তারিখ ঠিক হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি। তবে শেষ এক মাসের ধকল যেন আর নেওয়া যায় না। অনেক দিন ভালোবেসে বিয়ে করছেন, এমন অনেক দম্পতিকেও দেখেছি, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার চাপে একসময় কাহিল হয়ে পড়েন। উপভোগ তো দূরের কথা, কোনোমতে বিয়েটা শেষ করতে পারলেই যেন বাঁচেন। আর যাঁদের ‘অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ’, তাঁদের অবস্থাটা তাহলে বুঝুন।
শুরুটা কী খুব বেশি নেতিবাচক হয়ে গেল? বিয়ের আলোকসজ্জা, সাজগোজ আর হইহুল্লোড়ের পেছনে থাকে এক ক্লান্তিকর যাত্রা। আয়োজন ছোট হোক বা বড়, বর–কনের ওপর চাপ পড়েই। বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমার আবির্ভাব তাই আশীর্বাদের মতো। চারপাশের জাঁকজমকের কারণে একসঙ্গে সময় কাটাতে পারেন না বর-কনে। বিয়ের পর কয়েকটা দিন পরস্পরের সঙ্গে একান্তে কাটানোটা তাই খুব জরুরি। ঘুরতে গেলে তো মন এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। সুন্দর পরিবেশে এই সুযোগ করে দেয় মধুচন্দ্রিমা। আশপাশের চাপ থাকে না। সময়টা পুরোপুরি বিনিয়োগ করা যায় একে ওপরের উপর।
বর্ণিল বিয়ের এই প্রতিবেদনের ছবি তোলার জন্য আমাদের সঙ্গে মালদ্বীপে গিয়েছিলেন অভিনয়শিল্পী দম্পতি মুমতাহিনা টয়া ও সৈয়দ শাওন। করোনার ঠিক আগমুহূর্তে ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পর দুদিনের জন্য সিলেটে চলে গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু টয়ার ভাষায়, ‘ওটাকে ছোট্ট হানিমুন বলতে পারেন। আমাদের সলিড হানিমুন এখনো হয়নি।’ অর্থাৎ মধুচন্দ্রিমা হিসেবে এখনো কোনো ভ্রমণে বের হয়ে পড়তে পারেননি। কেন যেতে পারেননি, সেটা মজা করতে করতে জানালেন টয়া, ‘একেকবার একেক জায়গায় যেতে ইচ্ছা করে, ফ্রান্স, লন্ডন, আমেরিকা। মালদ্বীপও তালিকায় ছিল। সেটা তো এই ছবি তোলার কারণে ঘোরা হয়েই গেল। চার বছর পরপর আমাদের বিয়ের তারিখটি আসবে। আমরা অবশ্য ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ থেকে শুরু করে ১ মার্চ পর্যন্ত উদ্যাপন করি। এবার হয়তো আমরা দেশের বাইরে কোথাও যাব, সেটাকেই হানিমুন ট্রিপ বলব।’
সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, এ বছরই যাবেন। সেই অনুযায়ী পরিকল্পনাও শুরু করেছেন। শুরু থেকেই এই দম্পতির ভাবনায় ছিল মধুচন্দ্রিমায় দেশের বাইরে যাবেন। চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে এই দম্পতির সংক্ষিপ্ত তালিকায় এখন আছে থাইল্যান্ড, দুবাই অথবা তুরস্ক।
এমন অনেক দম্পতি, ২০১৯, ২০২০, ২০২১ বা ২০২২ সালে যাঁদের বিয়ে হয়েছে, কথা বলতে গিয়ে জানতে পারলাম, তাঁদের অনেকেই করোনার বাস্তবতায় এখনো মধুচন্দ্রিমায় যেতে পারেননি। অপেক্ষায় আছেন খুব শিগগির পাড়ি জমাবেন নিজেদের পছন্দের জায়গাটিতে।
মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনাটি গুছিয়ে করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনে বিয়ের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিন। যদি দেশের বাইরে যেতে চান, আগে থেকে প্রস্তুতি নিলে টিকিটের দামও কম পড়বে। থাকার জন্য ভালো জায়গা পাবেন। ভিসার জন্যও সময় পাবেন।
বিয়ের পরের এই ভ্রমণটাই হলো জীবনসঙ্গীকে চিনে নেওয়ার যথার্থ সময়। তাই প্রস্তুতিতে যদি তাড়াহুড়ো থাকে, তাহলে সেটার প্রভাব মধুচন্দ্রিমাতেও পড়বে। তবে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তেও মধুচন্দ্রিমায় বেরিয়ে পড়া যায়। সেটা অবশ্য কিছুটা ক্লান্তিকর হয়ে পড়তে পারে।
সাদিয়া আনজুম আর সায়জুস সালেহিন দম্পতির মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনাটি যেমন হঠাৎ সিদ্ধান্তে করা। ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছে, পরদিনই উপস্থিত সব বন্ধু ঘুরতে চলে যান আলিকদম। বিয়ের পরদিন সকালে তাঁরাও সিদ্ধান্ত নেন, বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দেবেন। তবে এই ভ্রমণের জন্য একদমই প্রস্তুত ছিলেন না সাদিয়া, ‘আমাদের কোনো পরিকল্পনাই ছিল না। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে ক্লান্ত ছিলাম অনেক। ঘুমহীন কাটাতে হয়েছে অনেক রাত। পরদিন সকালে আমার স্বামীর অনুরোধে আমিও রাজি হলাম। অভিজ্ঞতাটি শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চকর হলেও খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম।’ দুই রাত, তিন দিন ছিলেন তাঁরা। বিয়ের পরদিনই পাহাড়ে পাহাড়ে হেঁটে বেড়িয়েছেন। উঠেছেন মারাংথন পাহাড়ের চূড়ায়। খাবার ছিল কাপ নুডলস, চানাচুর আর চিপস। সব মিলিয়ে বন্ধুদের নিয়ে ভিন্ন আমেজের এক মধুচন্দ্রিমা উপভোগ করেছেন এই দম্পতি।
বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর দুই-তিন দিনের একটি ব্যবধান রেখে মধুচন্দ্রিমার সময় নির্ধারণ করলে ভালো। এতে করে নিজেরা কিছুটা গুছিয়ে নেওয়া যায়। সবচেয়ে ভালো হয়, মধুচন্দ্রিমার পোশাক ও প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গগুলো আলাদা করে আগেই যদি বাক্সবন্দী করে রাখা যায়। বিয়ের পর ফিরানি, দাওয়াত, শ্বশুরবাড়ির নানা সামাজিকতায় সময় যে কিভাবে চলে যাবে, টেরই পাওয়া যাবে না।
বলে রাখা ভালো, নতুন দম্পতিদের পরস্পরের কাছে একধরনের প্রত্যাশা থাকে। দুজনেই নিজেদের মতো করে প্রকাশ করতে চান নিজেকে। ‘বিয়ের সময়ে, মধুচন্দ্রিমায় যাওয়ার আগে বা পরে ছোটখাটো অনেক বিষয় নিয়ে নতুন দম্পতির মধ্যে দ্বন্দ্ব হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়,’ জানালেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মেখলা সরকার। একজনের হয়তো ওয়াশরুমে সময় লাগে বেশি, আরেকজনের কম।
