প্রায় ৪২,৮৫৫ বর্গমাইল জায়গা জুড়ে বিস্তৃত বুলগেরিয়া অন্যতম প্রাচীন একটি দেশ যেখানে সেই প্রস্তর যুগের সময় থেকেই মানব সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে। বুলগেরিয়া পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী ও সমভূমির দেশ। উত্তর বুলগেরিয়ার পূর্ব-পশ্চিম বরাবর বলকান পর্বতমালা প্রসারিত। বলকান পর্বতমালার নামেই অঞ্চলটির নাম হয়েছে বলকান। তবে বুলগেরিয়ার সাধারণ মানুষ এ সকল পর্বতকে “স্টারা প্লানিয়া” বা প্রাচীন পর্বতমালা নামে ডাকে। ইউরোপের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী ড্যানিয়ুব বুলগেরিয়ার উত্তর সীমান্ত গঠন করেছে।
বুলগেরিয়ার পূর্বে কৃষ্ণ সাগরের উপকূল উত্তরে খাড়া পার্বত্য ঢাল থেকে দক্ষিণে বালুকাময় সৈকতে নেমে এসেছে। এখানকার পর্যটন কেন্দ্রগুলো সারা বিশ্ব থেকে লোক বেড়াতে আসে। উত্তরের পর্বতমালাতে শীতকালে ঘন তুষারে ঢেকে যায়। ফলে শীতকালে এখানে স্কি কিংবা আইস হকির মতো উইন্টার স্পোর্টসের জমজমাট আসর বসে। বিভিন্ন দেশের পর্যটকদের কাছে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ উপভোগ করার জন্য কৃষ্ণ সাগরের নান্দনিক সমুদ্র সৈকত এবং বোরোভেটসের মতো রিপোর্ট খুবই জনপ্রিয়। এছাড়া দেশটির রাজধানী সোফিয়া, প্রাচীন শহর ভেলিকো টার্নোভো, রিলা মনাস্টেরি ভ্রমণ করতে প্রতি বছর দেশটিতে অসংখ্য পর্যটক পাড়ি জমান বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে। এছাড়াও প্লোভদিভ নামক শহরটিতে রোমানদের তৈরি থিয়েটারটি বিশেষভাবে পর্যটকদের আকর্ষণ করে। এ থিয়েটারটি এখনও বিভিন্ন উৎসবের সময় নানা ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজনে ব্যবহার করা হয়। পাহাড় এবং লেক দ্বারা আচ্ছাদিত সেভেন রিলা লেকের এর মনোরম সৌন্দর্য যে কাউকে হাতছানি দেয়। এছাড়া বুলগেরিয়ার অন্যান্য ট্যুরিস্ট স্পটগুলোর মধ্যে রয়েছে রুজে এবং গ্যাব্রোভো।
অজানা অনেক রহস্যের বুলগেরিয়াতে হাজার বছররে পরেনো শহড়, ঘুমন্ত গ্রাম, বিখ্যাত মঠ , অপূর্ব পাহাড় ছাড়াও নানা রকম দর্শনীয় স্থান আছে , যার জন্য বুলগেরিয়া সবার জন্যই ভ্রমনের আদর্শ গন্তব্য।
বাচকোভো মনাস্ট্রি
১১শ বছর আগে বুলগেড়িআ গোঁড়া খ্রিস্টানদের আখড়া ছিল, বর্তমানে ৮০ লক্ষ লোকের বুলগেড়িয়াতে মঠ ২৩৭ টি, মনাস্ট্রিটা ১০৮৩ টি। মনাস্ট্রিটা ১০৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত৷
ন্যাশনাল থিয়েটারের সামনের উদ্যান, সোফিয়া
ন্যাশনাল থিয়েটারের সামনের উদ্যান সবার কাজে আড্ডার জন্য ভিষণ প্রিয় জায়গা। আর নতুন ও চীর সবুজ রাজধানী সোফিয়া কিন্তু হাজার বছরের পুরাতন।
সন্ত সোফিয়ার মূর্তি
ব্রোঞ্জের তৈরি মূর্তিটির দৈর্ঘ ৮ দশমিক ৮ মিটার ওজন ৫ টন, ২০০১ সালে শহড়ের মেয়র এটি নির্মান করান, এটি সোফিয়ার ল্যান্ড মার্ক, এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।
বানিয়া বাশি মসজিদ, সোফিয়া
ষোড়শ শতাব্দিতে নির্মাণ করা মসজিদটিতে এখনো মানুষ নামাজ পড়ছে, বিশাল এই মাসজিদটি অটোম্যান সম্রাজ্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। মনে করিয়ে দেয় ৫ শতক ধরে তুর্কিদের দখলে বুলগেরিয় ছিল।
শিপকা পাস এর স্মৃতিস্তম্ভ
এই স্মৃতিস্তম্ভটি আপনাকে মনে করিয়ে দিবে ১৮৭৮ সালে রাশিয়ার সহযোগিতায় বুলগেরিয়া স্বাধীনতা লাভ করেছিল৷
ভেলিকো তারনোভো
বুলগেরিয়াকে উত্তর ও দক্ষিণে এটি বুলগেরিয়াকে বিভক্ত করেছে বলকান রেঞ্জ। ৬০০ কিলোমিটার বিস্তৃত লম্বা পাহাড়ি রেঞ্জ, বুলগেরিয়ার পুরোনো রাজধানী ভেলিকো তারনোভো,
ডেভেতাস্কা গুহা
বুলগেরিয়ার অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি ডেভেতাকি গ্রামের কাছে ডেভেতাস্কা গুহাটি ৷
প্লোভদিভ
৮ হাজার বছরের পুরোনো বর্তমানে বুলগেরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, রোমের মত প্লোভদিভ সাতটি পাহাড়ের উপর অবস্থিত৷
প্লোভদিভ অ্যাম্ফিথিয়েটার
ত্রাজান সম্রাটের অধীনে থাকাকালীন এটি নির্মিত প্রাচীন মার্বেল থিয়েটারটি রোমানদের অন্যতম সুন্দর নিদর্শনের একটি৷
সূত্র-ডয়চে ভেলে