তো, সিলেট অঞ্চলের অনেকেই লন্ডনকে দ্বিতীয় সিলেট বলে থাকেন। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি, সেখানে আসলেই অনেক বেশি সিলেটি মানুষ দেখা যায়। সিলেটের এখনও অনেক স্বপ্নবিলাসী কিশোর-যুবকদের স্বপ্ন ইউরোপে গিয়ে তার পরিবারের হাল ধরা, কিংবা স্রেফ নিজের ভাগ্যের পরিবর্তন করা। কিন্তু সবাই কি জানে বর্তমানে ইউরোপের দেশগুলোতে বাংলাদেশ থেকে যেতে কোন প্রক্রিয়াগুলোর মধ্য দিয়ে যাওয়া লাগে?
ইউরোপ। অনেকের কাছেই স্বপ্ন! ইউরোপের দেশগুলোতে যাওয়া, নিজের ভাগ্যবদলিয়ে নতুন সূচনা করা এগুলো কে না চায়? তবে এক্ষেত্রে অনেকেই সেটাকে অনেক বেশি জটিল মনে করে পিছু হটেন। তাদের জন্যই আইনিউজে দেওয়া হলো বৈধভাবে ইউরোপে যাওয়ার শুরু থেকে শেষপর্যন্ত প্রসেসিংয়ের নিয়মাবলী। ভূমিকা আর লম্বা না করে এবারে শুরু করা যাক!
আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও ডেনমার্ক ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য মোট ২৫টি দেশের জন্য নিচের ভিসার (ধরণগুলি) প্রযোজ্য।
বেশিরভাগের যাওয়ার মাধ্যমটা হতে পারে এই ব্লু কার্ড। ইউরোপের এই ব্লু কার্ড পেতে পারেন আপনিও। তবে সেক্ষেত্রে জেনে নিন ব্লু কার্ড কাদের দেওয়া হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ থেকে আসা উচ্চ শিক্ষিত, দক্ষ কর্মী অথবা গবেষকদের ব্লু কার্ড দেয়া হয়৷ এক্ষেত্রে নিচের শর্তগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে৷
জার্মানিতে আবেদন ফি হিসেবে জমা দিতে হবে ১১০ ইউরো৷ তিন মাসের নবায়নের জন্য দিতে লাগবে ৬৫ ইউরো, এর বেশি হলে ৮০ ইউরো৷ কার্ড নতুন করে তুলতে চাইলে ৬০ ইউরো প্রদান করতে হবে৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশের কোনো ব্যক্তি যদি এমন কোনো সংস্থায় কাজের সুযোগ পান, যেটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে নথিভুক্ত, তারা এই বিভাগে ভিসার আবেদন করতে পারেন। এমন সংস্থাগুলি তাদের ইইউ-স্থিত অফিসে কর্মীদের বদলি করলে সেক্ষেত্রে কর্মীদের এই ভিসার দরকার পরে।
সেক্ষেত্রে নিচের শর্তগুলি পূরণ করতে হবে-
এছাড়াও, আবেদনকারীর নিয়োগের চুক্তিতে থাকতে হবে নিচের তথ্যগুলি-
এছাড়াও, আবেদনকারীকে ইউরোপে একটি বাসস্থান বা ঠিকানা দেখাতে হবে। তাছাড়া, বদলি হওয়া কর্মীর মাইনে অন্যান্য সমমানের কর্মীদের চেয়ে কম হতে পারবে না।
তিন মাসের বেশি সময়ের জন্য যে ব্যক্তি কোনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বীকৃত গবেষণা সংস্থার সাথে গবেষণার চুক্তিতে যাবেন, তাদের জন্য রয়েছে এই বিভাগের ভিসাটি।
সেক্ষেত্রে প্রথমে, গবেষণা সংস্থার সাথে ‘হোস্টিং এগ্রিমেন্ট’ বা আমন্ত্রণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে হবে আবেদনকারীকে। এছাড়া আবেদনকারীকে দেখাতে হবে যে তার এই গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা, পর্যাপ্ত অর্থ ও স্বাস্থ্যবীমা রয়েছে।