একজন পানি ছিটাবেন কমোডে, আরেকজনের সেটা একদমই পছন্দ না। এমন ছোটখাটো বিষয়গুলো জেনে নেওয়ার জন্যই মধুচন্দ্রিমাটা গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কারণে একজন রেগে গেলে, আরেকজন চুপ থাকুন। পরে কখনো সুবিধা মতো নিজের খারাপ লাগাটা বুঝিয়ে বললেই হবে। দুজনের ভালো-খারাপ দিকগুলো সার্বিকভাবে গ্রহণ করতে হবে।
সাগরের পাড় ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় নীল পানিতে নিজেদের ক্লান্তিকেও যেন ধুয়ে নেওয়া যায়। পুরো জীবন একসঙ্গে পার করে দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি হাজার মানুষের ভিড়ে নেওয়া হয়েছে, আরেকবার সেগুলো যেন নিজেদের মধ্যে ঝালিয়ে নেওয়া যায়। একটু আরাম করার জন্য যে কয় দিন দরকার, মধুচন্দ্রিমা হোক সে কয় দিনেরই। আরাম করা, একে অপরকে সময় দেওয়া—অনেকটাই যেন বাধ্যতামূলক কাজ এই সময়। তিন–চার দিনের এই বিশেষ সময়টা নানা জায়গায় ছোটাছুটি করে নষ্ট না করাই ভালো। ছবি তোলার ক্ষেত্রেও একই কথা। হানিমুনে গিয়ে ছবি তোলাটাই যেন মুখ্য না হয়ে যায়। এতে আরও ক্লান্ত হয়ে পড়বেন।
তবে এমন অনেক দম্পতির সঙ্গেও কথা হয়েছে, যাঁরা ঘুরতে ভালোবাসেন এবং মধুচন্দ্রিমার সময়েও ঘুরে বেড়িয়েছেন। সাদিয়া নুসরাত সিদ্দিকা–সালমান তাসিন হক দম্পতি এবং নুসরাত আহমেদ–সজীব আহমেদ দম্পতি বিয়ের আগে থেকেই ঘুরতে পছন্দ করেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই যখন ঘুরতে পছন্দ করেন, তখন অনেকটাই সহজ হয়ে যায় ভ্রমণ।
নানা কারণে এক মাস ধরে চলেছিল নুসরাত ও সালমানের বিয়ের আয়োজন। ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি শেষ হয় বিয়ের অনুষ্ঠান। এরপর মার্চ মাসে তাঁরা মধুচন্দ্রিমায় বেরিয়ে পড়েন। এই দম্পতি জানালেন, ‘কোভিডের কারণে ট্যুরিস্ট ভিসা পেতেও ঝামেলা হচ্ছিল। অনেক দেরি করে ফেললে আবার মধুচন্দ্রিমায় আর যাওয়া হয়ে ওঠে না। তাই ভিসার ঝামেলা নেই, টিকিট কাটলেই প্লেনে উঠে পড়া যাবে, এমন দেশের দিকেই তাকালাম। ২১ দিনের ভ্রমণ ছিল আমাদের মধুচন্দ্রিমায়। মালদ্বীপে ছিলাম প্রথম ৫ দিন। সেখানে আরাম করে, পুরোপুরি সতেজ হয়ে শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়ি। শ্রীলঙ্কায় অনেক ঘুরেছি। মালদ্বীপে ঘুরে বেড়ানোর মতো কিছু নেই। ওপরে অসম্ভব সুন্দর আকাশ আর নিচে অ্যাকুয়া গ্রিন পানি। পুরো মালদ্বীপ সাজানো যেন নতুন দম্পতিদের জন্য।’ মালদ্বীপ থেকে শ্রীলঙ্কায় এসে আরও বেশি মজা পেয়েছিলেন এই দম্পতি। কারণ, এই ভ্রমণ ছিল রোমাঞ্চকর। ঘুরেছেন ইচ্ছেমতো। সার্ফিং, স্কুবা ডাইভিং,জঙ্গলের মধ্যে হেঁটে বেড়ানো—কত কী যে করেছেন।
