বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৪৩ অপরাহ্ন
Uncategorized

ভারত রাস্তা নিল তবে যাওয়ার সুযোগ দিল না

  • আপডেট সময় বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০২২

বাংলাদেশের ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার সড়ক ব্যবহার করে ভারত তার দেশে পণ্য পরিবহন করছে। কিন্তু নেপাল-ভুটানে সরাসরি পণ্য পাঠাতে ভারতের মাত্র ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার সড়ক ব্যবহার করার বাংলাদেশের অনুরোধ ঝুলিয়ে রেখেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার (ভারত)।

২০১৮ সালের অক্টোবরে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় পণ্য সরবরাহে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সই হয়। এরপর ভারতীয় পণ্যবাহী জাহাজ আসে মোংলা বন্দরে। আগে যেখানে ১৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কলকাতা বন্দর দিয়ে রফতানি হতো আসামের পণ্য, সেখানে বাংলাদেশের ৫২০ কিলোমিটার সড়ক ব্যবহার করে অনায়াশেই পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম ও মেঘালয় রাজ্য। এতে তাদের যেমন বিপুল সময় বাঁচছে তেমনি অর্থও। এ যেন ভারতের পোয়াবারো।

আবার কলকাতা বন্দর থেকে ত্রিপুরার দূরত্ব প্রায় ১৬৫০ কিলোমিটার। যা এখন নেমে এসেছে মাত্র ৪০০ কিলোমিটারে। শুধু কী তাই! প্রতি টনে পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশকে দিতে হবে মাত্র ৫৫৪ টাকা। আর প্রতি কিলোমিটার সড়ক ব্যবহারে খরচ হবে দুই টাকার মতো। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ট্রানজিটের ক্ষেত্রে ১৩ রুট রয়েছে। এসব রুট ব্যবহার করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য আনা-নেয়ায় খরচ কমবে ১২ থেকে ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত।

এত সুবিধা পাওয়ার পরেও নেপাল ও ভুটানে পণ্য রফতানিতে ভারতের কাছে নিয়মিত ট্রানজিট পাচ্ছে না বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়কপথে বাংলাদেশ-নেপালের মাঝে ১৫-২০ কিলোমিটার এলাকা ভারতের ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত। এই চিকেন নেকেই বারবার আটকে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ফেইট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কবির আহমেদ সময় সংবাদকে বলেন, সেখানে সব সময় অলিখিত বাধা সময় থাকে। তারা কখনও দিল্লির অর্ডারের জন্য দেরি করে আবার বলে উপর থেকে নির্দেশ আসেনি। এছাড়া নানা ধরনের অনীহার কথা তারা বলে (ভারত)।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নেপাল ও ভুটানের আমদানির প্রায় ৯০ শতাংশের উৎস ভারত। বাকি ১০ শতাংশ অন্য দেশ থেকে আমদানি হলেও ব্যবহার হয় কলকাতা বন্দর। যা ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধায় নেপাল ও ভুটানে পৌঁছে দেয় ভারতীয় যান। ট্রানজিট দিলে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি পণ্য নিতে আগ্রহ বাড়বে নেপাল-ভুটানের। আবার পণ্য আমদানিতে কলকাতার পরিবর্তে মোংলা বন্দর ব্যবহারে খরচ কমবে প্রায় ৩০ শতাংশ। এসব কারণেই ভারত নিয়মিত ট্রানজিট দিতে টালবাহানা করছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর সময় সংবাদকে বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার তারা কখনও চাইবে না তাদের স্বার্থ বিঘ্নিত হোক, তাদের বড় স্বার্থ হলো কলকাতা বন্দরকে ঘিরে, তাদের ওখানে যে সমস্ত কারখানা আছে সেখান থেকে জিনিসপত্র নেপাল ও ভুটানে রফতানি হচ্ছে। সেহেতু পশ্চিমবঙ্গ সরকার থেকে বড় ধরনের একটা চাপ আছে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর।

এছাড়া নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় দরকাষাকষিতে বাংলাদেশের দুর্বলতাকেও দায়ী করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির সময় সংবাদকে বলেন, অন্তত সমপরিমাণ চাহিদা চাইতে হবে। সেই চাওয়ার ব্যাপারে আমার কেন সংকোচ থাকবে। সেটা কিন্তু আমি বুঝি না, এই যে ভারতকে আমরা ট্রানজিট দিয়েছি ফিস নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে যে আমরা শক্তিশালী অবস্থান নিয়েছি এমনটাও কিন্তু আমার মনে হয় না।

এখন পর্যন্ত বিশেষ সুবিধায় ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপালে ৫২ হাজার টন সার রফতানির সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com