যদিও আজকাল অ্যারেঞ্জন্ড ম্যারেজের থেকে লাভ ম্যারেজের সংখ্যাই বেশি। তবুও বিয়ে অ্যারেঞ্জন্ড হোক বা লাভ, অন্য সব সম্পর্কের থেকে এটি সম্পূর্ণ আলাদা একটা সম্পর্ক। এই সম্পর্কের ভিত্তি অনেক জোরালো হওয়া চাই। অন্য সবাইকে ছাপিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বোঝাপড়া টা হতে হবে সবার আগে। একে অন্যকে বুঝতে, একে অন্যের পছন্দ-অপছন্দ, পরিকল্পনা সব কিছু জানতেই সময় লাগে অনেকটা। আর এই বোঝাপড়াটা ভালোভাবে করতে হলে একে অন্যকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। সবার মাঝে থেকে এই সময় দেয়া সম্ভব হয়না, কারণ তখন বাড়ির সব দিকে নজর রাখতে হবে, অংশগ্রহণ করতে হবে নব-দম্পতিকে। আর স্বভাবতই সকলে নতুন বউ নিয়ে অনেক মেতে থাকে তাই দেখা যায় আলাদাভাবে একান্তে কথা বলার সময় পায়না বেচারা নব দম্পতি। তাইতো বিয়ের পরে হানিমুনে যাওয়া নব-দম্পতির একান্ত জরুরী।
স্বামী-স্ত্রী বিয়ের পর পর দুজনে মিলে কয়েকদিনের জন্য ঘুরতে যাওয়াকে হানিমুন বা মধুচন্দ্রিমা বলে। বিয়ের আগে ও বিয়ের সময় বর-বউএর উপড়ে অনেক ধকল যায়। এছাড়া নতুন জীবনে পা দেয়ার একটা উত্তেজনাও কাজ করে। সব কিছুর পরে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে মধুচন্দ্রিমা পালনের বিকল্প নেই। আর বেড়াতে গিয়ে একে অন্যকে সবটুকু সময় দিতে পারবে। একে অন্যকে জানতে পারবে। দুজনে কথা বলে তাঁদের সামনের চলার পথ সহজ করতে পারবে। এতে করে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটাও অনেক গভীর হবে। মোটামুটি এক সপ্তাহ হাতে নিয়ে ঘুরতে চলে যান প্রিয় মানুষটির সাথে একান্তে কিছু সময় কাটানোর জন্য।
বাংলাদেশে ঘুরতে যাওয়ার মত অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে। হানিমুন মানেই যে বিদেশে পারি জমাতে হবে তা কিন্তু নয়। অনেকেই মনে করে যেসব জায়গায় আগে গিয়েছি সেখানে হানিমুন করতে কেন যাবো? কিন্তু আপনি সেই একই জায়গায় যতবারই যান না কেন, বিয়ের পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে সে জায়গায় গেলে তা আবার নতুন করে আপনাদের চোখে ধরা দিবে। কোথায় যাচ্ছি এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং কিভাবে সময়টা কাটাচ্ছি এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
সমুদ্র সবারই পছন্দ। আর হানিমুনের জন্য সমুদ্রের বিকল্প নেই। কক্সবাজার বা কুয়াকাটায় সমুদ্রের ধারে হাতে হাত রেখে হেঁটে চলুন প্রিয়জনের সাথে। একসাথে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখুন। আর পাহাড় পছন্দ হলে যেতে পারেন বান্দরবান, খাগড়াছড়ি। সঙ্গী কিছুটা এডভেঞ্চারাস হলে বগা লেক বা সাজেকের সৌন্দর্য দেখে আসুন একসাথে। আবার চাইলে সিলেটও ঘুরে আসতে পারেন। বর্তমানে বাংলাদেশে এমন অনেক রিসোর্ট হয়েছে, যেগুলোতে গেলে আর আলাদা করে কোথাও বেড়াতে যেতে হয়না। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হোলো,
১। মারমেইড বিচ রিসোর্ট, কক্সবাজার
২। রয়্যাল টিউলিপ সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, কক্সবাজার
৩। দা প্যালেস রিসোর্ট, সিলেট
৪। গ্রান্ড সুলতান রিসোর্ট, সিলেট
এগুলোতে গেলে আপনি পাবেন মনমুগ্ধকর পরিবেশ, সৌন্দর্য আর লাক্সারি।
হানিমুনে গিয়ে প্রিয়জনকে চমকে দেয়ার মত কিছু করুন। আগে থেকেই কোনো প্ল্যান করে রাখতে পারেন রিসোর্ট কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে। হতে পারে একটা সুন্দর ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের আয়োজন করলেন। আবার আপনাদের ঘরটা ঠিক বাসর ঘরের মত সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজালেন। প্রিয়জনকে কোন বিশেষ উপহার দিতে ভূলবেন না হানিমুনে গিয়ে। সব থেকে বেশি যা জরুরি তা হোলো একে অন্যকে জানুন। অন্যের কথা শুনুন। আপনি কি চান তা জানান। এতে করে সংসার জীবনে পা দেয়া ও সংসার চালিয়ে নেয়া হবে সুখকর ও আনন্দময়।