এই দুই বিষয় অনেকটাই একে অপরের পরিপূরক। যাঁরা ছবি তুলতে পছন্দ করেন, পোশাকের দিকে একটু বেশি মনোনিবেশ করেন। সমুদ্রের পাশে গেলে একধরনের পোশাক, পাহাড়ে আরেক রকম। পাশাপাশি যে দেশে যাচ্ছেন, সেখানকার আবহাওয়ার বিষয়টিও আছে। সাদিয়া নুসরাত সিদ্দিকা যেমন বলছিলেন, ‘আমাদের ভ্রমণে পাহাড়, সমুদ্র সবই ছিল। আবার শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অস্থিরতার বিষয়টিও ছিল। এ কারণে একদিকে ছবি তোলার জন্য কয়েকটি পোশাক যেমন বাছাই করতে হয়েছে, আবার স্যুটকেসটি হালকাও রাখতে হয়েছে। সালমান ছবি তুলতে পছন্দ করে। সে আমাকে কিছু জায়গার কথা আগে থেকেই বলে রেখেছিল। সমুদ্রের জন্য বিচওয়্যার যেমন ছিল, তেমনি হাইকিংয়ের জন্য বিশেষ জুতা, প্যান্ট, টি-শার্টও নিতে হয়েছিল। কাপড় গোছগাছ করার সময় ৫০ শতাংশ ছিল পরিকল্পনা অনুযায়ী বেছে নেওয়া আর ৫০ শতাংশ এলোমেলোভাবে তুলে নেওয়া।’
সাদিয়া আনজুম আর সায়জুস সালেহিন দম্পতি দ্বিতীয়বার মধুচন্দ্রিমায় গিয়েছিলেন সিলেটে। শ্রীমঙ্গলের এই ভ্রমণ ছিল সাদিয়া আনজুমের পক্ষ থেকে স্বামী সায়জুসের জন্য জন্মদিনের উপহার । লুকিয়ে সব আয়োজন করেছেন সাদিয়া। সায়জুসের জন্মদিনের দিন পরার জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন পাঞ্জাবি আর নিজের জন্য শাড়ি।
চিত্রগল্পের আলোকচিত্রী অভিজিৎ নন্দী একটি সহজ উপায় বাতলে দিলেন, ‘ছবি তোলার জন্য সকাল আর বিকেলের সময়টি বেছে নিন। ভ্রমণের সময় অনেক কিছু নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। এমন একটা লেন্স নিন, যেটা দিয়ে সব ধরনের ছবি তুলতে পারবেন। পোশাকের রং হিসেবে বেছে নিতে বললেন লাল, নীল, হলুদ আর সাদা। যেকোনো জায়গায় মানিয়ে যাবে এই চার রং। জঙ্গলে বা চা–বাগানে বেশি ভালো লাগবে সাদা রঙের পোশাক। সমুদ্রের পাশে লাল, নীল দুটি রংই ফুটবে।
সমুদ্রের পাড়ে গেলে জর্জেট, শিফন বা পানিতে ভিজলে তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে, এমন পোশাক নেওয়াই ভালো। একটি শাড়ি বা কম ফোলানো লম্বা কাটের গাউনও রাখতে পারেন ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের মতো আয়োজনে। ঠান্ডা থাকলে বাতাস আটকাবে, এমন পাতলা হুডিসহ একটি ভারী জ্যাকেট নিয়ে নিন। তাহলে আর বাড়তি কানটুপি বা মাফলার টানা লাগবে না। পাশ্চাত্য পোশাকে অভ্যস্ত থাকলে টি-শার্ট, ফতুয়ার সঙ্গে দুটি প্যান্ট নিলেই স্যুটকেস হালকা রাখতে পারবেন।
