শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

ভারত সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য

  • আপডেট সময় রবিবার, ২ মে, ২০২১

ভারত আয়তনে পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম দেশ যেখানে 130 কোটির বেশি মানুষের বসবাস রয়েছে তাই এত সংখ্যক মানুষের বসবাস থাকার দরুন দেশটি জনসংখ্যার দিক দিয়ে পৃথিবীতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত দেশটি বিশ্বের এক জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক দেশ। যা বর্তমানে বিশ্বের বাণিজ্যিক, সামরিক এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাতে পৃথিবীর যেকোন উন্নত দেশগুলির সাথে প্রতিযোগিতা করার সামর্থ্য রাখে। তাই এই বিশাল আয়তনের দেশটির সাথে জড়িত কিছু অজানা তথ্য আজ আমরা জানবো। (Unknown Facts about INDIA)

এই দেশের নাম ইন্ডিয়া রাখা হয়েছে ইন্দুস নামের নদী থেকে এবং প্রাচীনকালে এই ইন্দুস নদীর আশেপাশের অঞ্চলে বহু সংখ্যক মানুষের বসবাস ছিল। আর এই প্রাচীন মানব জাতির পরিচয় পাওয়া যায় ভারতীয় উপমহাদেশের এক প্রাচীন শহর থেকে। প্রায় বিংশ শতাব্দীতে এই শহরে যে পুরাতন সভ্যতার পরিচয় পাওয়া গেছে তাকে ইন্দুস ভ্যালি সিভিলাইজেশন বলে। বর্তমানে এই সভ্যতার তৈরি এলাকাগুলি আফগানিস্তান পাকিস্তান এবং ভারতের কিছু অংশে ছড়িয়ে রয়েছে। মনে করা হয় এই সভ্যতার শুরুতে সেখানে 5 মিলিয়নের বেশি মানুষের বসবাস ছিল। তবে ভারতের এই বিশাল জনসংখ্যার মধ্যে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ আছে। যেখানে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ সম্প্রদায় মানুষের বসবাস আছে। তাই যেহেতু এটি একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র তাই সকল ধর্মের সমান অধিকার ভারতের সংবিধানে দেখা যায়। তারই ফলস্বরূপ দেশটিতে যে রকম বহু মন্দির নির্মিত হয়েছে, তেমনি বহু মসজিদ এবং গির্জা ভারতে দেখা যায়। তাই অনুমান করে বলা হয় ভারতে প্রায় 3 লক্ষের মত মসজিদ আছে। যা হয়তো সংখ্যায় বেশ কয়েকটি দেশের তুলনায় বেশি হতে পারে এবং যেহেতু ভারতের স্থান বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর তালিকায় আছে তাই বেশি উপস্থিত শিক্ষিত এবং কর্মক্ষম মানুষ দের অবদান অবশ্যই স্বীকার করতে হবে।

ফলে পৃথিবীর উন্নত এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার তথা বৈজ্ঞানিক দের তালিকা ভারতীয়দের নাম আসে। তাই বলা হয় বিশ্বের নামিদামি কোম্পানির সিইও থেকে শুরু করে নাসার বৈজ্ঞানিক কেন্দ্রগুলিতে ভারতীয়রা উপস্থিত রয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে ইনফরমেশন টেকনোলজির ক্ষেত্রে ভারতের ইনফোসিস, উইপ্রো এবং টিসিএস এর মতো কিছু সংস্থাগুলি আজ পৃথিবীর যেকোনো বড় বড় কোম্পানিগুলো সাথে পাল্লা দিতে সক্ষম। তাই এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সময়ে যে ভাষাটি সর্বাধিক বেশি ব্যবহার করা হয় তা হলো ইংরেজি এবং ভারতের দুটি আধিকারিক ভাষা হলো হিন্দি এবং ইংরেজি। আর এই ভাষাটির সাথে এক অবাক করা কথা ভারতের সঙ্গে জড়িত আছে। মনে করা হয় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় সর্বাধিক সংখ্যক ইংরেজি ভাষী মানুষ নাকি ভারতে থাকে। যাদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার 10 শতাংশের কিছু বেশি হতে পারে।

