অনলাইনে পোশাক বিক্রি শুরু করেছিলেন মুসলেমা পারভীন শান্তা। মাত্র এক বছরেই তাঁর ব্যবসা বেশ ভালো হচ্ছে। শান্তার অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের নাম ব্লসম ক্লোসেট।
উদ্যোক্তা বার্তাকে তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার মতো জায়গায় একটি রক্ষণশীল পরিবারে আমার জন্ম। যখন থেকে বুঝতে শুরু করেছি, তখন থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল নিজে কিছু একটা করব। আমার পরিবারের প্রায় সবাই ব্যবসায়ী হওয়ায় ব্যবসার প্রতি একটা আলাদা টান ছিল ছোটবেলা থেকেই। উই (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) গ্রুপে এসে ২০২০ সালে সেই আগ্রহ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। আর সেই থেকেই আমার উদ্যোগের জন্ম।’
শান্তা বলেন: প্রথম দিকে আমি দেশীয় থ্রি-পিস নিয়ে উদ্যোগ শুরু করলেও পরে আমার উদ্যোগে যুক্ত হয় দেশীয় শাল, জুটব্যাগ, গামছা, লুঙ্গি, থামি ওড়না ও শাড়ি। মণিপুরী গামছা নিয়ে আমি অনেক বেশি সাড়া পাই। তাই এই গামছাকেই আমার ফোকাস পণ্য হিসেবে রাখি। আমার উদ্যোগের মাধ্যমে অনেকে মণিপুরী লুঙ্গির সাথে পরিচিত হচ্ছে। মূলত ইউনিক কিছু করার লক্ষ্যে এ পণ্য নিয়ে কাজ করা।
“কখনও ভাবতে পারিনি নিজেকে একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত করে তুলতে পারব। কিন্তু এখন নিজের সম্পূর্ণ আলাদা করে একটা পরিচয় দাঁড় করাতে পেরেছি। হাজার হাজার না হলেও গুটিকয়েক মানুষ এখন আমাকে চেনে; আমাকে ও আমার উদ্যোগ সম্পর্কে জানছে। কাজের ক্ষেত্রে বলতে গেলে আমি নিজেই নিজের অনুপ্রেরণা ছিলাম। কারণ, সে সময় তেমন কারও কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পাইনি। তবে উই-জননী নাসিমা আক্তার নিশা আপুকে খুব ফলো করতাম। উনার নারীদের নিয়ে প্রতিটা কাজই আমাকে খুব বেশি উৎসাহ দিত। উই গ্রুপের অন্য নারীদের কাজ দেখেও প্রভাবিত হয়েছি, যাদের সে সময়টাতে ফেসবুক পেজ ব্যবহার করে উদ্যোগে সফল হতে দেখেছি,” বলে জানান তিনি।
উই-এর ফেসবুক গ্রুপ থেকে শান্তা উদ্যোক্তা-জীবনে প্রভাবিত হন। সেখান থেকে সব ধরনের কাজ শিখে তিনি নিজেও নিজস্ব পণ্য পোস্ট করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। ২০২০ সালে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে নিজের উদ্যোগ গড়ে তুলেন। প্রথম পণ্য ৪৫০ টাকা দিয়ে বিক্রি করে এ পর্যন্ত দুই লাখ ৭০ হাজার টাকার বেশি পণ্য বিক্রি করেছেন তিনি । বর্তমানে মাসে বিক্রি করেন প্রায় ২৫ হাজার টাকা এবং মাসে আয় করেন প্রায় ১০ হাজার টাকা।
শান্তা জানান, প্রোডাক্ট সোর্সিং থেকে শুরু করে এর ফটোগ্রাফি, প্যাকেজিং, ডেলিভারি, পার্সেল হস্তান্তরসহ যাবতীয় কাজ তিনি একাই সামলান। তাঁর পণ্য দেশের গণ্ডি পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, কানাডা ও ফিনল্যান্ড পর্যন্ত পাড়ি জমিয়েছে।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি জানান: বাংলাদের প্রতিটি জেলায় অন্তত একটা করে হলেও শান্তার উদ্যোগের বিলবোর্ড পৌঁছে দিতে চাই। দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়ুক আমার স্বপ্নের উদ্যোগের নাম।
উদ্যোক্তা বার্তা