শরৎকাল মানেই নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাঘোনা আর বিভিন্ন স্থানে ফুটে উঠা কাশফুলের শুভ্রতা। শরৎ প্রকৃতিকে কাশফুলের অপার সৌন্দর্য্য দিয়ে সাজিয়ে তুলে। প্রকৃতিতে পালাবর্তনে কাশফুলের সৌন্দর্য্যে মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে ছুটে আসে কাশবনে।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্রের তীরে জেগে উঠা কাশবন দেখতে প্রতিনিয়ত পর্যটকরা ভীড় করছেন। কাশফুলের অপার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন তারা। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার পাশ দিয়ে বয়ে চলা ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলের ১ কিমি জুড়ে রয়েছে কাঁশফুলের বিশাল সমারোহ।
যান্ত্রিক জীবনের কোলাহল ছেড়ে মুক্ত আনন্দ পেতে প্রতিনিয়ত মানুষ ছুটে আসছে এ কাশবনে। বিশেষ করে শেষ বিকেলের মুহুর্তে এটার সৌন্দর্য আরো অনেকগুণ বেড়ে যায়। এ কারণে বেশিরভাগ পর্যটক আসছেন বিকেলে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় ব্রহ্মপুত্রের তীরবর্তী এ কাশফুল বাগানের সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন পর্যটকরা। প্রিয়জনকে নিয়ে প্রকৃতির সাথে একাকার করে দিতে হাজির হয়েছেন প্রকৃতিপ্রেমিকরা। কেউ আসছে পরিবার নিয়ে আবার কেউ আসছে।বন্ধু-বান্ধব নিয়ে। প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থীরা কাশবনে সেলফি বা নিজের ছবিটা ক্যামেরা বন্ধি করছে। আবার কাউকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কন্টেট তৈরী করতেও দেখা গেছে।
জানা গেছে,বর্ষার কদমফুলের দিন শেষ হতে না হতেই শরতের কাশফুলের দেখা মেলে। কাশবাগানে বাতাস এলে কাশফুলের একসাথে মাথা দোলানো দেখে মানুষ কতই না মুগ্ধ হয়। কাশবনের উপকারের সীমা কেবল পানের বরজ, ঘরের চালা বা সবজিবাগানের বেড়া হিসাবে নয়, কাশফুলে আয়ূবের্দীয় গুনও আছে। মাটিধস রোধ করতে চাষ করা হয়।
আখের অঙ্কুুরোদগম ছাড়াও বিশেষ ধরনের কাগজের ম-ও তৈরি হয় কাশ থেকে। সব মিলিয়ে কাশফুল কেবল শরতের মুগ্ধতার প্রতীক নয়, আমাদের জীবনযাত্রার সংগেও জড়িয়ে আছে কাশের জীবন।
সাদা শুভ্র মেঘের ঝিলিকে কাশফুলের সৌন্দর্য এক কথায় প্রকাশ করা দুষ্কর।এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রকৃতিপ্রেমীদের মিলনমেলা ঘটে কাঁশবনে। আগে হয়তো অনেকে এতটা কাঁশফুল নিয়ে মানুষের মাঝে এত মাতামাতি ছিল না। তখন শরৎ নির্দিষ্ট নিয়মে আসতো কাঁশফুল নির্দিষ্ট নিয়মেই ফুটতো। কাশফুল বা কাশবন পছন্দ করে না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
সদর উপজেলা থেকে কাশবন দেখতে আসা সায়মা আক্তার জানান, মানসিক শান্তি আর কাশফুলের শুভ্রতা উপভোগ করতে এখানে ছুটে এসেছি। প্রতিবছর ই এখানে কাশফুল ফুটে। কাশফুলের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদ রয়েছে। দুশ্যগুলো সত্যিই নজর কাড়ে।
কাশফুল দেখতে আসা প্রকৃতিপ্রেমী মো. মাহফুজ রাজা জানান, কাশফুল ছাড়া শরত পরিপূর্ণ না। এখানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে পর্যটকরা কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসে। কিন্তু দুঃখের বিষয় অনেকই পর্যটক ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যায়।
আরেক পর্যটক তামিম মিয়া জানান, কাশফুল দেখে ব্রহ্মপুত্রের জলে নৌকা নিয়ে দুরে হারিয়ে যাওয়া আনন্দকে বাড়িয়ে তুলে।
এখানে কাশফুল দেখতে এসে যা উপলব্ধি হলো যে, সন্ধ্যার আগেই চলে যাওয়া ভালো। তিনি বলেন, তেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখানে নেই।