একইভাবে নিজেদের মধুচন্দ্রিমার জন্য দার্জিলিংয়ের ঠাণ্ডায় ডুবে ছিলেন নুসরাত-সজীব দম্পতি। ৭ দিনের ভ্রমণকে ব্যাকপ্যাক হানিমুন আখ্যায়িত করলেন তাঁরা। দুজন দুটি ব্যাকপ্যাক কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। হালকাভাবেই ভ্রমণ করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। এই দম্পতিও একটু ব্যতিক্রমী জায়গায় থাকতে চেয়েছিলেন। আর অত পরিকল্পনা করেও ঘুরতে চাননি তারা। বেনাপোল হয়ে কলকাতায় পৌঁছান। সেখান থেকে জলপাইগুড়ি যাওয়ার ইচ্ছা, ট্রেনের টিকিট পাননি। তাই ভারতীয় এক তরুণ দলের সঙ্গে মিশে যান। পরে অবশ্য মালদা গিয়ে জরিমানা দিতে হয়েছে। জলপাইগুড়ি পৌঁছে গাড়ি নিয়ে দার্জিলিং। এরপর তাকদা, ডুয়ার্সসহ নানা জায়গায় ঘুরেছেন, থেকেছেন।
কথা প্রসঙ্গে অভিনেত্রী টয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, মধুচন্দ্রিমা কীভাবে কাটাতে চান? হাসতে হাসতে টয়া বলেছিলেন, ‘শাওন শুধু আরাম চায়। খাবে আর হোটেলে থাকবে। কিন্তু আমি ঘুরে বেড়াতে চাই। আমার কেনাকাটা করতে ভালো লাগে। আমি নিশ্চিত, শাওন আয়েশ করবে আর আমি ঘুরে বেড়াব, কেনাকাটা করব।’
বিভিন্ন দম্পতির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে একটি বিষয় খেয়াল করলাম। কেউ কেউ পছন্দ করেন ইন্টেলিজেন্ট ট্যুরিস্ট স্পট অর্থাৎ কোনো একটি জায়গায় গিয়ে সেই দেশের সংস্কৃতি বা ইতিহাস জেনে মস্তিষ্ককে আরেকটু উর্বর করে তোলা, কেউ পছন্দ করেন রোমাঞ্চকর অভিযান, আবার কেউ চান শুধুই আরাম। যে ধরণের জায়গাই বাছাই হোক, দুজনেরই সম্মতি থাকাটা জরুরি। যদি বিয়ের আগে পাত্র–পাত্রীর বিশেষ পরিচয় না থাকে, তাহলে মধুচন্দ্রিমায় আরামের পথটা বেছে নেওয়াই ভালো। কারণ, এতে একে অপরকে খুঁজে নিতে পারবেন যথার্থভাবে।
ঘোরার সঙ্গে সাজের একটা যোগসূত্র আছে। আবার যদি ছবি তুলতে হয়, তাহলে তো বটেই। তবে ব্যাগভর্তি করে সাজার সরঞ্জাম নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কসমেটিক ব্যাগ হালকা রাখারই পরামর্শ দিলেন পারসোনার পরিচালক নুজহাত খান। সানস্ক্রিন, শিট মাস্ক, কনসিলার, সানস্ক্রিনসহ প্রাইমার, বিবি বা সিসি ক্রিম, মেকআপ রিমুভার, মাসকারা, কাজল, ভ্রু আঁকার পেনসিল, ফেশওয়াশ, পারফিউম নিলেই হবে।
ভ্রমণে আরেকটি সমস্যায় ভোগেন অনেকে, চোখ–মুখ ফুলে থাকা। এ জন্য দায়ী মুলত দুটি কারণ, কম ঘুম আর রোদে থাকা। ঘুম সাত-আট ঘণ্টা হলে ভালো। ঠান্ডা পানিতে টি–ব্যাগ চুবিয়ে চোখের ওপর কিছুক্ষণ রেখে দিন। ফোলা কমে যাবে। আইক্রিম ব্যবহার করুন, উপকার পাবেন। এ ছাড়া যখনই রুম থেকে বের হবেন, সানস্ক্রিন আর সানগ্লাস ব্যবহার করুন।
মধুচন্দ্রিমা একান্তই দুজনের জন্য। নিজেদের মতো করে সময় কাটানোর মুহূর্তগুলো এখানে পাওয়া যায়। চেনা মানুষগুলোও নতুন করে একে ওপরকে চিনতে পারেন। জীবনের নতুন যাত্রায় পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য মধুচন্দ্রিমার কয়েকটা দিন এ কারণেই গুরুত্বপূর্ণ।