ভুটান তার ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির জন্য বহুল পরিচিত। বিশ্বের কয়েকটি দেশের মধ্যে ভুটান তার অপরূপ সৌন্দর্যের জন্য অন্যতম। দেশটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও বেশ সচল। প্রাকৃতিক দৃশ্য, বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক স্পট, দর্শনীয় পর্বত এবং সুন্দর আবহাওয়ার জন্য দেশটি বিখ্যাত। প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের ঘুরে দেখার শীর্ষ তালিকায় ভুটান অন্যতম। চলুন জেনে নিই ভুটানের কয়েকটি আকর্ষণীয় স্থান সম্পর্কে যা অতি সহজেই ঘুরে দেখা সম্ভব-
১. তক্তসাং মোনাস্টেরি
মোনাস্টেরিটি তার দার্শনিক অবস্থান এবং মেডিটেশনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। দেশটির অন্যতম পবিত্র স্থান এই মোনাস্টেরি। মূলত গ্রানাইট দিয়ে তৈরি এই জায়গার অবস্থান পাহাড়ের চূড়ায়। পারোর টাইগারস নেস্টও বলা হয় এই জায়গাটিকে। পাহাড়ের এক প্রান্তে অবস্থিত পারো উপত্যকা এবং নদী দেখা যায় এখান থেকেই। ৮ম শতাব্দী থেকে জায়গাটি মানুষের নজরে আসে। ধর্মীয় নেতা গুরু পদ্ম সম্ভা এই স্থানে ধ্যান করতেন এবং তা থেকেই তীর্থস্থান হিসেবে গন্য করা হয়। এছাড়াও এই স্থানে ট্রেকিংও করা যায়।
২. ফিউন্টশোলিং
ভুটানের একটি ছোট শহর ফিউন্টশোলিং। সুন্দর প্রকৃতি এবং নির্জন পরিবেশের জন্য বেশ বিখ্যাত এই শহর। কুমির প্রজনন কেন্দ্র, হাইড্রোথার্মাল প্রকল্প, ভুটান গেট, কারবান্দি মোনাস্টেরির দেখা মিলবে এখানেই। পর্যটকদের জন্য হাইকিং এবং ট্র্যাকিং এর সুব্যবস্থা রয়েছে। একান্তে সময় কাটানোর জন্য জায়গাটি বেশ শান্তিময়।
৩. থিম্পু
হিমালয়ের কোলে অবস্থিত ভুটানের রাজধানী থিম্পু। সাংস্কৃতিক স্থান হিসেবেও পরিচিত। শহরটির পরিবেশ বেশ মনোমুগ্ধকর। এটি বিশ্বের একমাত্র শহর যেখানে শূন্য ট্রাফিক লাইট রয়েছে। শিল্পশৈলীর দিক দিয়ে জায়গাটি বেশ উন্নত। ন্যাশনাল মেমোরিয়াল চোরটেন, তাশিচো জং, মতিথাং টাকিন প্রিজারভ এই শহরের শীর্ষস্থানীয় ভবন। দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো খেয়ে দেখতে পারেন।
৪. ওয়াংডু ফোড্রং
কেন্দ্রীয় হাইওয়ের কাছাকাছি অবস্থিত একটি জনপ্রিয় স্থান হলো ওয়াংডু ফোড্রং। উপত্যকাটি গবাদি পশু এবং তার তৃণভূমি দ্বারা বেষ্টিত। স্থানটি বাঁশের তৈরি শিল্প, পাথর খোদাই, শ্লেট খোদাইয়ের জন্য বিখ্যাত। তাং ছু এবং পানাখা ছু নামক নদী দুটি এই স্থানের সৌন্দর্য আড়ও বাড়িয়ে তোলে। ওয়াংডু ফোড্রং ডিযংটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত, যেখানে উভয় নদীরই সৃষ্টি। ওয়াংডু ফোড্রং সেচুটি শরৎকালে ঘুরে দেখার জন্য শ্রেয়।
৫. ফোবজিখা এবং গ্যাংটে উপত্যকা
উপত্যকা দুটি তুষারস্রোতের জন্য বিখ্যাত। এই অঞ্চলের জন্মানো কালো গলার ক্রেনও দেখতে পারেন। জাতীয় উদ্যান ব্ল্যাক মাউন্টেন ঘুরে দেখতে পারবেন। পার্কটিতে প্রচুর উদ্ভিদ এবং প্রাণি দেখতে পাবেন। থিম্পু থেকে প্রায় ৬ ঘণ্টা দূরত্ব, তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রওনা দেওয়া উচিত। এই সমগ্র অঞ্চলটিকে গাংটে বলা হয়ে থাকে। জাতীয় উদ্যান জিগমে সিংয়ে এবং গ্যাংটে মোনাস্টেরি ভ্রমণ করবেন। প্রকৃতিপ্রেমী এবং ফটোগ্রাফারদের জন্য এটি সুন্দর ও মনোরম জায়গা।