জলপ্রপাতের সামনে গিয়ে ছবি তোলার সুযোগ দিয়ে বাকিদের পাশে অপেক্ষা করতে বলেন। তাদের ছবি তোলা শেষ হলে অন্যদের যেতে দেন। জলপ্রপাত ও সাগরের পারে প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় কাটানোর পর এলাকার ভাইয়ের আমন্ত্রণে গেলাম ফুজিরাহ। সেখানে নৈশভোজ শেষে ফের ফিরে এলাম দুবাই শহরে।

মতিউর রহমান মুন্না, সংযুক্ত আরব আমিরাত 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com