সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন

ভারতের ভিসা নেই, সুযোগ বুঝে বাংলাদেশি রোগী ধরতে চিনের বিশেষ ছাড়

  • আপডেট সময় রবিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৫

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নানা কারণে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সমস্যা বেড়েছে ভিসা নিয়েও। তাই ভালো চিকিৎসা পেতে বাংলাদেশের নাগরিকরা থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও চিনমুখী হয়েছেন। অবস্থার সুযোগ নিতে বাংলাদেশি রোগী ধরতে বিশেষ চিকিৎসা ছাড় দিচ্ছে বেজিং। ইউনান প্রদেশের চারটি শীর্ষ পর্যায়ের হাসপাতালকে বিশেষভাবে বাংলাদেশি রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য মনোনীত করা হয়েছে। চিনের এই সুবিধা নিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।

ভালো চিকিৎসা পেতে বছরে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ ভারত-সহ বিভিন্ন দেশে যান। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের উষ্ণ সম্পর্কের জেরে দেশটি মেডিক্যাল টুরিজমের টার্গেট পূরণ করত বাংলাদেশি রোগীদের মাধ্যমে। ৫ আগস্টের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের কারণে ভিসার সুযোগ ব্যাপকভাবে সীমিত হয়ে গিয়েছে। ভিসা জটিলতায় অন্তর্বর্তীকালীন বৈষম্যবিরোধী সরকার আন্দোলনে আহতদের আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান, ফ্রান্স, চিন ও ভুটান থেকে চিকিৎসক এনে পরিষেবা দিয়েছে। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরের মতো দেশে চিকিৎসা খরচ ভারতের তুলনায় বেশি হওয়ায় সাধারণ রোগীদের জন্য আর্থিক চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে বিকল্প হিসাবে চিনকে বেছে নিচ্ছেন।

চিন অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাজার ধরতে মরিয়া। এবার তারা মেডিক্যাল টুরিজমের সুযোগ নিচ্ছে। ইতিমধ্যে চিন সরকার কুনমিং মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হাসপাতাল এবং ইউনান ফার্স্ট পিপলস হাসপাতাল বাংলাদেশিদের সব ধরনের চিকিৎসা দেবে বলে জানিয়েছে। বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসাবে ফু-ওয়াই কার্ডিওভাসকুলার হাসপাতাল এবং ইউনান ক্যানসার হাসপাতাল ডেডিকেটেড ঘোষণা করেছে। গত মাসে কয়েক ডজন বাংলাদেশি চিকিৎসার জন্য কুনমিং ভ্রমণ করেছেন। যাত্রীদের সুবিধার্থে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স চট্টগ্রাম থেকে কুনমিং রুটে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। এপ্রিলে বাংলাদেশ থেকে সাংবাদিকদের বড় একটি দলকে কুনমিংয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা দেখতে পাঠানো হবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরির ব্যাপারে চিন সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে। চিন রাজি হয়েছে। রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সেন্টার স্থাপন করা হবে। ভারতের পর বাংলাদেশ থেকে বেশি রোগী যায় থাইল্যান্ডে। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সপ্তাহে ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে তাই এয়ারওয়েজ। যাত্রীদের চাপ এড়াতে থাইল্যান্ড ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশিদের ই-ভিসা দিচ্ছে। এর বাইরেও ইরান, মালয়েশিয়া-সহ বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশের রোগীদের নিয়ে মেডিক্যাল টুরিজম শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই মুহূর্তে বিশ্বে মেডিক্যাল টুরিজমের পরিমাণ ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের। যার এক-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করে ভারত। দেশটির ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বাজার বাংলাদেশের রোগী নিয়ে। ভারতের দুয়ার বন্ধ হওয়ায় চিন সুযোগ নিচ্ছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com