জেপি মর্গান সিইও জেমি ডায়মন্ড হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানিয়েছেন, অ্যামেরিকার অর্থনীতি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং মন্দার দিকে ধাবিত হচ্ছে।
অ্যামেরিকার অর্থনীতি ক্রমশ দুর্বল হয়ে মন্দার দিকে যাচ্ছে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন জেপি মরগান সিইও জেমি ডায়মন্ড।
সিএনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মঙ্গলবার তিনি বলেন, যেসব তথ্য-উপাত্ত উঠে আসছে, তাতে দেশের সার্বিক অর্থনীতির অবস্থা ভঙ্গুর দেখা যাচ্ছে।
অন্যদিকে ইউএস ইকোনোমিক রিসার্চ অ্যাট রেনেইসান্স ম্যাক্রো রিসার্চের প্রধান নেইল দত্ত সতর্ক করেছেন, মন্দার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে দেশ। এর মাঝেই ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বার্ষিক কর্মসংস্থানের রিপোর্টে বড় ধরনের সংশোধন করেছে বিএলএস।
দাবি করা হচ্ছে ওই এক বছরে প্রকাশ হওয়া প্রতিবেদনের চেয়ে প্রকৃতপক্ষে ৯ লাখ ১১ হাজার কম চাকরি তৈরি হয়েছে। এর ফলে কর্মসংস্থানের বাজার অত্যন্ত নাজুক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জুলাইয়ে ৭৯ হাজার কর্মসংস্থানের প্রতিবেদন দেখে তৎকালীন ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিস্টিক্স বা বিএলএস কমিশনার এরিকা ম্যাক এন্টারফারকে বরখাস্ত করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। আগস্টে মাত্র ২২ হাজার কর্মসংস্থান দেখে ট্রাম্পের ক্ষোভের কোনো সীমা ছিল না।
এবার বিএলএসের বার্ষিক কর্মসংস্থানের রিপোর্টে যে বিশাল সংশোধনী আনা হয়েছে, তা দেখে রীতিমতো বাকরুদ্ধ হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকছে না প্রেসিডেন্টের সামনে। কারণ ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত বার্ষিক কর্মসংস্থানের রিপোর্টে প্রায় মিলিয়নের মতো চাকরি যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। বলা হচ্ছে ওই এক বছরে প্রকাশ হওয়া প্রতিবেদনের চেয়ে প্রকৃতপক্ষে ৯১ হাজার কম চাকরি তৈরি হয়েছে।
এত বিশাল সংশোধনী ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
দ্যা আটলান্টিক তো এরই মধ্যে দেশের কর্মসংস্থানের বাজারকে জাহান্নামের সঙ্গে তুলনা করেছে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, না কোনো নতুন নিয়োগ আছে, না বরখাস্ত। সবকিছু যেন থমকে আছে। এমন নয় যে, দেউলিয়া ঘোষণার হারও অনেক ব্যাপক।
টানা তৃতীয় মাসের মতো নতুন চাকরি তৈরি নিয়ে অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। দেশের কর্মসংস্থানের বাজারে মন্দা অব্যাহত। বেকারত্বের হার চার দশমিক তিন শতাংশ, যা গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এসব সূচক দেখে জেপি মর্গান সিইও জেমি ডায়মন্ড হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানিয়েছেন, অ্যামেরিকার অর্থনীতি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং মন্দার দিকে ধাবিত হচ্ছে।
সিএনবিসির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যেসব তথ্য-উপাত্ত উঠে আসছে, তাতে দেশের সার্বিক অর্থনীতির অবস্থা ভঙ্গুর দেখা যাচ্ছে।
ভোক্তা থেকে শুরু করে পুঁজিবাজার, কোথাও স্বস্তি দেখা যাচ্ছে না বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
অন্যদিকে রেনেসাঁস ম্যাক্রো রিসার্চের ইউএস ইকোনোমিক রিসার্চের প্রধান নেইল দত্ত সতর্ক করেছেন, মন্দার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে দেশ।
চলতি বছর শুল্কনীতিতে মূল্যস্ফীতির আশঙ্কায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক যথাযথ উদ্যোগ নিতে পারেনি বলেই মনে করেন তিনি। এ কারণে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে সামগ্রিক অর্থনীতি।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট অবশ্য অর্থনৈতিক দুর্দশার পুরো দায় চাপিয়েছেন বাইডেন প্রশাসনের ওপর।
তার মতে, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও সুদের হার কমাচ্ছেন না ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েল, যা দেশের অর্থনৈতিক দুর্দশা আরও ত্বরান্বিত করছে।