চট্টগ্রামভিত্তিক বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। সম্প্রতি ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত এই গ্রুপের অধীনে দেশের একাধিক ব্যাংক, খাদ্যপণ্য, ইস্পাত, ভোগ্যপণ্য, চিনি, সিমেন্ট, শক্তি, পরিবহন, শিপিং, উৎপাদন, আর্থিক, কৃষি, বাণিজ্য, তেল এবং গ্যাসের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এতোদিন এসবেই সীমাবদ্ধ ছিল এস আলম গ্রুপের ব্যবসা। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের মধ্য দিয়ে ব্যাংকিং জগতে কর্তৃত্ব হারায় গ্রুপটি। সেই সঙ্গে জানা গেল নতুন আরেক তথ্য, দেশের বিভিন্ন বারে মদের আমদানি ও সরবরাহ দেখভাল করতো এস আলম গ্রুপ!
‘সাবের ট্রেডার্স লিমিটেড’ নামে একটি মদ আমদানি- সরবরাহ করা কোম্পানির ৭৫ শতাংশ শেয়ার এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বলে জানা গেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশে বন্ড সুবিধায় ছয় ধরনের মদ বা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় আসে। আমদানি করা মদের মধ্যে রয়েছে বিয়ার, স্পিরিটজাতীয় পানীয়, হুইস্কি, রাম ও টাফিয়া, গিন ও জেনিভা, ভদকা, লিকারস ও করডিয়ালস। আর এনবিআরের অধীন কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট অফিস শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় থাকা ছয়টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন বারে মদের আমদানি ও সরবরাহ দেখভাল করতো।
এগুলো হলো— সাবের ট্রেডার্স লিমিটেড, ইস্টার্ন ডিপ্লোম্যাটিক সার্ভিসেস, টস বন্ড, ন্যাশনাল ওয়্যারহাউজ, ঢাকা ওয়্যারহাউজ ও এইচ কবির অ্যান্ড কোম্পানি। এর মধ্যে পাঁচটি গুলশানে এবং একটি মহাখালীতে অবস্থিত।
এনবিআরের কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট সূত্র জানিয়েছে, সাবের ট্রেডার্স কূটনীতিকদের ব্যবহারের জন্য আনা বন্ডেডওয়্যার হাউস সুবিধার মদ কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়। এতে গত সাত বছরে সরকারের প্রায় ২৮৩ কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে কোম্পানিটি।
সূত্র বলছে, মদ বিক্রির কোম্পানি সাবের ট্রেডার্স লিমিটেড বা এসটিএলে চট্টগ্রামভিত্তিক বৃহৎ ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের সঙ্গে পার্টনার ছিলেন আলোচিত সোনা ও হীরা ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ক্ষমতার পালাবদলে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিপন্থী হয়ে ওঠেন দিলীপ। এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ৭৫ শতাংশ শেয়ার থাকার পরও মাত্র ২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক হয়ে দিলীপ রাতের আঁধারে নিয়ন্ত্রণে নেন পুরো সাবের ট্রেডার্স লিমিটেড।
ওই ঘটনার পরই এস আলম গ্রুপের মদ কেনাবেচায় সম্পৃক্ততার খবরটি জানাজানি হয়। নানা ধর্মীয় কাজে সুনাম কুড়ানো এস আলম গ্রুপের মদ কেনাবেচা কাণ্ড চট্টগ্রামে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।