এইসব শর্ত পূরণ করার পর ব্যক্তিকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে পাসপোর্ট বা ট্রাভেল ডকুমেন্ট ও হোস্টিং এগ্রিমেন্ট দেখাতে হবে। যদি গবেষণার সময়ের সব খরচ কোনো সংস্থা বহন করে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পৃষ্ঠপোষকতার কাগজও ভিসার আবেদনের সময় দেখাতে হবে।
এই ভিসায় থাকাকালীন কোনো ব্যক্তি তার পরিবারকেও সাথে নিয়ে আসতে পারেন এবং ভিসার মেয়াদ থাকাকালীন সেই ব্যক্তি একজন সাধারণ ইইউ নাগরিকের সকল শ্রম অধিকার যেমন সামাজিক নিরাপত্তা ও গণপরিবহন ব্যবহারে ছাড়ের মতো সুবিধা ভোগ করতে পারেন।
ইইউবহির্ভূত রাষ্ট্রের রাগরিকরা যদি একটি বিশেষ মরসুম বা সময়ের জন্য কোনো ইইউ-স্থিত সংস্থায় কাজের সুযোগ পান, সেক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে এই ভিসাটি।
সেক্ষেত্রে নিচের নথিগুলি দেখাতে হবে-
বিভিন্ন দেশের নিয়মভেদে, এই ভিসা সাধারণত এক বছরে পাঁচ থেকে নয় মাসের কাজের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে। এই ভিসায় নিজের পরিবারকে সাথে আনার অধিকার থাকেনা। শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে ঠিক কোনগুলি প্রযোজ্য, তাও বিশেষভাবে উল্লেখ করা থাকে। দেশের নিয়মভেদে, এই অধিকারগুলি আলাদা আলাদা।
শিক্ষার্থী বা স্টুডেন্ট ভিসা
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূর্ণদৈর্ঘ্যের বা ফুলটাইম কোর্সে অ্যাডমিশন বা ভর্তি হওয়া কোনো ব্যক্তি এই ভিসার জন্য আবেদন করবেন।
এই ভিসা আবেদন করতে প্রমাণ করতে হবে যে,
এছাড়া, নিচের নথিগুলি লাগবে-
শিক্ষার্থীরা পার্টটাইম বা স্বল্পমেয়াদী কাজ করতে পারেন। এক্ষেত্রে, প্রতিটি ইইউ-রাষ্ট্র নিজেদের আলাদা আলাদা নিয়ম ঠিক করেছে, কিন্তু একজন শিক্ষার্থী সব ইইউ রাষ্ট্রেই সর্বনিম্ন (দশ ঘণ্টা) প্রতি সপ্তাহে কাজ করার সুযোগ পান।
কোনো কোনো দেশে এক বছর পড়াশোনা করার পর কাজের অনুমতি পাওয়া যায়, তার আগে নয়।
এই ভিসায় ইউরোপের কোনো দেশে এসে সেই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও যদি কেউ থেকে যান, তাহলে সেক্ষেত্রে তিনি অবৈধ হিসাবে গণ্য হবেন। এমন ক্ষেত্রে, সেই ব্যক্তিকে দেশ থেকে বের করে দেবার অধিকার রয়েছে ভিসাপ্রদানকারী দেশের।
অবৈতনিক কাজের জন্য প্রশিক্ষণের চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তি, যার এই অবৈতনিক কাজের সময়ে জীবনযাপনের পর্যাপ্ত অর্থ রয়েছে, তারা এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
অবৈতিনিক প্রশিক্ষণের জন্য আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে যে,
এক্সচেঞ্জ স্কুল শিক্ষার্থী বিভাগে ভিসার জন্য আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে যে,
স্বেচ্ছাসেবী বিভাগে ভিসার জন্য আবেদনকারীকে প্রমাণ করতে হবে যে,
এই ভিসার ক্ষেত্রেও, ইউরোপের কোনো দেশে এসে সেই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও যদি কেউ থেকে যান, তাহলে তিনি অবৈধ হিসাবে গণ্য হবেন। এমন ক্ষেত্রে, সেই ব্যক্তিকে দেশ থেকে বের করে দেবার অধিকার রয়েছে ভিসাপ্রদানকারী দেশের।
সূত্র: InfoMigrants বাংলা