ভারতের রাজধানী হিসেবে পরিচিত নিউ দিল্লী। যেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ থেকে শুরু করে বহু বিশিষ্টজনের বসবাস রয়েছে। তবে দিল্লির মহারাষ্ট্র রাজ্যের অন্তর্গত মুম্বাই শহর টি দেশের আর্থিক রাজধানী তথা দেশের বৃহত্তম শহর হিসেবে পরিচিত। আর মুম্বাই শহরে রয়েছে বিশ্বের সর্বাধিক সংখ্যক চলচ্চিত্র প্রস্তুতকারক সংস্থা। মনে করা হয় মুম্বাইয়ের বলিউড নামের এই ইন্ডাস্ট্রিতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়। যা হলিউডের থেকেও বেশি। আর এইসব ফিল্ম গুলি আয়ের ক্ষেত্রে হলিউডের থেকে কোন অংশে কম নয়। এই বলিউডের ফিল্মগুলি পাশ্চাত্য দেশের সাথে সাথে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলিতেও বেশ জনপ্রিয়।

যেহেতু এই দেশের জনসংখ্যা বেশি সেহেতু দেশের কর্মসংস্থান একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তাই দেশের আর্থিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত মুম্বাই, গুজরাট, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালোর, হায়দ্রাবাদ এবং কলকাতার মত আরো কিছু জায়গা গুলি দেশের মন কর্মসংস্থানের যোগান দেয়। তবে কর্মসংস্থানের যোগানের ব্যাপারটা যদি বলা হয় তবে সরকারি ক্ষেত্রে ভারতের সবথেকে বেশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে ভারতীয় রেল। যেখানে 1.3 মিলিয়ন বেশি সংখ্যক মানুষ কাজ করে। আর পৃথিবীতে ভারতীয় রেল ব্যবস্থা কে চতুর্থ সবথেকে বড় রেলওয়ে নেটওয়ার্ক হিসেবে ধরা হয়। যেখানে প্রত্যেক দিন 13 হাজারের মতো শুধুমাত্র প্যাসেঞ্জার ট্রেনের চলাচল আছে এবং প্রতিদিন ভারতের লক্ষাধিক মানুষ এই রেলওয়ে মাধ্যমের ব্যবহার করে থাকে।

এছাড়াও মানব কম্পিউটার নামে পরিচিত শকুন্তলা দেবী এই ভারতেই জন্মেছেন। ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে শকুন্তলা দেবী 1980 সালে 13 ডিজিট নাম্বারের এক বড় মাপের গুণ কে মাত্র 28 সেকেন্ডের মধ্যে সমাধান করে ফেলেছিলেন। তাই এই অসাধারণ ক্ষমতার জন্য তিনি মানব কম্পিউটার নামে পরিচিতি পান। কিন্তু দেশটির উন্নতি প্রাচীনকাল থেকেই শুরু হয়েছে যেখানে গণিতের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত শূন্য আবিষ্কার এই ভারতেই হয়। আর এর কৃতিত্ব দেওয়া হয় পৌরাণিক গণিতজ্ঞ আর্যভট্ট কে। আর এর সাথে ক্যালকুলাস এবং ত্রিকোনোমিতির  উৎপত্তি ও নাকি ভারতের থেকেই হয়।

সাধারণত আমাদের আশেপাশে প্রতিবেশী বা পাড়া গুলিতে ছোটো বড়ো কিছু পরিবার দেখে থাকি। কোন পরিবারে একজন কোথাও পাঁচজন আবার কোথাও তার থেকেও বেশি দেখে থাকি, কিন্তু ভারতের মিজোরাম রাজ্যে এক পরিবার আছে যেখানে 180 জনের মত মানুষ থাকে আসলে বাংলাদেশ এবং মায়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকার এই রাজ্যটিতে এক ব্যক্তি থাকেন যার 39 জন স্ত্রী, 94 জন ছেলেমেয়ে এবং কিছু নাতি এবং নাতনি আছে। তাই এই এত সংখ্যক সদস্য সম্পন্ন পরিবারটি এখন ভারতে যথেষ্ট জনপ্রিয়।

তাই ভারতের গৌরব এর তালিকা অন্যান্য যে কোন উন্নত দেশগুলো থেকে কম নয়। আর আশা করা যায় ভবিষ্যতে এই তালিকায় ভারতের গৌরব ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com